দ্য ওয়াল ব্যুরো: স্কুল খুলতেই চেনা ছন্দে ফিরতে শুরু করেছে কলেজ স্ট্রিট বইপাড়া। প্রতিদিনই বইয়ের খোঁজে আসছেন স্কুল-কলেজ এবং প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়া পড়ুয়া ও অভিভাবকেরা। সেইসঙ্গে পুরোদমে চলছে লোকাল ট্রেন। তাই বিভিন্ন জেলা থেকেও ভিড় করছেন ক্রেতারা।

কোভিডের কারণে লকডাউন পর্বে সব দোকানের মতোই বন্ধ ছিল বইপাড়া। আনলক পর্ব শুরু হলেও বন্ধ ছিল লোকাল ট্রেন পরিষেবা। পুরো বন্ধ ছিল স্কুল এবং কলেজ। ফলে বইপাড়ায় পড়ুয়াদের দেখা মেলেনি বলেই জানাচ্ছেন বিক্রেতারা। সম্প্রতি স্কুল-কলেজ খুলে গেছে। তাও বই বিক্রিও কিছুটা বেড়েছে। আগামী কয়েকদিনে বইয়ের বিক্রি আরও বাড়বে বলে আশা বিক্রেতাদের।

বইবিক্রেতা শুভময় পোদ্দার 'স্কুল খোলার পর থেকেই কলেজ স্ট্রিট বইপাড়ায় পাঠ্যবই বিক্রি বেড়েছে। অনেক পড়ুয়ার দু'একটা বই কেনা বাকি ছিল। বিক্রি তলানিতে ঠেকেছিল সেই অবস্থা এখন আর নেই। ক্রমশ স্বাভাবিক পছন্দ কলেজ স্ট্রিট।' তিনি আরও বলেন, 'আশেপাশের স্কুলগুলিতে আবার পড়ুয়ারা আসছে। তাঁদের অভিভাবকরা এসে অপেক্ষা করছেন। এই ছবিটাই আমাদের আস্বস্ত করছে। তবে সিক্স থেকে এইট পর্যন্ত ক্লাস চালু হলে আরও বই বিক্রি হবে।'

পার্ক সার্কাস থেকে বই কিনতে এসেছিল একাদশ শ্রেণির আসিফ। বলল, 'স্কুল খুলেছে। কিন্তু আমি যেতে পারছি না। কারণ আমার কাছে বই নেই। এতদিন লেখাপড়া অনলাইনে হয়েছে। ক্লাসে বই নিয়ে ঢুকতে চাই।' এই বাহারি চুল নিয়ে স্কুলে ঢুকতে দেবে? হেসে উত্তর দিল, 'কালকেই কেটে ফেলব।'

প্রবীণ বই বিক্রেতা শেখ মোজাফ্ফর হোসেন বললেন, 'কয়েক দিন থেকে কিছুটা ব্যস্ত সময় পার করছেন তাঁরা। পড়ুয়ারা বইয়ের খোঁজ নিচ্ছেন। বই কিনছেন। বিক্রি আরও বাড়বে বলে জানালেন তিনি।'
ক্যানিং থেকে ডব্লিউবিসিএসের কিছু বই কিনতে এসেছিলেন অমিত প্রধান। বললেন, 'এই দোকানেই বই কিনি। এই বইগুলো প্রয়োজন ছিল। তাছাড়া জমজমাট কলেজস্ট্রিট, কফিহাউসের টান তো আছেই। এতদিন বইপড়া ফাঁকা ফাঁকা ছিল। এখন জমজমাট ভাবটা ফিরছে।'

'বুক রিসোর্সে'র কৌশিক চক্রবর্তী বললেন, 'ইলেভেন টুইলভের সায়েন্স, কমার্স, আর্টস, ইঞ্জিনিয়ারিং আর বিকম-এর বই বিক্রি শুরু হয়েছে। সেইসঙ্গে ডব্লিউবিসিএস-এর প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতির বই বিক্রি ভালো। অন্য প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার বইয়ের চাহিদাও বেড়েছে।' পাশাপাশি তিনি এও বলেন, 'টানা অনলাইন ক্লাস করে পড়ুয়াদের টেক্সট বুক নির্ভরতা অনেক কমেছে। এটা একটা খারাপ লক্ষণ। তবে আগের থেকে বই বিক্রি বেড়েছে।'

অন্যদিকে, বই বিক্রি বাড়লেও খুব খুশি নন দোকানিদের একাংশ। তাদের বক্তব্য, দফায় দফায় লকডাউনের কারণে তাদের ব্যবসার ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেশি। তাই হঠাৎ করে বিক্রি বাড়ায় তাদের ক্ষতি খুব একটা পোষাবে না। সময় লাগবে।