শেষ আপডেট: 2nd July 2024 19:54
দ্য ওয়াল ব্যুরো: চোপড়ার ঘটনা নিয়ে বর্তমানে তোলপাড় চলছে রাজ্যে। যে তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে তরুণ-তরুণীকে হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে সেই তাজম্মুল ওরফে জেসিবিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। স্থানীয় বিধায়ক হামিদুল রহমানকেও শোকজ করা হয়েছে দলের তরফে। তবে এইটুকুতেই কী সমস্যার সমাধান হবে? এমনটা মনে করেন না অভিনেতা তথা তৃণমূল বিধায়ক চিরঞ্জিত চক্রবর্তী। তাঁর মত, এমন ধরনের লোকজনকে পোকার মতো মারা উচিত!
সালিশি সভার নামে চোপড়ায় বেধড়ক মারধর করা হয়েছে এক যুগলকে। চোপড়ার বিধায়ক হামিদুল রহমান বলেছিলেন, নির্যাতিতা যুবতী অসামাজিক কাজে জড়িত ছিলেন। তাঁকে শাসন করতে গিয়ে একটু বাড়াবাড়ি করে ফেলেছে জেসিবি। বলা যায়, মূল অভিযুক্ত তৃণমূল নেতার পাশেই দাঁড়িয়েছেন তিনি। তবে তৃণমূলের অন্য এক বিধায়ক কিন্তু এই ঘটনাকে মধ্যযুগীয় বর্বরতা থেকেও বেশি কিছু বলছেন। চিরঞ্জিতের বক্তব্য, ''এই ধরনের লোকেরা যদি ছারপোকা হয়, তাহলে এক্ষুণি মারতে হবে, নাহলে বেড়ে যাবে।'' যদিও তিনি মনে করছেন, এখনও পর্যন্ত এমন মানসিকতার লোকজন কমই আছে।
গত রবিবার দুপুরে চোপড়ার তৃণমূল নেতা তাজম্মুলের একটি ভিডিও প্রকাশ্যে আসে। তাতে দেখা যায় এক যুগলকে বাঁশের কঞ্চি দিয়ে বেধড়ক মারছেন তাজম্মুল। মারধরের সময়ে চারিদিকে বহু মানুষ থাকলেও তারা কেউই প্রতিবাদ করেননি। উল্টে কেউ কেউ ভিডিও করেন। এই বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত চিরঞ্জিত। তিনি বলছেন, ''যে এই ঘটনা ঘটিয়েছে সে সাইকোপ্যাথ। এই ধরনের মানুষ কখনও বদলায় না। দিনের পর দিন অন্যায় কাজ করতে থাকে। তবে চোখের সামনে এই ধরনের ঘটনা দেখে কেউ কিছু বললেন না, এটা বেশ অদ্ভুত।'' চোপড়ায় ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে দোষীর চরম শাস্তি দাবি করেছেন তিনি।
বিজেপি দাবি করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমলে বাংলায় আইন-শৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে। তোষণের রাজনীতি করে তিনি রাজ্যের মহিলাদের সুরক্ষা নিয়ে ছিনিমিনি খেলছেন। এমনকী রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসেরও দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর আমলে বাংলায় মহিলারা একদমই সুরক্ষিত নন। রাজ্যের মদতেই হিংসা হচ্ছে সর্বত্র। তবে তৃণমূল বিধায়ক চিরঞ্জিত বলছেন, মধ্যযুগীয় বর্বরতার একাধিক উদাহরণ অন্য রাজ্যেও আছে। সুতরাং যারা অভিযোগ করছেন তাদের এই নিয়ে কথা বলার অধিকার নেই। তবে বাংলায় এই ধরনের লোকের সংখ্যা কম। যদি বেশি হত তাহলে সর্বনাশ হয়ে যেত।
প্রসঙ্গত, চোপড়ার ঘটনায় উত্তর দিনাজপুর জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব বিধায়ক হামিদুল রহমানকে শোকজ করেছে। তাঁর বিরুদ্ধে বিতর্কিত মন্তব্য করার অভিযোগ উঠেছে। আগামী ৭ দিনের মধ্যে তাঁকে জবাব দিতে হবে যে কেন তিনি এই ধরনের মন্তব্য করেছেন। কী বলেছিলেন হামিদুল? ঘটনার ভিডিও প্রকাশ্যে আসার পর তাঁর বক্তব্য ছিল, নির্যাতিতা যুবতী অসামাজিক কাজে জড়িত ছিলেন। তাঁকে শাসন করতে গিয়ে একটু বাড়াবাড়ি করে ফেলেছে জেসিবি। মুসলিম রাষ্ট্রে এমন বিচার হয়েই থাকে!
বিজেপির অভিযোগ, হামিদুল ’আমাদের মুসলিম রাষ্ট্র’ বলেছেন। এই ইস্যুতে বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ পুলিশের দ্বারস্থও হয়েছেন। বিধায়কের বিরুদ্ধে অবশ্য যে অভিযোগ উঠেছে তা তিনি মানতে রাজি নন। হামিদুলের পাল্টা দাবি, তাঁর মন্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে।