গ্রাফিক্স- শুভ্র শর্ভিন।
শেষ আপডেট: 23rd January 2025 17:37
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ফিটনেসের নিরিখে এখনও অনেককে টেক্কা দিতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার তা চাক্ষুষ করল আলিপুরদুয়ারের সুভাষিণী চা বাগানে হাজির হওয়া হাজার হাজার মানুষ।
দেড় ঘণ্টার অনুষ্ঠানে মেরে কেটে কয়েক মিনিট চেয়ারে বসেছিলেন। সবুজ সাথীর সাইকেল থেকে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পে উপভোক্তাদের হাতে সামগ্রী তুলে দিতে সারাক্ষণই ঠাঁয় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। পরমস্নেহে উপভোক্তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তারপরে ৩২ মিনিটের ভাষণ।
কলকাতা বা দক্ষিণবঙ্গের তুলনায় উত্তরবঙ্গে কিন্তু ঠান্ডা যথেষ্টই বেশি। দিনের বেলাতেও রীতিমতো জ্যাকেট পড়ে থাকতে হচ্ছে। অনেক সরকারি কর্তাও যখন দীর্ঘ সরকারি অনুষ্ঠান 'শেষ হলে বাঁচি' এমন ভাবখানা নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন, ঠিক তখনই অনুষ্ঠান শেষে দিদি, দিদি সম্বোধন শুনে হাসিমুখে জনতার ভিড়ের দিকে এগিয়ে গিয়েছেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান।
নিরাপত্তার কারণে তিনধাপে বাঁশের ব্যারিকেড তৈরি করা হয়েছিল আগে থেকেই। ওপারে জনতা, এপারে মমতা। কিন্তু রেলমন্ত্রী হোক কিংবা মুখ্যমন্ত্রী, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কবেই বা প্রোটোকলের ধার মেনেছেন! বরং নিরাপত্তার কারণে তিন ধাপে যে বাঁশের ব্যারিকেড তৈরি করা হয়েছিল, জনতার সঙ্গে হাত মেলাতে এক লাফে সেই বাঁশের ব্যারেকেডের প্রথম ধাপেই উঠে পড়েছেন তিনি!
দেখলে বোঝা দায়, মুখ্যমন্ত্রীর বয়স ৭০। অন্তত, সরকারি হিসেবে, সেটাই রয়েছে। তবে সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, আগেকার দিনে স্কুলে ভর্তির সময় বার্থ সার্টিফিকেট বাধ্যতামূলক ছিল না। বাবা তাঁকে স্কুলে ভর্তির সময় ৫ বছর বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। সেই হিসেবেও মমতার বয়স এখনও ৬৫।
শুধু বাঁশের ব্যারিকেডে উঠে পড়েছেন তাই নয়, বেশ কিছুক্ষণ জনতার সঙ্গে কথাও বলেছেন তিনি। আবদার মেনে মিলিয়েছেন হাতও। যা দেখে সরকারি আধিকারিকরা তো বটেই আলিপুরদুযারের চা বাগানে হাজির হওয়া জনতার মধ্যেও গুঞ্জন, ওনার ফিটনেস কিন্তু এখনও বেশ ইর্ষণীয়!
গত ২১ জানুয়ারি থেকে উত্তরবঙ্গে রয়েছেন মমতা। মুর্শিদাবাদ, মালদহ হয়ে আলিপুরদুয়ার। যাকে বলে প্যাক্ট সিডিউল। প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, কলকাতা হোক বা জেলা, মুখ্যমন্ত্রী গড়ে ১৬ থেকে ১৮ ঘণ্টা নাগাড়ে কাজ করার ক্ষমতা রাখেন।
প্রসঙ্গত, এর আগে রাজনৈতিক মঞ্চ কিংবা প্রশাসনিক সভায় দীর্ঘ প্রায় ২ ঘণ্টা টানা বক্তৃতাও দিতে দেখা গিয়েছে মমতাকে। কিলোমিটার কিলোমিটার হাঁটায় তাঁর জুড়িমেলা ভার। এমনকী প্রশাসনিক সভা থেকে অনেক সময় পুলিশ কর্তা থেকে শুরু করে আমলাদের ফিটনেসের 'ক্লাস'ও নিতে দেখা গিয়েছে রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানকে। তবে এভাবে ব্যারিকেডের বাঁশের ওপর দাঁড়িয়ে জনতার সঙ্গে জনসংযোগের দৃশ্য দেখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফিটনেস নিয়ে নতুন করে চর্চা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলেও।
ইতিমধ্যে বিষয়টি সোশ্যাল মাধ্যমে তুলে ধরেছেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। মুখ্যমন্ত্রীর একাধিক ছবি পোস্ট করে কুণালের বক্তব্য, "রাজনৈতিক বা প্রশাসনিক খবর তো হবেই, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফিটনেস রহস্য নিয়েও আলাদা করে চর্চার সময় এসে পড়ছে কিন্তু!"