শেষ আপডেট: 10th February 2025 23:22
দ্য ওয়াল ব্যুরো: সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে চিকিৎসকদের কী অভাব অভিযোগ রয়েছে তা জানতে এবার তাঁদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সূত্রের খবর, আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি ধনধান্য স্টেডিয়ামে ওই বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে। সিনিয়র এবং জুনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলবেন মুখ্যমন্ত্রী। তাৎপর্যপূর্ণভাবে ওই বৈঠকের নামকরণ করা হয়েছে-'চিকিৎসার অপর নাম সেবা'।
বছর ঘুরলেই বিধানসভা ভোট। তার আগে মুখ্যমন্ত্রীর এই পদক্ষেপ বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণবলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। বস্তুত, আরজি কর কাণ্ডে প্রশ্নের মুখে পড়েছিল সরকারি হাসপাতালের নিরাপত্তা-সুরক্ষা। সেই সূত্রে সামনে আসে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগও। কার্যত রাজ্যের বিরুদ্ধেই টানা আন্দোলনে নামে জুনিয়র চিকিৎসকদের একাংশ।
এরই মধ্যে বছরের শুরুতে মেদিনীপুরে স্যালাইন কাণ্ডে প্রসূতির মৃত্যু আরও কয়েকজন প্রসূতির অসুস্থ হওয়ার ঘটনায় বড়সড় প্রশ্নের মুখে পড়ে রাজ্যের চিকিৎসা ব্যবস্থা। ওই ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে স্বাস্থ্য দফতরের পাশাপাশি সিআইডিও পৃথকভাবে তদন্তে নামে। কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগ মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের ১২ জন চিকিৎসককে সাসপেন্ডও করে রাজ্য সরকার। এবিষয়ে নবান্নের বৈঠক থেকে চিকিৎসকদের কড়া বার্তা শুনিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
৮ ঘণ্টার ডিউটির কথা মনে করিয়ে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, কর্তব্যে গাফিলতির প্রশ্নে কাউকেই রেয়াত করা হবে না। আরজি কর পরবর্তী সময়ে এভাবে হাসপাতালের সুপার-সহ এক ডজন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে রাজ্য শাস্তি খাঁড়া নামিয়ে আনায় চিকিৎসকদের একাংশ ক্ষুব্ধ ছিলেন। তাঁদের অনেকেই প্রশ্ন তুলছিলেন পরিকাঠামো নিয়ে। একান্ত আলাপ চারিতায় সরকারি হাসপাতালের একাংশ চিকিৎসকের অভিযোগ, পরিকাঠামো ঠিক না থাকলে কাজ করব কীভাবে?
অন্যদিকে শাসকদলের অভিযোগ, পরিকাঠামো থাকলেও কিছু ক্ষেত্রে সরকারের বদনাম করতে পরিকল্পিতভাবে হাসপাতালে বিশৃঙ্খলা তৈরি করা হচ্ছে। আর তার সুযোগ নিচ্ছে বিরোধীরা। পরিস্থিতির মোকাবিলায় বছরের শুরুতে চিকিৎসক, নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের একাংশকে নিয়ে 'প্রোগ্রেসিভ হেলথ অ্যাসোসিয়েশন' নামে নতুন সংগঠন তৈরি করেছে তৃণমূল।
এবার ক্ষুব্ধ চিকিৎসকদের অভাব-অভিযোগ শুনতে সরাসরি তাঁদের সঙ্গে বৈঠকের আয়োজন করলেন স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, দক্ষ রাজনীতিক মমতা যেভাবে একদিকে কড়া শাস্তির হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন আবার অন্যদিকে অভাব-অভিযোগ শুনতে সরাসরি চিকিৎসকদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চলেছেন, তাতে বিরোধীদের আন্দোলনের পরিসর অনেকখানি কমে গেল। রসিকতার সুরে তাঁরা বলছেন, এ রাজ্যে শাসক মুখ্যমন্ত্রীই ক্ষেত্রে বিশেষে বিরোধীদের রোলও নিজের হাতেই তুলে নিচ্ছেন। যা আদতে ভোটের রাজনীতিতে শাসককেই আরও সুবিধাজনক ফল দিতে পারে। অন্যদিকে আরও অস্বস্তি বাড়তে পারে বিরোধী শিবিরের। চাপ বাড়ল বিক্ষুব্ধ চিকিৎসকদেরও। এখন দেখার মুখ্যমন্ত্রীর ওই বৈঠকে বিক্ষুদ্ধ চিকিৎসকরা উপস্থিত হন কিনা।