গত ৮ বছর ধরে কলকাতায় বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের আয়োজন করছে রাজ্য। সেই আদলে সোমবার উত্তরবঙ্গেও বাণিজ্য সম্মেলনের আয়োজন করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
শেষ আপডেট: 20 May 2025 11:24
দ্য ওয়াল ব্যুরো: তিনদিনের উত্তরবঙ্গ (North Bengal) সফরের দ্বিতীয় দিনে শিলিগুড়ি সংলগ্ন ডাবগ্রামের ভিডিওকন গ্রাউন্ডের সরকারি সভা থেকে একগুচ্ছ প্রকল্পের শিলান্যাস, উদ্বোধন এবং বহু মানুষকে সরকারি পরিষেবা প্রদান করলেন মুখ্যমন্ত্রী (Chief Minister, Mamata Banerjee)।
ওই মঞ্চ থেকেই উত্তরবঙ্গের উন্নয়নের পরিসংখ্যান তুলে ধরার পাশাপাশি বাম এবং বিজেপিকে নিশানাও করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, "উত্তরবঙ্গে আগে কী ছিল? মানুষের কান্না, হাতি আর গণ্ডার! কোনও উন্নয়ন ছিল না। এখন জলপাইগুড়িতে সরকারি সেক্রেটারিয়েট. উত্তরকন্যা থেকে জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চ, ভোরের আলো। আলিুপুরদুয়ার , কালিম্পং নতুন জেলা, কত সাব ডিভিশন।"
সরকারে আসার পর ৯৭টি সামাজিক সুরক্ষামূলক প্রকল্প চালু করেছেন তিনি। এ প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, এগুলোও তো কাজের মধ্যে পড়ে। যে পায় সে এর মর্ম বোঝে। আসলে দাঁত থাকতে দাঁতের মর্ম আমরা বুঝি না। দাঁত থাকতে সম্মান করতে শিখুন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরোধিতা করতে গিয়ে সারাক্ষণ বাংলাকে অপমান করবেন, এটা বাংলার মানুষ বরদাস্ত করবে না।
বিরোধীদের সমালোচনা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "যারা চোখে বাংলার উন্নয়ন দেখতে পান না, যাঁরা পিঠে বেঁধেছেন কুলো, কানে দিয়েছেন তুলো, চোখে দিয়েছেন ঠুলো, তাদের উন্নয়নের হিসেব দিলে নিতে পারবেন তো, লেখার জায়গা আছে তো? শুধু
লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার দুটো জেলা মিলে যদি খরচাটা বলি চোখ দিয়ে জল পড়বে!"
গত ৮ বছর ধরে কলকাতায় বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের আয়োজন করছে রাজ্য। সেই আদলে সোমবার উত্তরবঙ্গেও বাণিজ্য সম্মেলনের আয়োজন করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে উত্তরের ৮টি জেলার বহু শিল্পপতি এবং উদ্যোগপতিরা উপস্থিত ছিলেন। প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা ধরে চলে আলোচনা। ওই বৈঠক নিয়ে অনেকে নেতিবাচক কথা বলছেন।
এদিন সরকারি সভায় সেই প্রসঙ্গ তুলে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "সাড়ে তিনঘণ্টা ধরে মিটিং করলাম। তারপরও অনেকে না জেনে নেগেটিভিটি প্রচার করছে। বলছে, কত ইনভেস্ট এল, বলল না কেন? কেন কৈফিয়ত দিতে হবে? যারা বিনিয়োগ করে এটা তাদের স্বাধীনতা।"
একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "কেউ যদি ভাবেন, আমি তো আর ম্যাজিসিয়ান নই রে ভাই, যে আজকে আমি ম্যাজিসিয়ানের মতো ছোঁয়াব আর আকাশ থেকে গুপি গাইন বাঘা গাইন সিনেমার মতো টাকা পড়বে, তা নয়। আসতে আসতে সময় মতো সবই করে দেব।"
তবে তিনি যে কথা দিলে কথা রাখতে জানেন, তাও মনে করিয়ে দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, "বিধানসভা ভোটের আগে আমরা চারটে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম- খাদ্য সাথী, দুয়ারে রেশন, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার এবং স্টুডেন্টসদের স্মার্ট কার্ড। যখন যেটা বলেছি, করে দেখিয়েছি। মনে রাখবেন, কথা দিলে, আমি কথা থেকে সরে যায় না। এটাই আমার ক্রেডিবিলিটি। এবং কথা রাখার চেষ্টায় ত্রুটি রাখি না।" এদিন সরকারি সভার আগে স্বসহায়ক গোষ্ঠীর স্টল থেকে দুটি বেতের ঝুড়ি এবং দার্জিলিং চা কেনেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।