শেষ আপডেট: 7th May 2024 14:35
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ২৬ হাজার শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মচারীর ভবিষ্যৎ এখন সুপ্রিম কোর্টের সম্ভাব্য রায়ের উপর ঝুলে রয়েছে। সর্বোচ্চ আদালতে মঙ্গলবার সেই মামলার শুনানি হয়েছে। তা এখনও শেষ হয়নি। তবে এদিন মামলার শুনানি চলাকালীন স্কুল সার্ভিসের মাধ্যমে গোটা এই নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে তাৎপর্যপূর্ণ পর্যবেক্ষণ জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়।
প্রধান বিচারপতি বলেন, “এটা পরিকল্পিত জালিয়াতি। সরকারি চাকরি বর্তমান সময়ে খুবই অপ্রতুল এবং তা সামাজিক নিশ্চয়তার আঙ্গিকে দেখা হয়। নিয়োগ প্রক্রিয়াই যদি কালিমালিপ্ত হয়, তাহলে গোটা ব্যবস্থায় আর অবশিষ্ট কী থাকে? মানুষ আস্থা হারিয়ে ফেলবে। সেটা ফেরাবেন কী করে!”
হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে এদিন সওয়াল করেন আইনজীবী জয়দীপ গুপ্ত। তিনি বলেন, চাকরি বাতিল করার কোনও এক্তিয়ারই উচ্চ আদালতের নেই। স্কুল সার্ভিস কমিশনের হয়ে সওয়াল করতে গিয়ে তিনি বলেন, ডেটা স্ক্যানারের সঙ্গে আমাদের কোনও সম্পর্ক নেই।
কিন্তু এই প্রশ্নেই তাঁকে চেপে ধরেন প্রধান বিচারপতি। তিনি বলেন, “ওএমআর শিট এবং স্ক্যান কপিগুলো কি নষ্ট করে ফেলা হয়েছে?” জবাবে আইনজীবী জয়দীপ গুপ্ত বলেন, “হ্যাঁ”। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় তাঁকে প্রশ্ন করেন, “এত স্পর্শকাতর একটা বিষয়। তার পরেও আপনারা ওএমআর শিট স্ক্যান করাতে টেন্ডার ডাকেননি কেন?”
বিষয়টি এড়িয়ে আইনজীবী বলেন, সেটা আপনি বলতেই পারেন। তবে আমরা নোটিস নিয়ে আলোচনা করছি। কিন্তু তাঁকে তা না করতে দিয়ে প্রধান বিচারপতি ফের বলেন, “ব্যাপারটা আউটসোর্স করে আপনারা গোটা প্রক্রিয়ার পবিত্রতা নষ্ট করেছেন।”
এরপরেও বিষয়টি লঘু করার চেষ্টা করে আইনজীবী জয়দীপ গুপ্ত বলেন, “আমরা জানতাম না যে কোম্পানিকে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে তারা এত নাইস (NICE) হবে।” নাইস হল ওই সংস্থার নাম। এতে প্রধান বিচারপতি হেসে ফেলেন ঠিকই। কিন্তু পরক্ষণেই প্রশ্ন করেন, স্কুল সার্ভিস কমিশন হিসাবে আপনাদের দায়িত্ব ছিল ওএমআর শিটের মিরর ডিজিটাল কপি রাখা। জবাবে আইনজীবী বলেন, “সেটা নাইসের কাছে রয়েছে।”
যা শুনে প্রধান বিচারপতি বলেন, “কিন্তু সিবিআই তো তা পায়নি। আপনাদের কাছে ছিল না। আউটসোর্স করা হয়েছিল। এর থেকে বড় নিয়মভ্ঙ্গ কী হতে পারে! সাধারণ মানুষের তথ্য আপনারা একটা সংস্থার হাতে ছেড়ে দিয়েছেন।” প্রধান বিচারপতি এও বলেন, তার মানে আপনারা তথ্যের অধিকার আইনের আওতায় প্রশ্নের জবাবেও মিথ্যে বলেছেন। আপনারা তখন বলেছিলেন, ওএমআর আপনাদের কাছে রয়েছে”।
এর পরেও আইনজীবী গুপ্ত সওয়াল চালিয়ে যান। তিনি বলেন, আমরা কি সিবিআইয়ের তথ্যের উপর ভরসা করছি না? যদি সিবিআইয়ের তথ্যের উপর ভরসা করি তাহলে যোগ্য ও অযোগ্যদের আলাদা করা যাবে।
এই সময়েই বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালাকে স্বগতোক্তির মতো বলতে শোনা যায়, মারাত্মক!
মধ্যাহ্নভোজের জন্য এর পর শুনানিতে বিরতি দেওয়া হয়। তার পর ফের শুরু হয় শুনানি।