শেষ আপডেট: 6th August 2022 08:28
দ্য ওয়াল ব্যুরো: আজ শনিবার স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসব পালন কমিটি এবং আগামীকাল রবিবার নীতি আয়োগের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীদের (Narendra Modi) দেখা হওয়ার কথা। তার আগ শুক্রবার বিকালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সেই তালিকায় আজ যুক্ত হল আরও এক অবিজেপি শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর নাম। ছত্তীসগড়ের (Chhattisgarh) কংগ্রেস সরকারে মুখ্যমন্ত্রী ভুপেশ বাঘেল (Bhupesh Baghel) শনিবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। প্রসঙ্গ—রাজ্যের দাবিদাওয়া।
মমতা-মোদী এবারের বৈঠক নিয়ে শুধু তৃণমূল ও বিজেপি বিরোধী দলগুলিই নয়, গেরুয়া শিবিরের মধ্যেও প্রশ্ন উঠেছে। শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির জেরে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে ইডির গ্রেফতার, তাঁর ঘনিষ্ঠের হেফাজত থেকে বিপুল টাকা ও সোনাদানা বাজেয়াপ্ত করার ঘটনায় রাজ্য-রাজনীতি যখন সরগরম তখন প্রধানমন্ত্রী কেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে দেখা করার সময় দিলেন সে প্রশ্ন ঘোরাফেরা করছে বিজেপির অন্দরে।
গোষ্ঠী ভুলে গান্ধী পরিবারের পাশে গোটা দল, মেরুকরণই মোকাবিলার কৌশল বিজেপির
অন্যদিকে, কংগ্রেস ও বামেরা দিদি-মোদী সেটিংয়ের অভিযোগ তুলেছে। তৃণমূল সব অভিযোগ উড়িয়ে এই বৈঠককে রাজ্যে ও কেন্দ্রের মুখ্য প্রশাসকের প্রশাসনিক আলোচনা বলে দাবি করেছে। দলের তরফে প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেওয়া মুখ্যমন্ত্রীর চিঠির কপিও বিলি করা হয়। কেন্দ্রের কাছে নানা খাত মিলিয়ে রাজ্যের প্রায় এক লক্ষ কোটি টাকা পাওনা।
এই পরিস্থিতিতে মোদীর সঙ্গে আজ বাঘেলের বৈঠক মমতা ও বিজেপি বিরোধীদের সমালোচনার ধার খানিকটা কমিয়ে দিল বলে মনে করা হচ্ছে। গতকালই দিল্লি পুলিশ কংগ্রেসের যে ৩০০ নেতা-কর্মীকে আটক করেছিল বাঘেল তাঁদের অন্যতম। দ্রব্যমূল্য নিয়ে গতকাল দিল্লি-সহ সব রাজ্যেই কংগ্রেস রাজপথে নেমে ছিল। রাজ্যস্থান ও ছত্তীসগড়ের মুখ্যমন্ত্রীরা দিল্লিতে রাহুল গান্ধী, প্রিয়ঙ্কা গান্ধীদের সঙ্গে রাষ্ট্রপতি ভবন অভিমুখে পা মেলান।
কিন্তু বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর মতো রাজ্যের দাবিদাওয়া নিয়ে আজ বাঘেলও হাজির হন মোদীর কাছে। ছত্তীসগড় সরকার এবার কৃষকদের কাছ থেকে আড়াই হাজার টাকা কুইন্টাল দরে ধান কিনেছে। এই ধানের কিছুটা কেন্দ্রীয় সরকার কিনে নিলে রাজ্য সরকারের আর্থিক সুবিধা হবে বলে মোদীকে বোঝান বাঘেল। ওই রাজ্যে আদিবাসীদের জন্য চালু আইনে কিছু সংশোধন প্রয়োজন। সেই সংশোধনে কেন্দ্রের আগাম অমুমতি প্রয়োজন। প্রধানমন্ত্রীকে এই ব্যাপারে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আর্জি জানান ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠমহল থেকে বলা হয়, গতকালের কর্মসূচি ছিল মোদী সরকারের বিরুদ্ধে কংগ্রেসের লড়াই। মুখ্যমন্ত্রী আজ প্রধানমন্ত্রীর কাছে কংগ্রেসের নেতা নন, ছত্তীসগড়ের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে রাজ্যের মানুষের দাবিদাওয়া পেশ করতে গিয়েছিলেন।
প্রসঙ্গত, কংগ্রেসে বাঘেল গেরুয়াবাদী বলে পরিচিত। তাঁর সরকার ছত্তীসগড়ে হিন্দু মন্দির-সব দেবস্থান সংস্কারে কয়েক হাজার কোটি টাকা ব্যয় করছে। গত মার্চে উদয়পুরে কংগ্রেসের চিন্তন শিবিরে বাঘেল দাবি তোলেন, হিন্দুত্বের পথে হাঁটতে হবে কংগ্রেসকেও। নইলে বিজেপির মোকাবিলা সম্ভব নয়।