শেষ আপডেট: 1st February 2020 14:07
দ্য ওয়াল ব্যুরো: সিন্ধু-সরস্বতী নদীর অববাহিকায় যে সভ্যতা গড়ে উঠেছিল তার সবচেয়ে বড় শহর ছিল ধোলাবীরা এবং সমুদ্রবন্দর ছিল লোথাল। সাম্প্রতিক বহু গবেষণায় একথা প্রতিষ্ঠিত হলেও এখনও গৌরব ম্লান হয়নি হরপ্পা ও মহেঞ্জোদড়োর। হরপ্পার যে নাম ও ব্যাপ্তি রয়েছে ধোলাবীরার তা নেই। এবার এই জায়গায় সাইট মিউজিয়াম গড়ার প্রস্তাব দিয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন। বাজেট বক্তৃতায় তিনি জানিয়েছেন, গুজরাটের এই প্রাগৈতিহাসিক (বস্তুত প্রোটো-হিস্টরিক, যেহেতু সেখান থেকে লেখা উদ্ধার করা হয়েছে) শহরে গড়ে তোলা হবে সাইট মিউজিয়াম।
ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ বা আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার (এএসআই) একটি নীতি হল, কোনও স্থান উৎখনন করে যে সব নিদর্শন পাওয়া যাবে সেই সব নিদর্শন দিয়ে জাদুঘর গড়া হবে ওই ঐতিহাসিক স্থানেই। নালন্দা, সারনাথ, কোণার্ক, খাজুরাহোর মতো বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থানে এই ধরনের জাদুঘর রয়েছে এএসআইয়ের। বাজেটে এমন জাদুঘরের কথাই ঘোষণা করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। তবে শুধু ধোলাবীরায় নয়, রাজস্থানের রাখিগড়িতেও ঘগ্গর-হরকা নদীর ধারে সিন্ধু সভ্যতার নিদর্শন আবিষ্কৃত হয়েছে যা ২৬০০ খ্রিস্টপূর্ব সময়কালের। এখানেও একই ধরনের জাদুঘর তৈরির প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। তিনি যে পাঁচটি জায়গায় সাইট মিউজিয়ামের কথা ঘোষণা করেছেন তার মধ্যে রয়েছে উত্তরপ্রদেশের হস্তিনাপুর, অসমের শিবসাগর ও তামিলনাড়ুর আদিচানাল্লুর।
তিনি জানিয়েছেন দেশের প্রাচীনতম জাদুঘর কলকাতার ভারতীয় সংগ্রহালয়কেও নতুন করে সাজানো হবে।
চেন্নাইয়ের কাছে মমল্লপুরম বা মহাবলীপুরমে বর্তমানে একটি সমুদ্র-জাদুঘর রয়েছে। তবে নতুন একটি সমুদ্র-জাদুঘর তৈরি হবে লোথালে, বাজেটে প্রস্তাব দিয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। মমল্লপুরমের সংগ্রহশালাটিতে মুঘল-উত্তর সময়কাল থেকে আধুনিক সময়কালকে ধরেছে কেন্দ্রীয় জাহাজমন্ত্রক। লোথালের জাদুঘরটিও তারাই গড়বে। এখানে হরপ্পার সময়কালে ভারত কী ভাবে বাণিজ্যিক ভাবে সমুদ্রে রাজ করত সেই ছবি তুলে ধরা হবে।
রাঁচিতে একটি আদিবাসী জাদুঘর গড়ার প্রস্তাবও দিয়েছেন নির্মলা সীতারমন। কোচবিহার রাজবাড়ির একাংশে উত্তরবঙ্গের আদিবাসীদের জন্য পৃথক গ্যালারি থাকলেও আলাদা জাদুঘর নেই। পশ্চিমবঙ্গের আদিবাসী উন্নয়ন মন্ত্রকের অধীনে একটি জাদুঘর থাকলেও এটিতে জোর দেওয়া হয়েছে মূলত কয়েকটি জনজাতির জীবনযাত্রা, পুতুল ও দুই বাংলার সব ধরনের নৌকার উপরে। আদিবাসীদের জন্য আলাদা ভাবে জাদুঘর সেই অর্থে এ রাজ্যেও নেই। অসমে এই ধরনের জাদুঘর থাকলেও সেখানে ধরা রয়েছে উত্তর-পূর্ব ভারতের একাংশের জীবনযাত্রার ছবি। ঝাড়খণ্ড রাজ্য আদিবাসীপ্রধান তাই এই জায়গাটিকেও আদিবাসী সংগ্রহশালা তৈরির জন্য নির্বাচিত করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী।