শেষ আপডেট: 5th September 2024 21:39
রফিকুল জামাদার
আরজি কর হাসপাতালে হাউজ স্টাফ নিয়োগেও সন্দীপ ঘোষ অনিয়ম ও দুর্নীতি করেছেন বলে সন্দেহ করছে সিবিআই। বিষয়টি সিবিআই বিশেষ আদালতে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্ত এজেন্সি।
আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে একটানা ষোল দিন ধরে জেরা করেছে সিবিআই। তাঁর বাড়িতেও তল্লাশি চালানো হয়েছে। সন্দীপ ঘোষ অবশ্য প্রাতঃকৃত্য করার জন্য সিবিআইকে প্রায় দেড় ঘণ্টা দরজার বাইরে দাঁড় করিয়ে রেখেছিলেন। সে যাক, আদালতে সিবিআই যা জানিয়েছে তা মারাত্মক অভিযোগ।
সিবিআই আদালতে জানিয়েছে, ২০২২ এবং ২০২৩ সালে সন্দীপ ঘোষ নিজের মর্জি মাফিক ৮৪ জন ডাক্তারকে হাউজ স্টাফ হিসাবে নিয়োগ করেছেন। যাঁদের নিয়োগের ক্ষেত্রে যথাযথ নিয়ম মানা হয়নি। ব্যাপারটা কীভাবে তাঁরা ধরতে পারলেন তাও জানিয়েছেন সিবিআই কর্তারা।
আদালতে তাঁরা জানিয়েছেন, ২০২৪ সালে হাউজ স্টাফ নিয়োগের জন্য ১৩ জন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। এমবিবিএস পাশ করা প্রার্থীদের মেরিট লিস্ট তৈরি করে তাঁদের কাউন্সেলিংয়েরও ব্যবস্থা করা হয়। চূড়ান্ত মেরিট স্কোর, সিলেকশন সহ সমস্ত নথিপত্র এবং রেজোলিউশন ওই কমিটির সব সদস্যকে দিয়ে সই করানো হয়।
কিন্তু ২০২২-২৩ যে নিয়োগ হয়েছিল তাতে কোনও রেজোলিউশন সই করানো হয়নি। কীভাবে চূড়ান্ত নম্বর দেওয়া হয়েছে তার কোনও সুনির্দিষ্ট হিসাব নেই। শুধু ফাইনাল মার্কস লেখা রয়েছে অর্ডারে। এভাবে ৮৪ জন ডাক্তারকে আরজি কর হাসপাতালে নিয়োগ করা হয়েছে।
হাউজ স্টাফরা প্রকারান্তরে জুনিয়র ডাক্তারের মতোই কাজ করেন। এর আগে বাংলায় সরকারি হাসপাতালগুলিতে হাউজ স্টাফ হিসেবে কাজ করাটা ছিল বাধ্যতামূলক। কিন্তু গত দশ বছরে সেই নিয়ম শিথিল করা হয়। হাউজ স্টাফ হিসেবে কাজ করার জন্য মেডিক্যাল কলেজে আবেদন করতে হত ডাক্তারদের। এর পর ডাক্তারি পড়ার সময়ে প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে তাঁদের বাছাই করা হত।
এ বছর সেই প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন আনে স্বাস্থ্য দফতর। ঠিক হয়, এমবিবিএস পড়ার সময়ে প্রার্থীর প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে ৮৫ শতাংশের স্কোরকার্ড তৈরি হবে। ইন্টারভিউয়ের ভিত্তিতে বাকি ১৫ শতাংশের মধ্যে নম্বর দেওয়া হবে প্রার্থীদের।
তবে এই ইন্টারভিউর প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন ডাক্তারদের একাংশ এবং একাধিক সংগঠন। অ্যাসোসিয়েশন অব হেল্থ সার্ভিস ডক্টরসের সাধারণ সম্পাদক মানস গুমটা সংবাদমাধ্যমকে বলেছিলেন, ইন্টারভিউয়ে যে ১৫ শতাংশ নম্বর যোগ হবে তা নিয়ে স্বজনপোষণ এবং দুর্নীতি, অভিযোগ আসতে শুরু করেছে। ঘটনা হল, স্থানীয় ভাবে হাউজ স্টাফ নিয়োগের জন্য এ বছর এপ্রিল মাসে যে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছিল, স্বাস্থ্য দফতর তা দুদিন আগে বাতিল করেছে। সেই সাত সতেরোর মধ্যেই এবার নতুন অভিযোগ উঠে গেল। এখন দেখার তদন্তের জল কতদূর গড়ায়।