শেষ আপডেট: 26th November 2022 04:22
মাস্ক না পরাই কি কাল হল! যক্ষ্মায় মৃত্যু কলকাতা মেডিক্যালের ডাক্তারি পড়ুয়ার
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বিভিন্ন ওয়ার্ডে ঘুরতে হত। রোগীদের হাঁচি-কাশি থেকেই যক্ষ্মার (Tuberculosis) জীবাণু ঢুকেছিল শরীরে? কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের ডাক্তারি পড়ুয়ার মৃৃত্যু হয়েছে টিউবারকিউলোসিস বা যক্ষ্মায়। টানা সাত মাস টিবিতে ভুগছিলেন ওই পড়ুয়া। জীবনের লড়াই থেমে গেল আজ।
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের মেধাবি পড়ুয়ার নাম কৌশিক রেজার। গত এপ্রিল মাসে টিবিতে (Tuberculosis) আক্রান্ত হয়েছিলেন কৌশিক। আরামবাগের বাসিন্দা কৌশিককে ভর্তি করা হয়েছিল শম্ভুনাথ পণ্ডিত মেডিক্যাল কলেজে। সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর।
কৌশিকের সহপাঠীরা বলছেন, মেধাবী ছাত্র ছিলেন কৌশিক। তবে ছোটবেলা থেকেই শারীরিকভাবে দুর্বল। শরীরে ইমিউনিটির ঘাটতি ছিল। হাসপাতালে এমনিতেও নানা রোগীর ভিড়। বিভিন্ন ওয়ার্ডে ঘোরার সময় মাস্ক পরতেন না কৌশিক। মনে করা হচ্ছে, রোগীদের হাঁচি-কাশি থেকে জীবাণু ঢুকেছিল তাঁর শরীরে। প্রথমটায় চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছিলেন। কিন্তু গত চল্লিশ দিন ধরে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছিল। কৌশিককে বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টা করেন ডাক্তারবাবুরা। কিন্তু শেষ অবধি জীবনের লড়াই থেমে যায় তাঁর।
ডাক্তারবাবুরা বলছেন, কোভিডের মতো যক্ষ্মাও (Tuberculosis) সংক্রামক রোগ। গত বছর করোনার কারণে মাস্কের ব্যবহার বাড়ায় যক্ষ্মা রোগীর সংখ্যা অনেক কমে যায়। যক্ষ্মার কারণ হল মাইকোব্যাকটেরিয়াম টিউবারকুলোসিস (Mycobacterium Tuberculosis)। যক্ষ্মার জীবাণুও বাতাসে ভাসমান ড্রপলেটের মাধ্যমে শরীরে ঢুকতে পারে। কিন্তু এখন কোভিড কমে যাওয়ায় আবারও মাস্ক পরা ছেড়ে দিয়েছেন বেশিরভাগই। ফলে টিবি ফের জাঁকিয়ে বসতে শুরু করেছে।
রাজ্যে যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে রয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। শহর কলকাতায় সেই দায়িত্ব রয়েছে কলকাতা পুরসভার কাঁধে। দেশ থেকে এই রোগ নির্মূল করতে ১৯৬২ সালে ‘ন্যাশনাল টিউবারকিউলোসিস প্রোগ্রাম (এনটিপি) চালু করে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। পরিসংখ্যাণ বলছে, শহরে এখনও প্রতি বছর বহু মানুষ মানুষ যক্ষ্মাতে আক্রান্ত হন। যক্ষ্মার চিকিৎসা ছ’মাস থেকে দু’বছর পর্যন্ত চালাতে হয়। মাঝপথে চিকিৎসা বন্ধ করলে সমস্যা বাড়ে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যক্ষ্মাকে যথোচিত গুরুত্ব দিয়ে প্রতি বছর এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদনও প্রকাশ করে থাকে। তবুও, উন্নত দেশে যক্ষ্মায় মৃত্যু আজকাল বিরল হলেও, তৃতীয় বিশ্বে মৃত্যুর হারের নিরিখে যক্ষ্মা এখনও অনেক উপরে।