শেষ আপডেট: 5th January 2025 15:49
দ্য ওয়াল ব্যুরো: হাসপাতালের জন্য জমি দান করা হলেও সেই জমিতে হচ্ছে জল প্রকল্পের কাজ। কেন হাসপাতাল তৈরি না করে সেখানে জল প্রকল্পের কাজ হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে আপাতত ফলতা-মথুরাপুর জল প্রকল্পের কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার রায়দিঘীর পুরন্দর পুর এলাকার বাসিন্দা মামলাকারী জাকির হোসেনের দাবি, ওই এলাকায় একটি গ্রামীন হাসপাতাল তৈরি জন্য ১৯৬২ সালে জমি ১.৯৮ একর জমি দান করেছিলেন তাঁর ঠাকুরদা। সেখানে ছয় শয্যার গ্রামীন হাসপাতাল তৈরি হয়। কিন্তু মামলাকারীর আইনজীবী পঙ্কজ হালদার শনিবার আদালতে বলেন, পরবর্তীতে ওই ছয় শয্যার হাসপাতালকে ১০ শয্যার হাসপাতালে রূপান্তরের জন্য মামলাকারীর কাছে আরও জমি চায় তৎকালীন সরকার।
এরপর ১৯৭৬ সালে মামলাকারীর বাবা সরকারকে আরও জমি দান করেন। মোট ৪.৬৮ একর জমি দান করা হয়। কিন্তু মামলাকারীর অভিযোগ এতদিন পর ওই গ্রামীন হাসপাতালের উন্নয়নের কথা না ভেবেই সেখানে এখন সেখানে জনস্বাস্থ্য কারিগরী দফতর পানীয় জলের একটি পাম্প নির্মাণ করছে।
শুক্রবার মামলার শুনানিতে রাজ্যের কাছে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চের প্রশ্ন স্বাস্থ্য দফতরকে ওই জমি হাসপাতাল তৈরির জন্য দেওয়া হয়েই থাকে, তাহলে সেখানে কী করে জল প্রকল্পের কাজ করা হচ্ছে?
পাল্টা রাজ্যের তরফে জানানো হয়, স্বাস্থ্য দফতর ইতিমধ্যেই ওই জমি জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরকে হস্তান্তর করেছে। তাই ওই জমিতে ১১টি ব্লকে জল সরবরাহের জন্য মেগা সারফেস পাম্প তৈরি হচ্ছে। এই বক্তব্য শোনার পরই প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘যিনি জমি দান করেছেন, তাঁকে না জানিয়ে কীভাবে এই জমি এক দফতর থেকে অন্য দফতরে হস্তান্তর হল? এখন তো ওখানে ১০০ শয্যার হাসপাতাল করা উচিত। জলের কাজ করুন ঠিক আছে। কিন্তু হাসপাতালের উন্নতি আগে করতে হবে।’
এরপরই ডিভিশন বেঞ্চ সাফ জানায়, যেহেতু ওই জমি হাসপাতাল তৈরির জন্য দান করা হয়েছিল তাই মামলাকারীকে না জানিয়ে ওই জমি হস্তান্তর করা যায় না। তাই আদালত পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ফলতা-মথুরাপুর জল প্রকল্পের আওতাভুক্ত ওই মেগা সারফেস জল প্রকল্পের কাজ বন্ধ থাকবে। পাশাপাশি কেন ওই হাসপাতাল উন্নীত করা হল না তা নিয়ে স্বাস্থ্য দফতরের প্রধান সচিবকে রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়। এছাড়াও ওই জমি কীভাবে হস্তান্তর করা হল তা নিয়ে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের সচিবের কাছেও পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট তলব করেছে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ।