শেষ আপডেট: 22nd February 2024 23:33
দ্য ওয়াল ব্যুরো: দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগর ২ নম্বর ব্লকের বকুলতলা থানা। কলকাতা থেকে দূরত্ব প্রায় ৪৫ কিলোমিটারের মতো। এই এলাকার একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পরিস্রুত পানীয় জলের অভাবে পুকুরের দূষিত জল খেতে বাধ্য হচ্ছে পড়ুয়ারা। শুধু তাই নয় অভিযোগ, স্কুলের মিড ডে মিলও রান্না হচ্ছে পুকুরের জলে। এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টে। এই অভিযোগ শুনেই উদ্বেগ প্রকাশ করেন প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, এমন অবস্থা মেনে নেওয়া যায় না। সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যে পরিশ্রুত পানীয় জলের ব্যবস্থা করতে হবে।
বকুলতলা থানার জয়নগর দুই ব্লকের পূর্ব রঘুনাথপুর এলাকায় রয়েছে রঘুনাথপুর সদরচক ফ্রি প্রাইমারি স্কুল। অভিযোগ, এই স্কুলে পড়ুয়াদের জন্য পানীয় জলের বন্দোবস্ত নেই। স্কুলে কোনও শৌচাগারও নেই। স্কুলে বসেনি পানীয় জলের কল। তাই বাধ্য হয়ে পুকুরের দূষিত জলই খেতে হচ্ছে পড়ুয়াদের। এমনকী পুকুরের নোংরা জলেই প্রতিদিন স্কুলের মিড ডে মিল রান্না হচ্ছে। অভিযোগ, ২০১৬ সাল থেকে একই অবস্থা চলছে। স্কুল কর্তৃপক্ষ, বিডিও থেকে শুরু করে জেলাশাসকের কাছে একাধিকবার দরবার করলেও কোনও সুরাহা হয়নি। অথচ স্কুলে পড়ুয়া সংখ্যা নেহাত কম নয়। দীর্ঘদিন ধরে এই অবস্থা চলার পর অবশেষে বাধ্য হয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন কয়েকজন পড়ুয়ার অভিভাবকেরা।
চন্দন কুমার হালদার-সহ আরও বেশ কয়েক জন পড়ুয়ার অভিভাবক হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন। বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানি ছিল হাইকোর্টে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চে। শুনানির সময় সরকারি আইনজীবী বলেন, ইতিমধ্যেই টেন্ডার ডাকা হয়েছে। জলের ব্যবস্থা করা হবে। পাশাপাশ স্কুলে যে দু’টি শৌচাগার রয়েছে সেগুলিও মেরামত করার ব্যবস্থা হচ্ছে।
আইনজীবীর বক্তব্য শুনে প্রধান বিচারপতি বলেন, দু’সপ্তাহের মধ্যে পরিশ্রুত পানীয় জলের ব্যবস্থা করতে হবে। তখন আর কিছুদিন সময় চেয়ে নেন সরকারি আইনজীবী। তাতেই রেগে যান প্রধান বিচারপতি। তিনি বলেন, “চাইলে আপনারা ম্যাজিকের মত ২৪ ঘণ্টায় জলের ব্যবস্থা করতে পারেন। আর সেখানে দু’সপ্তাহ সময় দেওয়া হচ্ছে। তাও বাড়তি সময় চাইছেন?” দু’সপ্তাহর পরে আদালতের নির্দেশ মতো সব ব্যবস্থা করে ছবি-সহ পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট আদালতে পেশের নির্দেশ দিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ।