ফাইল ছবি
শেষ আপডেট: 30 April 2025 13:12
দ্য ওয়াল ব্যুরো: আরজি কর কাণ্ডে (RG Kar Case) মূল অভিযুক্তই দোষী সাব্যস্ত হয়েছে। তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজাও দিয়েছে শিয়ালদহ আদালত। কিন্তু এখনও এই মামলায় বহু প্রশ্নের উত্তর অধরা। সেই প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই-এর (CBI) থেকে রিপোর্ট তলব করল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)।
সম্প্রতি আরজি করের ধর্ষণ এবং খুনের মামলায় শিয়ালদহ আদালতে তৃতীয় 'স্টেটাস রিপোর্ট' জমা দিয়েছিল সিবিআই। সূত্রের খবর, তাতে নতুন করে ১২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণের উল্লেখ করা হয়েছে এবং ২০০টি ভিডিও ক্লিপের উপরেও নজর রাখার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত এমন কিছু প্রশ্ন রয়ে গেছে, যার কোনও উত্তর সিবিআই দিতে পারেনি। এর আগে আদালতে তিন পাতার 'স্টেটাস রিপোর্ট' জমা দিয়েছিল সিবিআই। তদন্তকারীরা তখন জানিয়েছিলেন, নতুন ২৪ জনের বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে। হাসপাতালের আরও কিছু জায়গার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নতুন করে তিন জনের কল ডিটেলস দেখা হচ্ছে বলেও আগের রিপোর্টে জানানো হয়েছিল। কিন্তু মৃতার পরিবার প্রথম থেকেই এই তদন্তে খুশি হতে পারেনি।
এখন ঠিক কী কী প্রশ্ন উঠছে? প্রথমত, নির্যাতিতার উচ্চতা ছিল ৫ ফুট ১ ইঞ্চি। সিসিটিভি ফুটেজ অনুযায়ী ঘটনার সময় ছিল ৪টে ৩ মিনিট থেকে ৪টে ৩৮ মিনিট। এই সময়ের মধ্যে কি ওই আঘাতগুলি করা যায়? দ্বিতীয়ত, সেমিনার রুমের পাশের ঘরের দেওয়াল কেন ভাঙ্গা হয়েছিল, কী তার উদ্দেশ্য ছিল, কার নির্দেশে হয়েছিল, তা জানা হয়নি। হাইকোর্ট সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার পরই তড়িঘড়ি ভাঙার কাজ শুরু হয়েছিল। কী ছিল আসল উদ্দেশ্য?
তৃতীয়ত, করিডর এরিয়াতে প্রথম যে রুম ভাঙা হয়েছিল সেখানে দুটি দরজাও ভাঙা ছিল। নিম্ন আদালতের রায় সেটি উল্লেখ রয়েছে। একজন ব্যক্তির ভেতরে প্রবেশ করা ও বেরিয়ে যাওয়া কারও নজরে এল না? চতুর্থত এবং হয়তো সবচেয়ে বড় প্রশ্ন, একজনের পক্ষে কি এই কাজ করা সম্ভব? নির্যাতিতা কি বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেনি? সিবিআই চার্জশিটে বলা হয়েছে, অভিযুক্ত মদ্যপ অবস্থায় ছিল। সেক্ষেত্রে কীভাবে সে এমন কাজ ওইটুকু সময়ে একা করতে পারে?
কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতির বক্তব্য, নিম্ন আদালতে বিচার চলেছে, এটা অস্বীকার করা যায় না। ট্রায়াল কোর্টে চার্জ ফ্রেম হয়েছে। একজনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। চার্জ গঠনের সময় ভাষা কী ছিল তা জানা নেই। তাই পুনরায় তদন্তের জন্য তথ্য দরকার। সে ক্ষেত্রেই সিবিআই-এর থেকে রিপোর্ট তলব করেছে রাজ্যের উচ্চ আদালত। মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ১৬ মে।
আরজি কর-কাণ্ডে সিবিআইয়ের তদন্ত নিয়ে একেবারে প্রথম থেকেই অসন্তোষ প্রকাশ করে আসছিল নির্যাতিতার পরিবার। এই মামলায় প্রথম যে চার্জশিট সিবিআই দেয়, তাতে একমাত্র অভিযুক্ত হিসাবে সঞ্জয় রায়কেই চিহ্নিত করা হয়েছিল।
সেই চার্জশিট অনুযায়ী বিচারপ্রক্রিয়া এগোয় এবং কলকাতা পুলিশের ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ারকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। তাঁকে আজীবন কারাবাসের সাজা দেওয়া হয়। নির্যাতিতার পরিবারের দাবি, এই ঘটনায় একা সঞ্জয় জড়িত নন। বাকি অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেফতারির দাবি জানান তাঁরা।