শেষ আপডেট: 9th August 2024 00:12
দ্য ওয়াল ব্যুরো: নিয়ম অনুযায়ী, যেকোনও রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বা এই ধরনের পদ মর্যাদার ব্যক্তিরা ক্ষমতা থেকে চলে যাওয়ার পরও চিকিৎসা-সহ নানাবিধ ক্ষেত্রে সরকারি সুবিধা পেয়ে থাকেন। কিন্তু ২০১১ সালে বাংলার তখত থেকে সরে যাওয়ার পর কখনও সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে যেতেন না বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য।
এমনকী অসুস্থ বুদ্ধবাবুকে মাঝে এসএসকেএমের চিকিৎসা গ্রহণের আর্জি জানিয়েছিলেন স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও বুদ্ধবাবু তা নেননি বুদ্ধবাবু বলে পরিবার ও দলীয় সূত্রের খবর।
বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে বৃহস্পতিবার পূর্ণ দিবস সরকারি ছুটি দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি তিনি এও জানান, পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় গান স্যালুট দেওয়া হবে তাঁকে। তবে এই গান স্যালুট নেওয়া হবে না বলেই জানা যাচ্ছে। এমনকী প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মারা গেলে তাঁর দেহ সরকারের প্রধান সচিবালয়ে অর্থাৎ এই মুহূর্তে যেটি নবান্নে রয়েছে (আগে রাইটার্স ছিল), সেখানেও নিয়ে যাওয়া হবে না বলে জানা যাচ্ছে।
এমনকী সিপিএমের তরফে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর শেষযাত্রার যে সূচী প্রথমে নির্ধারিত করা হয়েছিল, সেখানে নাম ছিল না পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভারও। পরে বিধানসভায় নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কারণ, বিধানসভা সরাসরি সরকারের অংশ নয়, সেটি রাজ্যের আইনসভা।
সরকারি কাজের বাইরে বুদ্ধবাবুর প্রিয় জায়গা ছিল নন্দন। সেখানেও মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে না বলে পরিবার সূত্রে জানা যাচ্ছে। মৃত্যুর পরও যেন সরকারের অধীনে তাঁর দেহ না রাখা হয় বা সরকারি কোনও সুবিধা না নেওয়া হয়, বুদ্ধবাবু নিজেই এ ব্যাপারে স্ত্রী এবং পার্টির শীর্ষ নেতৃত্বকে আগে থেকে জানিয়ে রেখেছিলেন বলে মনে করা হচ্ছে। তাই সরকারের আবেদনের পরও গান স্যালুট না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বু্দ্ধবাবুর পরিবার ও পার্টি নেতৃত্ব।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার কিছু পরে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের পাম অ্যাভিনিউয়ের বাড়িতে তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে আসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর পরিবারের সঙ্গে দেখা করার পর বাইরে বেরিয়ে এসে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এ ব্যাপারে মমতা বলেন, বুদ্ধবাবুর দল এবং তাঁর পরিবার যেমনভাবে চাইবে তেমনভাবেই তাঁকে সম্মান জানানো হবে। রাজ্য পুলিশ সবরকম সহযোগিতা করবে। চাইলে তাঁর মরদেহ নন্দনেও রাখা যেতে পারে, বিধানসভাতেও আনা যেতে পারে।
বৃহস্পতিবার তাঁর দেহ শায়িত রয়েছে পিস ওয়ার্ল্ডে। জানা যাাচ্ছে, আগামীকাল সকাল সাড়ে ১০টায় সেখান থেকে শেষযাত্রা শুরু হবে রাজ্য বিধানসভার উদ্দেশে। সকাল ১১টা থেকে সাড়ে ১১টা অর্থাৎ ৩০ মিনিট বিধানসভায় মরদেহ থাকবে। বেলা ১২টা নাগাদ সিপিএমের রাজ্য দফতর আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে নিয়ে যাওয়া হবে বুদ্ধবাবুর দেহ। আলিমুদ্দিনে দুপুর ৩টে পর্যন্ত বুদ্ধবাবুর মরদেহ শায়িত থাকবে।
এরপর সেখান থেকে দেহ নিয়ে যাওয়া হবে সিপিএমের ছাত্র ও যুব সংগঠনের রাজ্য দফতর দীনেশ মজুমদার ভবনে। সেখান থেকে বিকেল পৌনে ৪টে নাগাদ শিয়ালদহের এনআরএস হাসপাতালে দেহ নিয়ে যাওয়া হবে। ভবিষ্যতের চিকিৎসার গবেষণার কাজের জন্য আগে থেকেই এনআরএস মেডিক্যালে দেহদানের অঙ্গীকার করে রেখেছিলেন বুদ্ধবাবু।