প্রায় ২৩ দিন পাক সেনার হাতে বন্দি ছিলেন পূর্ণম। ইতিমধ্যে জানা গেছে, তাঁকে শারীরিকভাবে অত্যাচার না করা হলেও প্রবল মানসিক অত্যাচার করা হয়েছিল।
পূর্ণম কুমার সাউ
শেষ আপডেট: 23 May 2025 13:53
দ্য ওয়াল ব্যুরো: দেশে ফিরেছিলেন প্রায় ১০ দিন আগে। শুক্রবার বাংলায় নিজের জেলা, নিজের বাড়িতে ফিরলেন পাকিস্তান সেনার হাতে বন্দি থাকা বিএসএফ জওয়ান (BSF Jawan) পূর্ণম কুমার সাউ (Purnam Kumar Shaw)। পাকিস্তানের হেফাজত থেকে মুক্তি পেয়ে দেশে ফেরার পর তিনি এতদিন ছিলেন পাঠানকোটের কর্মস্থলে। শুক্রবার রিষড়ার (Rishra) বাড়িতে ফিরলেন।
প্রায় ২৩ দিন পাক সেনার (Pak Rangers) হাতে বন্দি ছিলেন পূর্ণম। ইতিমধ্যে জানা গেছে, তাঁকে শারীরিকভাবে অত্যাচার না করা হলেও প্রবল মানসিক অত্যাচার করা হয়েছিল। ঘুমোতে দেওয়া হয়নি, সারাক্ষণ চোখ বেঁধে ফেলে রাখা হয়েছিল। এমনকী ২০-২২ দিন ব্রাশ পর্যন্ত করতে দেয়নি পাক সেনা। সেইসব অত্যাচারকে কার্যত বুড়ো আঙুল দেখিয়েই লড়ে যাচ্ছিলেন পূর্ণম। তাঁর থেকে ভারতের নানা তথ্যও চেয়েছিল পাকিস্তান। কিন্তু কিছুই বের করতে পারেনি। সেই পূর্ণম দেশে ফিরে আবারও বুঝিয়ে দিলেন, কেন ভারতীয় জওয়ানদের (Indian Army) সঙ্গে টক্কর দেওয়া যায় না।
'জওয়ানদের কখনও ভয় পেতে নেই। ভারত আগে ছিল, আগেই থাকবে।' বাড়ির পথে যেতে যেতে গাড়ি ঘিরে থাকা সংবাদমাধ্যমে এমনই মন্তব্য করেছেন বিএসএফ জওয়ান পিকে। তাঁর ট্রেন যখন হাওড়া স্টেশন নামে তখন থেকে তাঁকে ঘিরে বাঁধনছাড়া উচ্ছ্বাস তৈরি হয়েছিল। সাধারণ মানুষ তাঁর এক ঝলক দেখার অপেক্ষায় ছিলেন। ওভাবেই হাওড়া থেকে হুগলির রিষড়ায় আসেন পূর্ণম। সবসময়ই গাড়ি ঘিরে বা আগে-পিছে ছিল মানুষের ঢল।
লিলুয়ায় একটি দোকানের সামনে দাঁড়িয়েছিল পূর্ণমদের গাড়ি। সেখানে মিষ্টিমুখ করার পরে বিএসএফ কনস্টেবল বলেন, ''মনে হচ্ছে দ্বিতীয় জন্ম হল। সকলের আশীর্বাদ ছিল বলেই আমি দেশে ফিরতে পেরেছিল। সকলকে ধন্যবাদ।'' পরে গাড়িতে ওঠার পর সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, ''এতদিন বাদে মা-বাবার কাছে ফিরতে পেরে দারুণ লাগছে। আজ ভীষণ খুশি আমি।'' পাশাপাশি খুব দ্রুত কাজে ফেরার আশ্বাসও তিনি দিয়েছেন। পূর্ণমের স্পষ্ট কথা, আগেও তিনি ভয় পাননি, পরেও পাবেন না।
পূর্ণমের স্ত্রী রজনী সাউও স্বাভাবিকভাবে মারাত্মক খুশি। তিনি বলেন, "খুব ভালো লাগছে এতদিন পর বাড়ি ফিরছে। কিন্তু ওর কাছে ফোন না থাকায় কথা বলতে পারিনি। জানতে পারিনি ঠিক কখন ফিরছে। বাড়ি ফিরলে ওর প্রিয় লুচি তরকারি এবং দই মিষ্টির আয়োজন হবে। কেক কাটা হবে। তবে কোনও আমিষ হবে না। মাংস হবে রবিবার।"
প্রসঙ্গত, গত বাইশে এপ্রিল কাশ্মীরের পহেলগাঁও বৈসরন ভ্যালিতে জঙ্গিদের গণহত্যার শিকার হয়েছিলেন ২৬ জন পর্যটক। ঠিক তারপর দিন পাঞ্জাবের ফিরোজপুরে ভারত পাক সীমান্তে ডিউটি করার সময় অসাবধানতাবশত পাক ভূখণ্ডে ঢুকে পড়েন ২৪ নম্বর ব্যাটেলিয়ানের বিএসএফ কনস্টেবল পূর্ণমকুমার সাউ। গাছের তলায় বসে বিশ্রাম নেওয়ার সময় পাক রেঞ্জার্সের হাতে বন্দি হন। প্রায় ২৩ দিনের মাথায় ভারতের চাপে তাঁকে ছাড়তে বাধ্য হয় পাকিস্তান।