শেষ আপডেট: 4th May 2024 14:03
দ্য ওয়াল ব্যুরো: দেওয়াল লিখন স্পষ্টই ছিল। হলও তাই। আপাতত সব শোধবোধ করে শান্ত হলেন তৃণমূলের কুণাল ঘোষ।
মাস খানেক আগেও দেখা গিয়েছে, কুণালের বিদ্রোহের মেয়াদ ছিল আড়াই দিন। এবারও আড়াই দিনের মধ্যেই সম্ভবত একটা রফাসূত্র বেরোল। যার পরিণামে শনিবাসরীয় দুপুরে প্রখর রোদে দাঁড়িয়ে কুণালকে গাইতে শোনা গেল, আহা কী আনন্দ আকাশে বাতাসে!
এদিন বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসুর গাড়িতে করে দলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও ব্রায়েনের বাড়িতে পৌঁছন কুণাল। ব্যাপারটা যে আলটপকা, হঠাৎ করে হয়েছে তা বলা যাবে না। বরং যেভাবে কুণালকে তাঁর গাড়িতে তুলে নিয়ে ডেরেকের বাড়িতে পৌঁছেছেন ব্রাত্য তার মধ্যেই একটা প্রস্তুতি বা ব্যবস্থাপনার ছবি দেখা যায়।
এখানে মনে করিয়ে দেওয়া দরকার, কুণালকে দলের সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে সরানোর ব্যাপারে দুদিন আগে ঘোষণাটি করেছিলেন ডেরেক। পরে আবার ডেরেককে পিওন ইত্যাদি বলেছিলেন কুণাল। মোদ্দা কথায়, খাটো করার চেষ্টা করেছিলেন। এই পরিস্থিতিতে ডেরেকের বাড়িতে কুণালকে নিয়ে যাওয়ার অর্থই হল মিটমাটের চেষ্টা করা।
এ ব্যাপারে ডেরেককে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ধুর ও কিছু না। তবে সূত্রের খবর, কুণাল ও ব্রাত্য তাঁর বাড়িতে পৌঁছতে ডেরেক তাঁকে বলেন, বস তা বলে তুমি পিওন বলবে। দিস ইজ নট ডান। আবার কুণালও তাঁকে বলেন, ওসব ছাড়ো তুমি। চা খাওয়াও।
এখন কৌতূহলের বিষয় হল, কোন শর্তে রফা হয়েছে? কুণালকে কি তাঁর পদ ফিরিয়ে দেওয়া হবে?
ডেরেকের বাড়ি থেকে বেরিয়ে এ প্রশ্নের জবাবে কুণাল বলেন, কিছু তো কথা হয়েছেই। দেখতে পাবেন কী হল? কুণাল এও বলেন, আমি তৃণমূলে ছিলাম, তৃণমূলেই আছি।
আর ব্রাত্য বলেন, ভিতরে কী আলোচনা হয়েছে সেটা দলের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। তা নিয়ে তো বাইরে বলতে পারিনা।
কালীঘাটের ঘনিষ্ঠ সূত্রে বলা হচ্ছে, কুণালের অভিমানের অনেক কারণ রয়েছে। বাংলায় তৃণমূল ক্ষমতায় আসার আগে থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইনার সার্কেলে ছিলেন কুণাল। কিন্তু সে ঘটনা এখন অতীত হয়ে গেছে। ব্রিগেডের প্রথম মঞ্চেও বসার জায়গা দেওয়া হয়নি কুণালকে। লোকসভা ভোটের প্রার্থী বাছাই নিয়ে কী আলোচনা চলছে, তাও কুণালের গোচরে ছিল না। দল কী অবস্থান নিতে চলেছে, দলীয় কৌশল কী হতে চলেছে, এ সব ব্যাপারে কোনও আলোচনাতেও অংশীদার ছিলেন না তিনি। সম্ভবত সেই কারণে শুক্রবার আইপ্যাক ও সেই সংস্থার কর্ণধার প্রতীক জৈন সম্পর্কেও টিপ্পনি করেন কুণাল।
সূত্রের মতে, সঙ্গত কারণেই আপাতত কুণালকে প্রশমিত করার চেষ্টা করলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কারণ, কুণাল খোলাখুলি যে সব কথা বলতে শুরু করেছিলেন, তাতে দলের অস্বস্তি হচ্ছিল। তাঁর দলীয় পদ আজকালের মধ্যে ফিরিয়ে দেওয়া হবে না তা পুরোপরি স্পষ্ট নয়। তবে ফিরিয়ে দিলেও তাতে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। এমনকি কাল পরশুর মধ্যে তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠক করানোও হতে পারে বলে খবর।