মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
শেষ আপডেট: 17th September 2024 02:14
দ্য ওয়াল ব্যুরো: দেওয়াল লিখনটা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল সোমবার সন্ধেতেই। কালীঘাটে আন্দোলরত জুনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দীর্ঘ বৈঠক এবং তারও পরে ঘণ্টা দুয়েকের বেশি সময় ধরে বৈঠকের বিস্তারিত কার্যবিবরণী লেখার পর অবশেষে অচলাবস্থা কাটার ইঙ্গিত সামনে এল।
ঘড়ির কাঁটায় রাত ১১টা ৫১ মিনিট। জুনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে বৈঠক শেষে কালীঘাটে বাড়ির বাইরে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, "উভয়পক্ষই খুশি। বিস্তারিত আলোচনা হল। ওরা ওদের বক্তব্য রেখেছে, আমরাও আমাদের বক্তব্য রেখেছি। ওদের পাঁচটা দাবির একটা দাবি বিচারাধীন, সেটা সিবিআই দেখছে। বাকি চারটের মধ্যে তিনটে আমরা মেনে নিয়েছি। আমি ওদের কাজে ফেরার অনুরোধও করেছি। "
রাত পোহালেই সুপ্রিম কোর্টে আরজি কর মামলার শুনানি হবে। তার আগে অচলাবস্থা কাটাতে মুখ্যমন্ত্রীর পাশাাপাশি আন্দোলতরত জুনিয়র শিক্ষকদের একটা বড় অংশ যে আগ্রহী তা ক্রমেই স্পষ্ট হচ্ছিল।
জুনিয়র চিকিৎসকদের পাঁচ দফা দাবির মধ্যে অন্যতম দাবি ছিল কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলকে সরিয়ে দিতে হবে। একই সঙ্গে স্বাস্থ্যের তিন শীর্ষ কর্তাকে সরানোর দাবি তুলেছিল তাঁরা। বৈঠক শেষে মমতা বলেন, "আমরা ছাত্রদের কথাকে গুরুত্ব দিয়ে স্বাস্থ্য অধিকর্তা এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তাকে সরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।"
মুখ্যমন্ত্রী এও জানান, "আগামীকাল মঙ্গলবার বিকেল ৪টের পর কলকাতা পুলিশে বদল আনা হবে। নতুন সিপিকে দায়িত্ব দেবেন বিনীত (বর্তমান সিপি)। কোর্টের শুনানির পর পুলিশে আরও কিছু রদবদলের কথা মুখ্যসচিব জানিয়ে দেবেন।' মমতা এও বলেন, "বিনীত যেখানে কাজ করতে চেয়েছে ওকে সেখানেই দায়িত্ব দিয়েছি।"
আরজি করের ঘটনার পর ইতিমধ্যে রাজ্যের প্রতিটি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সুরক্ষা এবং পরিকাঠামোর উন্নয়নে ইতিমধ্যে রাজ্য উদ্যোগী হয়েছে। এদিনের বৈঠক থেকে এ ব্যাপারে মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটিও গঠন করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
এর আগে গত শনিবার আচমকাই স্বাস্থ্যভবনে জুনিয়র চিকিৎসকদের ধর্না মঞ্চে পৌঁছে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে দাঁড়িয়েই তিনি বলেছিলেন, "মুখ্যমন্ত্রী নই, বড়দিদি হয়ে এসেছি। একজন সমব্যাথী হিসেবেই কথা বলতে এসেছি।" আলোচনার মাধ্যমে দাবি মেটানোর আশ্বাসও দেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, এরপরই বরফ গলতে শুরু করে।
নবান্ন সূত্রের খবর, সোমবারের বৈঠকের আগে আন্দোলনকারী ডাক্তারদের সঙ্গে একটু ‘ট্র্যাক টু’ আলোচনার দরজা খোলা হয়েছিল। সূত্রের দাবি, সেই ব্যাক চ্যানেল আলোচনায় জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে আগেই সমাধানের গতিপথ স্থির হয়ে যায়। সেই মোতাবেক কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতৈ বৈঠক বসেছিল।
অবশেষে জট কাটার ইঙ্গিত। অর্থাৎ শীঘ্রই কাজে ফিরতে পারেন জুনিয়র চিকিৎসকরা।