শেষ আপডেট: 6 January 2024 07:24
দ্য ওয়াল ব্যুরো, উত্তর ২৪ পরগনা: সীমান্ত এলাকা। দিনভর হাজারো ট্রাকের আনাগোনা। পণ্য বোঝাই হয়ে কখনও বাংলাদেশ যাচ্ছে ট্রাক। কখনও ওপার থেকে মাল নিয়ে আসছে এ পারে। এই সমস্ত ট্রাকের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তা থাকে মালিক ও চালক উভয়পক্ষেরই। কারণ সীমান্ত এলাকায় সর্বদাই তৎপর থাকে দুষ্কৃতীরা। অসাবধান হলেই ট্রাক থেকে মাল চুরি যাওয়ার সম্ভাবনা। অনেকসময় মাদক পাচারেরও মাধ্যম হয়ে ওঠে এই ট্রাকগুলি। তাই সব ভেবেই নিরাপত্তা যাতে নিশ্চিত থাকে সেদিকটা খেয়াল রাখতেই হয়। সেই খেয়াল রাখতেন বনগাঁ পুরসভার প্রাক্তন পুরপ্রধান শংকর আঢ্য।
ছোটখাটো ব্যবসা দিয়েই শুরু হয়েছিল। পরে এলাকার মানুষের পড়ে থাকা জমি নিয়ে ট্রাকের পার্কিং লট করে ফেলতেন। সেখানে গাড়ি রেখে কিছুটা জিরিয়ে নেওয়ার সুযোগ মিলত চালকদের। শঙ্করের লোকজনই নিরাপত্তা দিত ট্রাকগুলিকে। এভাবেই ধীরে ধীরে বনগাঁয় প্রভাব বাড়তে শুরু করে শঙ্করের। টাকার হাত ধরেই আসে ক্ষমতা। রাজনীতিতে বড় হওয়ার স্বপ্ন ততদিনে দেখতে শুরু করে দিয়েছেন শঙ্কর। বাম আমলেও গুরু মেনেছিলেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককেই। বালুর হাত ধরেই রাজনীতিতে এসেছিলেন শঙ্কর।
২০১১ সালে রাজ্যে পালাবদল। বামেদের হারিয়ে ক্ষমতায় আসে তৃণমূল। ওই বছরই হাবরা বিধানসভা থেকে ভোটে জিতে বিধায়ক হন জ্যোতিপ্রিয়। তারপরে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি শঙ্করকেও। ব্যবসা যেমন ফুলেফেঁপে ওঠে, তেমনই বালুর সহচর হয়ে রাজনীতিতেও মোক্ষলাভ। ২০১৫ সালে পুরভোটে দাঁড়িয়ে কাউন্সিলর। মাথায় বালুর হাত থাকায় বনগাঁ পুরসভার পুরপ্রধান হতেও অসুবিধা হয়নি। একটা সময় জেলা রাজনীতিতে ক্ষমতার শীর্ষে পৌঁছে যান শঙ্কর। বনগাঁর বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, সীমান্ত এলাকায় এমন মেশিনারি তিনি তৈরি করে ফেলেছিলেন যে তাঁর কথা ছাড়া একটা মাছিও গলত না। এভাবেই নাম জড়ায় রেশন দুর্নীতিতে। ইডির আধিকারিকরা জানান, জ্যোতিপ্রিয়ই জেরায় নাম বলেছেন শঙ্করের।
শুক্রবার সকাল সাড়ে সাতটা থেকে রাত সাড়ে বারোটা পর্যন্ত দীর্ঘ ১৭ ঘণ্টার ম্যারাথন জেরার পর গভার রাতে বনগাঁ পৌরসভার প্রাক্তন পৌর প্রধান শংকর আঢ্যকে গ্রেফতার করে ইডি। শারীরিক পরীক্ষার জন্য শনিবার তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় জোকা ইএসআই হাসপাতালে।