শেষ আপডেট: 23rd January 2024 14:03
দ্য ওয়াল ব্যুরো, উত্তর ২৪ পরগনা: স্বপ্ন দেখে কেটে গেছে জীবনের সিংহভাগ। টানা ৪০ বছর ধরে শুধু লড়াই আর লড়াই। ছেলে-মেয়ে-সংসার নিয়ে হিমশিম খেতে খেতে কখন ৬৪ বছর বয়স হয়েছে টেরই পাননি। বাস ড্রাইভারি করতেন একটা সময়। কিন্তু বয়স হওয়ায় আর লাইসেন্স রিনিউ হয়নি। এখন কাঁপা হাতে টোটো চালান বনগাঁর চাঁপাবেড়িয়ার বাসিন্দা বিমল বিশ্বাস।
দিন আনি দিন খাই সংসারটাকে লালনের জন্য উদয়াস্ত পরিশ্রম করতেন। আর মাঝেমধ্যেই লটারির টিকিট কাটতেন। স্বপ্ন দেখতেন ঠিক একদিন কিছু না কিছু পরিবর্তন আসবে। সেই পরিবর্তনটাই এল এত বছর পর। লটারিতে একলপ্তে কোটি টাকা পাওয়ার খবরে প্রথমে নিজের কানকেই বিশ্বাস করতে পারেননি। কেটেকুটে ৭০ লক্ষ টাকার মতো হাতে পাবেন। সেই টাকাকে কীভাবে রাখবেন সেটাই এখন বিমলবাবুর ভাবনার বিষয়। জানালেন, টাকার জন্য এতদিন চোখের চিকিৎসা করাতে পারেননি। এবার চোখটা আগে সারাবেন। তারপর মাথার উপর একটা পাকা ছাদের ব্যবস্থা করতে হবে। বাকি টাকা রেখে দেবেন ছেলে-মেয়ের ভবিষ্যতের জন্য।
যে দিন গোটা দেশ অযোধ্যার রামমন্দিরে রামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠা ঘিরে উদ্বেল, ঠিক সেদিনই আচমকা হাজার ওয়াটের আলো জ্বলে ওঠে বিমলবাবুর টিনের ছাদ দেওয়া ছোট্ট ঘরে। লটারিতে কোটি টাকার জেতার খবরটা সয়ে গেছে এখন। বিমলবাবু বললেন, “কীভাবে সামান্য আয়ে ছেলেমেয়েকে বড় করেছি, তাদের লেখাপড়া শিখিয়েছি, সে শুধু ইশ্বরই জানেন। নিজের চিকিৎসা করাতে পারিনি। শরীর এমন ভেঙেছে টোটোও চালাতে পারি না। তবুও স্বপ্ন দেখা ছাড়িনি। মাঝেমধ্যেই লটারির টিকিট কিনতাম। জীবনের শেষে এসে পুরস্কার পেলাম।”
বিমলবাবুর ছেলে সুজয় বলেন, “সংসারের থেকে টাকা বাঁচিয়ে বাবা লটারির টিকিট কিনতেন বলে অনেকসময়েই মা রেগে যেতেন। বাবাকে বকাবকি করতেন। শেষপর্যন্ত বাবাই জিতে গেলেন। এখন বাবার চিকিৎসাটা আগে করাতে হবে। তারপর অন্য কথা।” সুজয় পেশায় কম্পিউটার মেকানিক। ছেলের সঙ্গে কথা বলেই এখন ভবিষ্যত ঠিক করবেন লটারিতে কোটি টাকা জেতা সুবলবাবু।