শেষ আপডেট: 10 November 2023 07:28
দ্য ওয়াল ব্যুরো: সময় থাকতে পুলিশ শুধরে না গেলে পিটিয়ে সিধে করা হবে! কর্মীদের উদ্দেশে প্রকাশ্য মঞ্চ থেকে এমনই হুঁশিয়ারি বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের।
বৃহস্পতিবার সন্ধেয় দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুরের দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছিলেন সুকান্ত। সেখানেই প্রকাশ্য মঞ্চ থেকে বিজেপির রাজ্য সভাপতির নিদান, “দিন পরিবর্তন হচ্ছে। সময় থাকতে পুলিশ যদি সিধে না হয়, আমরা পিটিয়ে সিধে করব। বাংলার মানুষ সেই দিকে এগোচ্ছে।”
বছর ঘুরলেই লোকসভা ভোট। তার আগে বিজেপির রাজ্য সভা্পতির এমন মন্তব্য যথেষ্ঠ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। সাম্প্রতিক অতীতে পুলিশকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। মেদিনীপুরে দলের সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষকে পাশে নিয়ে হুমকি দিয়েছিলেন জেলার এক নেতাও। এবার সুকান্তের কণ্ঠে সরাসরি পুলিশকে পেটানোর নিদান শুনে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, ভোট যত এগিয়ে আসবে এই ধরনের মন্তব্যও ততই বাড়বে।
২০১৩ সালে পঞ্চায়েত ভোটের সময় পুলিশকে বোমা মারার দাওয়াই দিয়েছিলেন তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। গরু পাচার কাণ্ডে তিহাড়ে জেলবন্দি অনুব্রত। বিজেপির রাজ্য সভাপতির হুঁশিয়ারির সঙ্গে অনেকে কেষ্ট মণ্ডলের মিলও খুঁজছেন।
গত মঙ্গলবার পূর্ব বর্ধমানের মাধবডিহি গ্রামের কামারহাটি গ্রামে পুকুরে মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে পঞ্চায়েত মন্ত্রীর বাড়িতে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছিল গ্রামবাসীদের একাংশের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবারের সভা থেকে ওই প্রসঙ্গও টেনে এনেছেন সুকান্ত। বিজেপির রাজ্য সভাপতি বলেন, “দু'দিন আগে মন্ত্রীর বাড়িতে মানুষ ঢিল ছুড়েছে। পুকুরে মাছ চুরি করতে এসে ধরা পড়েছিল। গ্রামের লোক বাড়ি ঘেরাও করে, ভাঙচুর চালায়। সময় এসেছে, মানুষ জাগছে।”
মাস খানেক আগে খেজুরি থানায় ঢুকে পুলিশকে হুঙ্কার দেওয়ার অভিযোগ ওঠে বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে। ভাইরাল হয় ভিডিও। যাতে শুভেন্দুকে বলতে শোনা যায়, 'পুলিশ যা করেছে, তার ফল ভুগতে হবে, সব কিছু রেকর্ড থাকবে। সরকার বিজেপির হবে, আমাদের অধীনে কাজ করতে হবে।'
এরও আগে গত সেপ্টেম্বরে মেদিনীপুরে দলের সাংসদ দিলীপ ঘোষকে পাশে নিয়ে বিজেপি মুখপাত্র অরূপ দাস পুলিশকে হুঙ্কার দিয়ে বলেছিলেন, “বিধানসভা ভোটের অত্যাচারের লোকসভা ভোটে ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে বুঝে নেওয়া হবে। ভোট লুঠ করতে এলে পুলিশ থেকে তৃণমূল, মেরে ঠ্যাং ভেঙে দেওয়া হবে। যারা ভোট লুঠ করতে আসবে তাদের বুকে গুলি করে শ্মশানে পাঠানো হবে।”
যদিও বিজেপির এমন হুঙ্কারকে পাত্তা দিতে নারাজ শাসকদল। এ ব্যাপারে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণা্ল ঘোষ বলেন, “সিবিআই, ইডির মতো কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে কাজে লাগিয়ে বিজেপি ক্ষমতায় টিকে রয়েছে। বাংলায় ওদের কোনও সমর্থন নেই, তাই এসব হুমকি দিচ্ছে। বাংলার মানুষ এসবকে পরোয়া করে না। লোকসভার ফলেই সেটা বুঝিয়ে দেবেন তাঁরা।”