শেষ আপডেট: 3 March 2024 19:56
দ্য ওয়াল ব্যুরো: রাজনীতিতে আসার কথা জানিয়ে দিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এই খবর প্রকাশ্যে আসার পর বাংলার রাজনৈতিক মহলে স্বাভাবিকভাবেই জল্পনা তৈরি হয়েছে। তিনি কোন দলে যোগ দেবেন তা নিয়ে এখনও পর্যন্ত ধোঁয়াশা রয়েছে। তবে একাধিক সূত্রের দাবি, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বিজেপিতে যোগ দিতে চলেছেন। এই ইস্যু নিয়ে রাজনৈতিক মহল থেকে প্রতিক্রিয়া এসেছে। মুখ খুলেছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের 'গুরু' বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য।
অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিজেপিতে যাওয়ার খবরে একেবারেই সন্তোষ প্রকাশ করেননি বর্ষীয়ান আইনজীবী তথা সিপিএম নেতা বিকাশ। বরং তাঁর বক্তব্য, তিনি মনে করেন না উনি (পড়ুন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়) বিজেপিতে যোগ দেবেন। সিপিএম নেতা বলছেন, ''বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করার কথা বলেছেন। তৃণমূল বা বিজেপিতে গেলে সেই লড়াই করা কোনও ভাবেই সম্ভব নয়। তার চেয়ে তিনি যদি নির্দল বা বামভাবাপন্ন দলের হয়ে রাজনীতির ময়দানে নামেন তাহলে তাঁর পাশে দাঁড়াব।''
রাজ্যের নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে বারংবার দৃষ্টান্তমূলক রায় দিয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। চাকরিপ্রার্থীদের একটা বড় অংশ তাঁকে 'ভগবান' হিসেবে দেখে। আর চাকরিপ্রার্থীদের আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্যের সঙ্গেও তাঁর সুসম্পর্ক আছে। বিশেষজ্ঞ মহল আবার বিকাশকেই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের 'গুরু' মনে করে। এক্ষেত্রে বিচারপতি তাঁর রাজনৈতিক যাত্রা শুরু করার বিষয়ে 'গুরু'র পরামর্শ নেবেন কিনা তা আলোচ্য বিষয়। যদিও বিকাশ বলছেন, নিজে থেকে ওঁর সঙ্গে কথা তিনি বলবেন না। বিচারপতি যদি মনে করেন তাঁর সঙ্গে কথা বলে লাভ হবে, তাহলে বলবেন।
সিপিএম নেতৃত্ব বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে ইতিমধ্যেই। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেছেন, "বেকার ছেলেমেয়েদের মনে নতুন করে আশা জাগিয়েছিলেন, অনেক নির্দেশও দিয়েছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। মানুষের প্রতি, দেশের প্রতি ওঁনার যে একটা দায়বদ্ধতা রয়েছে, তা ওনার কথাবার্তা এবংবিভিন্ন রায়ের মধ্যে প্রতিফলিত হতে দেখেছি।'' হাইকোর্ট পাড়ায় কান পাতলে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের বাম মনস্কতার কথা শোনা যায়। তবে সূত্রের খবর, আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার বারাসতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভায় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় আনুষ্ঠানিক ভাবে বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন।
বাংলায় শিক্ষাক্ষেত্রে নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার ক্ষেত্রে মাইলফলক কিছু রায় দিয়েছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। সেই কারণে বাংলায় সাধারণ মানুষের কাছে তাঁর যেমন আলাদা করে গ্রহণযোগ্যতা তৈরি হয়েছিল, ঠিক তেমনই শাসক দলের সমালোচনার শিকারও তিনি হয়েছিলেন। সেই সমালোচনা যে এখনও চলবে তা বোঝা গেছে তৃণমূল সাংসদ তথা আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথাতেই। তাঁর বক্তব্য, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের সব নির্দেশে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে। আজ সেটাই প্রমাণ হয়ে গেল। এখন এটাই দেখার, কোন রাজনৈতিক দলে যোগ দিয়ে কীভাবে এই সমালোচনা সামলান বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।