শেষ আপডেট: 14th February 2025 19:24
দ্য ওয়াল ব্যুরো: নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এখনও জেলবন্দি রয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। নাম জড়িয়েছিল শাসকদলের আরও একাধিক নেতা, বিধায়কের। এবার নিয়োগ মামলায় নাম জড়াল পদ্মশিবিরের দুই প্রভাবশালী নেতা-নেত্রীরও।
সিবিআই সূত্রের দাবি, নিয়োগ দুর্নীতির সুপারিশে যুক্ত ছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী, প্রাক্তন আইপিএস ভারতী ঘোষ এবং তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ মমতাবালা ঠাকুরও।
দিব্যেন্দু রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর ভাই। অতীতে তৃণমূলের তমলুকের সাংসদ ছিলেন দিব্যেন্দু। প্রাক্তন আইপিএস ভারতী ঘোষও অতীতে তৃণমূলে ছিলেন। তবে দিব্যেন্দু এবং ভারতী দু'জনেই বর্তমানে বিজেপিতে রয়েছেন। নিয়োগ দুর্নীতিতে এবার বিজেপির দুই প্রভাবশালীর নাম জড়িয়ে যাওয়ায় রাজনৈতিতক মহলে শোরগোল ছড়িয়েছে।
সূত্রের দাবি, সম্প্রতি নিয়োগ মামলায় সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে রিপোর্ট পেশ করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সেখানেই দিব্যেন্দু অধিকারী, ভারতী ঘোষ, মমতাবালা ঠাকুর-সহ একাধিক প্রভাবশালীর নামোল্লেখ করা হয়েছে। তদন্তকারী সংস্থা সূত্রের খবর, ২০টি করে চাকরির জন্য সুপারিশ করেছিলেন দিব্যেন্দু এবং মমতাবালা। আর চারটি নাম সুপারিশ করেছিলেন প্রাক্তন আইপিএস ভারতী ঘোষ।
সিবিআই কীভাবে জানতে পারল প্রভাবশালীদের নাম?
সূত্রের খবর, প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে নেমে গত বছর বেশ কয়েক দফায় শিক্ষা দফতরে তল্লাশি অভিযান চালিয়েছিলেন তদন্তকারীরা। সে সময় শিক্ষা দফতর থেকে কয়েক ট্রাঙ্ক নথি বাজেয়াপ্ত করেছিলেন তাঁরা। ওই নথির মধ্যে থেকেই শুভেন্দুর ভাই দিব্যেন্দু, ভারতী ঘোষ এবং মমতাবালা ঠাকুরের সুপারিশ পত্র পাওয়া গিয়েছে বলে তদন্তকারী সংস্থা সূত্রের দাবি।
জানা যাচ্ছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তরফে আদালতে যে নামের তালিকা জমা দেওয়া হয়েছে তাতে এছাড়াও বেশ কয়েকজন তৃণমূল নেতা এবং বিধায়কের নাম রয়েছে।
যদিও এ ব্যাপারে চক্রান্তের অভিযোগ তুলেছে মমতাবালা ঠাকুর এবং ভারতী ঘোষ। একটি সংবাদমাধ্যমকে ভারতী ঘোষ বলেন, "কারও চাকরির সুপারিশ করিনি। শুধু একজনের ক্ষেত্রে পরীক্ষা কেন্দ্র বদলের অনুরোধ করেছিলাম। এজন্য দুর্নীতির সঙ্গে নাম জড়ালে আইনি পথে মোকাবিলা করব।" মমতাবালার বক্তব্য, "পুরোটাই চক্রান্ত।" তবে এ ব্যাপারে যা বলার তা আদালত বা কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকেই জানাবেন বলে জানিয়েছেন দিব্যেন্দু।
২০২২ সালের ২৩ জুলাই গভীর রাতে রাজ্যের তৎকালীন শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। দু'দিন পর পার্থর বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের দুটি ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালিয়ে নগদ ৫১ কোটি-সহ প্রচুর সোনা এবং বিদেশি মুদ্রা বাজেয়াপ্ত করেছিলেন তদন্তকারীরা। সেই সূত্রে সামনে এসেছিল রাজ্যের শিক্ষাক্ষেত্রে নিয়োগ দুর্নীতির বিষয়টি। প্রসঙ্গত, এর আগে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পদে ছিলেন পার্থ। সে সময়ই নিয়োগ দুর্নীতি হয়েছিল বলে অভিযোগ। এবার কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার সূত্র ধরে সেই দুর্নীতিতে নাম জড়িয়ে গেল বিরোধী দলের দুই নেতা-নেত্রীরও।