শেষ আপডেট: 5th February 2025 18:23
দ্য ওয়াল ব্যুরো: আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি শুরু হবে রাজ্যের বাজেট অধিবেশন। তার আগে বুধবার শিল্প বাণিজ্য সম্মেলন থেকে বড় ঘোষণা করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী জানালেন, রাজ্যে তৈরি হচ্ছে ৬টি ইকোনমিক ফ্রেইট করিডর (6 Economic freight Corridor)। যা অন্তঃরাজ্য পণ্য পরিবহণে নতুন দিক খুলে দেবে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "আমরা ইতিমধ্যে চারটে ইকোনমিক ফ্রেইট করিডর গড়ে তুলছি। আরও দুটো করা হবে। এর মধ্যে চারটে করিডরই যাবে ডানকুনির ওপর দিয়ে। পানাগড় থেকে কোচবিহার, রঘুনাথপুর-তাজপুর, ডানকুনি-ঝাড়গ্রাম এবং ডানকুনি-কল্যাণী। দ্বিতীয় দফায় পুরুলিয়ার গুরুডি থেকে জোকা এবং খড়্গপুর-মোরগ্রাম করিডর গড়ে তোলা হবে।" এজন্য প্রাথমিকভাবে সাড়ে সাত হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগও করা হচ্ছে।
নবান্ন সূত্রের খবর, প্রথমে চারটি এবং পরে দুটি, দু'দফায় মোট ছ'টি করিডর গড়ে তোলা হবে। এর মধ্যে পানাগড় থেকে কোচবিহার ৬৩৯ কিলোমিটার সড়ক, রঘুনাথপুর থেকে ভায়া ডানকুনি হয়ে পূর্ব মেদিনীপুরের তাজপুর মোট ৩৯৮ কিমি, ডানকুনি-ঝাড়গ্রাম ১৬০ কিমি এবং ডানকুনি-কল্যাণী ৪৩ কিমি করিডর গড়ে তোলার প্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই শুরু করে দিয়েছে রাজ্য। দ্বিতীয় দফায় পুরুলিয়ার গুরুডি থেকে জোকা ২৩৪ কিমি এবং খড়্গপুর-মোরগ্রাম, ২৩০ কিমি করিডর গড়ে তোলা হবে।
এই করিডরগুলি গড়ে উঠলে কীভাবে উপকৃত হবে রাজ্য? বিশেষজ্ঞদের মতে, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তকেই নয়, রাজ্যের সঙ্গে ভিন রাজ্যের যোগাযোগ ব্যবস্থাকেও আরও সুগম করে তুলতে রীতিমতো পরিকল্পনা করেই এই ৬টি করিডর গড়ে তোলা হচ্ছে। যা আদতে রাজ্যের অর্থনীতিকেই চাঙ্গা করবে।
তাঁদের মতে, ৬টি করিডরের মধ্যে চারটি করিডরই ডানকুনিতে কেন্দ্র করে। কারণ, ডানকুনি থেকে পাঞ্জাবের লুধিয়ানা পর্যন্ত রয়েছে ভারতীয় রেলের ফ্রেট করিডর। আবার পানাগড় থেকে কোচবিহার, পুরুলিয়ার গুরুডি থেকে জোকা এবং খড়্গপুর-মোরগ্রাম এগুলি একাধিক গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় সড়ককে সংযুক্ত করবে। ফলে আরও উন্নত হবে যোগাযোগ ব্যবস্থা।
বস্তুত, যেকোনও ক্ষেত্রে বড় সমস্যা হল জমি অধিগ্রহণ। এদিন অবশ্য মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট করে দিয়েছেন, জমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে রাজ্যের খুব একটা সমস্যা হবে না। কারণ, এজন্য রয়েছে রাজ্যের নিজস্ব ল্যান্ড ব্যাঙ্ক এবং জমি নীতি। এছাড়াও যে এলাকার ওপর দিয়ে ওই করিডর গড়ে উঠবে, সেখানে ইতিমধ্যে বাজার দরের চেয়ে বেশি দরে সিংহভাগ জমি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়াও সম্পন্ন করা হয়েছে বলে নবান্ন সূত্রের দাবি। ফলে সংশ্লিষ্ট ৬টি ইকোনমিক ফ্রেইট করিডর গড়ে উঠলে অচিরেই অর্থনৈতিক দিক থেকে অনেক সমৃদ্ধ হয়ে উঠবে বাংলা। এদিন বণিকসভার সম্মেলন থেকে সেই আভাসই শুনিয়েছেন মমতা বন্দ্যেপাধ্যায়।
সম্ভবত সে কারণেই সম্মেলন মঞ্চে ৪৬টি দেশের দু'হাজার প্রতিনিধির সামনে মমমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আত্মবিশ্বাসী কণ্ঠে বলতে শোনা গিয়েছে, "বাংলায় আসুন, বাংলায় বিনিয়োগ করুন। বাংলা আপনার সুইট হোম। বাংলা আপনাকে খালি হাতে ফেরাবে না।"