এই তুফান ১০ দিন আগেই জেল থেকে ছাড়া পেয়েছিলেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, অপরাধ জগতের চেনা মুখ তুফান ফিরে এসেই ফের নিয়ন্ত্রণ নিতে চেয়েছিল এলাকায় চলা বালি খাদানের কারবারে।
ফাইল ছবি।
শেষ আপডেট: 5 July 2025 06:24
দ্য ওয়াল ব্যুরো: কাটোয়া বিস্ফোরণ কাণ্ডে (Katowa explosion case) চাঞ্চল্যকর তথ্য! শুক্রবার রাতে পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার (Katwa) রাজোয়া গ্রামে ভয়াবহ বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছে একজনের। গুরুতর জখম আর এক জন স্থানীয় বাসিন্দা তুফান চৌধুরী।
এই তুফান ১০ দিন আগেই জেল থেকে ছাড়া পেয়েছিলেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, অপরাধ জগতের চেনা মুখ তুফান ফিরে এসেই ফের নিয়ন্ত্রণ নিতে চেয়েছিল এলাকায় চলা বালি খাদানের কারবারে। আর তার জন্যই নাকি বীরভূমের নানুর থেকে কয়েকজন ‘কারিগর’ এনে রাজোয়ার এক পরিত্যক্ত বাড়িতে গোপনে বোমা বাঁধছিল। আচমকাই সেই বাড়িতে বিস্ফোরণ, ছিন্নভিন্ন হয়ে মৃত্যু বরকত সিং নামে এক যুবকের। বিস্ফোরণের জেরে তুফান নিজেও গুরুতর জখম।
গ্রামের পাশ দিয়েই বয়ে চলেছে অজয় ও ভাগীরথী নদী। নদীর বালি ঘিরেই সক্রিয় একাধিক চক্র। চুরপুনি ঘাটে সরকার অনুমোদিত বালি তোলার পাশাপাশি চলে অবৈধ কারবার। অভিযোগ, এই চক্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল তুফানের।
এই ঘটনায় সরাসরি পুলিশকে কাঠগড়ায় তুলেছেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, “এই বেআইনি বালি কারবারের মাথা জঙ্গল শেখ, যিনি তৃণমূলের প্রাক্তন কাউন্সিলর। আমি এই সমস্ত কাজকর্মের জন্য ওকে বহিষ্কার করি। তারপর থেকেই ও আমাকে নিশানা করছে। পার্টি অফিসে হামলার জন্য বাইরে থেকে লোক এনে বোমা বাঁধছিল তুফান, তারই মধ্যে এই বিস্ফোরণ।”
তাঁর আরও দাবি, “সুযোগ পেলে আমাকেও মেরে ফেলত তুফান। পুলিশ সব জানে।” অন্যদিকে, এই ঘটনায় তৃণমূলের দিকেই আঙুল তুলছে বিজেপি। স্থানীয় বিজেপি নেতাদের অভিযোগ, “অসামাজিক কার্যকলাপ বেড়ে গিয়েছে। পুলিশ সব জানে, কিন্তু চুপ করে থাকে। কারণ এই অপরাধের সঙ্গে তৃণমূলের একাংশের সরাসরি যোগ আছে।”
তবে এই অভিযোগের কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি জেলা পুলিশ। সূত্রের খবর, হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন তুফান। বেঁচে ফিরলে বিস্ফোরণ ও বারুদ মজুত নিয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
শুক্রবার রাতে আচমকা ভয়াবহ বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে কাটোয়ার রাজোয়া গ্রাম। বিস্ফোরণের তীব্রতায় আশপাশের বেশ কিছু বাড়ির দরজা-জানালা থরথর করে কাঁপতে থাকে। বাসিন্দারা প্রথমে ভাবেন, কোথাও বাজ পড়েছে। আতঙ্কিত মানুষজন দৌড়ে বেরিয়ে আসেন রাস্তায়। তার পরই নজরে আসে একটি বাড়ি থেকে কালো ধোঁয়া উঠছে। দেখা যায়, ছাদ উড়ে গিয়েছে, একাংশ দেওয়াল ধসে পড়েছে। ছিন্নভিন্ন অবস্থায় পড়ে রয়েছে একজনের দেহ।
শুক্রবার রাতের বিস্ফোরণের পর গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্কে আরও বেড়েছে। এলাকা দুষ্কৃতীমুক্ত করতে প্রশাসন কী পদক্ষেপ করে, সেটাই দেখার।