শেষ আপডেট: 20th February 2024 20:01
দ্য ওয়াল ব্যুরো: জন্মদিনকে কেন্দ্র করে আগাম শুভেচ্ছা জানিয়ে পোস্টার। আর তা নিয়েই মঙ্গলবার সকাল থেকে পারদ চড়ছে বারাকপুরের রাজনীতিতে।
২১ ফেব্রুয়ারি জন্ম পরিচালক তথা বারাকপুরের তৃণমূল বিধায়ক রাজ চক্রবর্তীর। রাজকে অভিনন্দন জানিয়ে এদিন সকাল থেকে বারাকপুরের একাধিক এলাকায় দেখা গিয়েছে পোস্টার। রাজের পাশাপাশি পোস্টারে ছবি রয়েছে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের।
জন্মদিনের অগ্রিম শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি পোস্টারে লেখা রয়েছে, 'এবার বারাকপুরে জনতার রাজ। সৌজন্যে ভাটপাড়া বিধানসভা নাগরিকবৃন্দ।'
এই লেখাকে ঘিরেই সকাল থেকে চাপানউতোর তৈরি হয়েছে তৃণমূলের অন্দরেই। দলের মধ্যেই কানাঘুষো আলোচনা শুরু হয়েছে, লোকসভায় তবে কি অর্জুন সিংকে টিকিট দেবে না দল? এব্যাপারে রাজ চক্রবর্তী বা অর্জুন সিংয়ের কোনও প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি।
তবে গত কয়েকমাস ধরে জগদ্দলের তৃণমূল বিধায়ক সোমনাথ শ্যাম বনাম বারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিংয়ের বিবাদ যেভাবে বারে বারে সামনে এসেছে, তাতে এমন সম্ভাবনাকে একেবারে উড়িয়েও দিচ্ছেন না রাজনৈতিক মহলের একাংশ। বরং এমন পোস্টারের নেপথ্যে সোমনাথের কারসাজি থাকতে পারে বলেও মনে করছেন অর্জুন ঘনিষ্ঠরা।
অর্জুন বনাম সোমনাথের দ্বন্দ্ব মেটাতে সম্প্রতি জেলা সফরে গিয়ে কোর কমিটি তৈরি করে দিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যেপাধ্যায়। কিন্তু সাংসদ বনাম বিধায়কের দ্বন্দ্ব যে মেটেনি, বরং সময়ের সঙ্গে তা যে আরও প্রকট হয়েছে, গত ৫ ফেব্রুয়ারি বিধানসভার বাইরে তার প্রমাণ মিলেছিল।
ওই দিন বিধানসভায় এসেছিলেন জগদ্দলের তৃণমূল বিধায়ক সোমনাথ শ্যাম। পরে বাইরে এসে অর্জুন সিং সম্পর্কে ফের একের পর এক অভিযোগ এনে সোমনাথ জানিয়েছিলেন, আসন্ন লোকসভা ভোটে অর্জুনকে যাতে টিকিট না দেওয়া হয়, সেজন্য দলের নেতৃত্বর কাছে আবেদন জানাবেন তিনি।
জগদ্দলের বিধায়ক বলেছিলেন, "খুনি বা খুনির পরিবারকে যেন দলে না রাখা হয়, তাদের যেন টিকিট না দেওয়া হয়. ব্যক্তিগতভাবে আমি দলের কাছে এই আবেদন রাখব।"
তার দু'সপ্তাহ পরেই এলাকায় 'এবার বারাকপুরে জনতার রাজ' লেখা পোস্টার। যাকে ঘিরে ইতিমধ্যে অঙ্ক কষা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।
প্রসঙ্গত, উনিশের লোকসভা ভোটে জোড়াফুলের টিকিট না পেয়ে পদ্মফুলে গিয়েছিলেন অর্জুন সিং। সেবার জিতেছিলেন। কিন্তু একুশের বিধানসভা ভোটে ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে ৭টি বিধানসভা আসনে ৬টিতেই হেরে যায় বিজেপি। এরপরই দল বদলে তৃণমূলে ফেরেন অর্জুন। তবে তাঁর ছেলে পবন সিং বিজেপির বিধায়ক হিসাবেই থেকে গিয়েছেন।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, তৃণমূলে ফিরলেও তখন থেকেই শাসকদলের একাংশ নেতার সঙ্গে অর্জুন সিংয়ের বনিবনা হচ্ছে না। যার জেরে মাঝে মধ্যেই সামনে আসছে দ্বন্দ্ব। অন্যদিকে এলাকায় বিধায়ক হিসেবে স্বচ্ছ ভাবমূর্তি রয়েছে পরিচালক রাজের। ফলে পোস্টারকে ঘিরে লোকসভার আগে নয়া সম্ভাবনা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে বারাকপুর জুড়ে।