জখম হনুমানকে নিয়ে আসা হয় হাসপাতালে
শেষ আপডেট: 7th March 2025 20:04
দ্য ওয়াল ব্যুরো, পূর্ব বর্ধমান: কাজ ফেলে দুর্ঘটনায় জখম হনুমানকে নিয়ে চিকিৎসার জন্য ছুটলেন রং মিস্ত্রি দুই যুবক। অবাক হলেন ভাতারের বাসিন্দারা। শুক্রবার সকালে পথদুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হয়ে রাস্তার পাশে কাতরাচ্ছিল একটি হনুমান। কাজে বেড়িয়ে অসহায় হনুমানটিকে দেখতে পেয়ে উদ্ধার করে পশু হাসপাতালে নিয়ে যান দুই রংমিস্ত্রী অদ্বৈত সাট এবং কার্তিক মাজি।
শুধুমাত্র পশু হাসপাতালে জখম হনুমানটিকে নিয়ে গিয়েই দায়িত্ব সারেননি অদ্বৈত এবং কার্তিক। হনুমানটিকে ছেড়ে তারা কাজে যাননি। চিকিৎসককে দেখানোর পর প্রায় চার ঘণ্টা ধরে আগলে রেখে সেবা শুশ্রূষা করেন অদ্বৈত এবং কার্তিক।
সকালে অদ্বৈত এবং কার্তিক বর্ধমান শহরে কাজে যাওয়ার জন্য বেড়িয়েছিলেন। বাইকে চড়ে ভাতার রেল স্টেশনে যাবার পর ট্রেন ধরে বর্ধমান যাওয়ার কথা ছিল। চণ্ডীপুর গ্রাম থেকে বের হওয়ার সময় দুজন দেখতে পান রাস্তার ধারে একটি খামারে শুয়ে কাতরাচ্ছিল একটি পুর্ণবয়স্ক হনুমান। বাইক থামিয়ে কাছে যান। অবস্থা গুরুতর বুঝে ওই বাইকেই হনুমানটিকে তুলে নিয়ে সটান তাঁরা ভাতার বাজারে রাজ্য প্রাণী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে হাজির হন।
কিন্তু সকাল সাড়ে সাতটায় হাসপাতালের গেট বন্ধ। জখম হনুমানটিকে কোলে নিয়েই গেটের সামনে অপেক্ষা করতে থাকেন তাঁরা। আশপাশের লোকজনদের বিষয়টি বলেন। এরপর স্থানীয়রাই ওই পশুহাসপাতালের চিকিৎসকের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করেন। চিকিৎসক ঢুকলে আহত হনুমানটির প্রাথমিক চিকিৎসা শুরু হয়। পাশাপাশি বনবিভাগে খবর দেওয়া হয়।
পশু হাসপাতালের চিকিৎসক অমল কুমার দে জানিয়েছেন প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে পথ দুর্ঘটনায় মাথায় আঘাত পায় হনুমানটি। বনবিভাগের কর্মীদের অপেক্ষায় প্রায় চার ঘণ্টা ধরে হনুমানটিকে আগলে বসে থাকেন অদ্বৈত এবং কার্তিক। তবে শেষ পর্যন্ত বাঁচানো যায়নি হনুমানটিকে। সকাল সাড়ে এগারোটা নাগাদ বনবিভাগের কর্মীরা গিয়ে হনুমানটির মৃতদেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। তারপরে চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি দুই বন্ধু। ভাতারের চণ্ডীপুর গ্রামের বাসিন্দা অদ্বৈত। পাশেই বামুনাড়ায় বাড়ি কার্তিকের।