শেষ আপডেট: 29th October 2024 18:03
দ্য ওয়াল ব্যুরো, পূর্ব বর্ধমান: নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে প্রায় জমিতেই আলুর বীজ বপনের কাজ শেষ হয়ে যায়। কারও কারও জমিতে বীজ ফুটে গাছও বড় হয়ে যায়। এবার সবেতেই একরকম জল ঢেলে দিয়েছে দানা। ঘূর্ণি ঝড় দানার দাপটে ঝড়ো হাওয়া ও টানা বৃষ্টিতে ধানের জমিতে এখন জল থৈথৈ।
পূর্ব বর্ধমানের ১৯ নম্বর জাতীয় সড়কের শক্তিগড় থেকে জৌগ্রাম ও মশাগ্রাম পর্যন্ত রাস্তার দু'পাশে শুধু আলুর জমি চোখে পড়ে। এবার কিন্তু উল্টো। এখনও পর্যন্ত চাষিরা একদানাও আলুর বীজ বসাতে পারেননি। সাধারণত এই সময়ে পোখরাজ প্রজাতির আলু চাষ করা হয়। ৩৬ প্রজাতির স্বল্প দিনের ধান জমি থেকে তোলার পরই পোখরাজ প্রজাতির আলু চাষ করা হয়। মাত্র ৬০ থেকে ৭৫ দিনের মাথায় এই প্রজাতির আলু জমি থেকে তোলা হয়। তবে এই আলু হিমঘরে রেখে দিলে তা বাজারে বিক্রি হয় না।
শক্তিগড় গ্রামের বাসিন্দা আলুচাষি হবিবুর রহমান মল্লিক বলেন, "একেবারে ভয়াবহ। জমিতে জল দাঁড়িয়ে আছে। আর যদি নতুন করে বৃষ্টি নাও হয় তাহলেও একমাস পর আলুর বীজ বসানো যাবে। তার আগে আলুর জমি তৈরি করা যাবে না। গত বছরও আলুতে আমরা মার খেয়েছি। আলু বসানোর পরই বৃষ্টি হওয়ায় গাছ পচে যায়। আবার নতুন করে আলুর বীজ বসাতে হয়। এতে আলু বসানোর খরচ দ্বিগুণ বাড়লেও আলুর ফলন ভাল হয়নি।"
শক্তিগড়, বড়শুল, আমড়া, প্যামড়া এই সব এলাকায় প্রধানত পোখরাজ প্রজাতির আলু চাষ হয়। এক বিঘে আলুচাষ করতে গড়ে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়। নভেম্বরের প্রথম বা দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে ধান কাটা শুরু হয়। আর শেষ সপ্তাহে পোখরাজ প্রজাতির আলু চাষ হয়ে যায় বেশির ভাগ জমিতে। কিন্তু এই বছর সব বিশ বাঁও জলে।
কৃষক মহম্মদ রফিউদ্দিন মল্লিক বলেন, "এই দানার দাপটে আমাদের বিরাট ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। একদিকে ধান নষ্ট হয়েছে। অন্যদিকে ঠিক সময়ে আলুর জমি তৈরি হল না। আলু বসানোর সময় পেরিয়ে যাচ্ছে। এতদিন আমাদের এলাকার সব জমিতেই আলুর বীজ বপনের কাজ হয়ে যায়। কিন্তু এ বছর অকাল বর্ষণে জমিতে জল জমে আছে। এই জল সরে গেলে মাটি শুকিয়ে জমি তৈরি হবে আলু বসানোর জন্য।"
তবে জেলার কৃষি আধিকারিক নকুল চন্দ্র মাইতি বলেন, "এতে আলু চাষের ক্ষতির সম্ভাবনা নেই। জল জমি থেকে নেমে গেলেই ধীরে ধীরে আলু চাষের জন্যে জমি তৈরি হবে। পোখরাজ মাত্র ৬০ থেকে ৬৫ দিনের আলু। সুতরাং চাষ করার পর সময় হলেই আলু জমি থেকে তোলা হবে। তাই ফলন কমার কোনও আশঙ্কা তেমন নেই।"