শেষ আপডেট: 30th October 2024 12:59
দ্য ওয়াল ব্যুরো, পূর্ব বর্ধমান: ২১শে জুলাই নেমে আসা আঘাত সামলে দীপাবলির প্রস্তুতি শুরু করল প্যামড়ার ল্যাংচা হাব। মিষ্টি ছাড়া অসম্পূর্ণ বাঙালির কালীপুজো-ভাইফোঁটার অনুষ্ঠান। তাই ঘরে ঘরে সমাদর বাড়াতে এই দিনটির জন্য বিশেষ প্রস্তুতি চলছে শক্তিগড়ের ল্যাংচা সাম্রাজ্যে।
বরাবরই বিখ্যাত শক্তিগড়ের ল্যাংচা। জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের পর এখন প্যামড়া এলাকায় রাস্তার দু'দিকে সার দিয়ে ল্যাংচার দোকান। বিচিত্র সব নাম সেইসব দোকানের। জাতীয় সড়ক ধরে যেতে গিয়ে অনেকেই এখানে বসে ল্যাংচা খেয়ে যান। বাড়ির জন্য ল্যাংচা প্যাকেট করে নিয়ে যান হাজার হাজার মানুষ। সেজন্য বাস ও চারচাকা গাড়ির ভিড় লেগেই থাকে রাস্তার দু'ধারে। বর্তমানে জাতীয় সড়কের দু'ধারে সব মিলিয়ে ৪০ টির বেশি ল্যাংচার দোকান আছে। ভিড় থিকথিক করে প্রতিটি দোকানেই।
চলতি বছর ২১শে জুলাই শহিদ দিবসের সমাবেশের আগে এই ল্যাংচা হাবে একযোগে অভিযান চালায় জেলা স্বাস্থ্য দফতর, খাদ্য বিভাগ, ক্রেতা সুরক্ষা বিভাগ এবং পুলিশ। দোকানগুলিতে হানা দেওয়ার পাশাপাশি যেখানে ল্যাংচা তৈরি করে রাখা হয়, সেই সব গুদামেও হানা দেন আধিকারিকরা। জেলার উপ স্বাস্থ্য আধিকারিক সুবর্ণ গোস্বামীর নেতৃত্বে অভিযান হয়। এই অভিযানেই গায়ে সাদা ছত্রাক থাকা প্রায় তিন কুইন্ট্যাল ল্যাংচা নষ্ট করে প্রশাসন। এই ঘটনায় রীতিমতো হুলুস্থুল পড়ে যায় শক্তিগড়ের ল্যাংচা হাবে। বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ীর নামে অভিযোগ দায়ের হয়। তারপর থেকেই ল্যাংচা হাবে আধার ঘনিয়ে আসে। বিক্রি বাটা কমে যায়।
তবে ধীরে ধীরে এই মন্দা কাটিয়ে দোকানগুলি আবার ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বলে জানাচ্ছেন এখানকার ব্যবসায়ীরা। পুজোর শুরু থেকেই তাই বাড়তি তৎপরতা নজরে এসেছে। এবার দীপাবলি-ভাইফোঁটাতেও ক্রেতাদের ভাল ল্যাংচা খাইয়ে হারানো বাজার ফিরে পাওয়ার চেষ্টা হচ্ছে বলে জানান তাঁরা। একটি ল্যাংচার দোকানের মালিক বিশ্বজিৎ দাস বলেন, "এখানকার ল্যাংচা বেশ কয়েকদিন রেখে খাওয়া যায়। শীতকালে আরও বেশিদিন রাখা যায়। তবে ফ্রিজে রাখলে মিষ্টি খানিকটা শক্ত হয়ে যায়।"
ব্যবসায়ীদের দাবি, বরাবরই এখানকার ল্যাংচার নাম রয়েছে। কারিগরদের দক্ষতা, উপকরণ আর পরিবেশের প্রভাবে এখানকার এই মিষ্টির গুণমান অন্য জায়গার চেয়ে ঢের ভাল। ক্রেতাদের বাড়তি পাওনা, এখানে ল্যাংচা সুন্দরভাবে প্যাকেট করে দেন তারা। সেজন্য কোনও অতিরিক্ত টাকা লাগে না। তাই অনেক দূরের যাত্রাতেও স্বচ্ছন্দে নিয়ে নেওয়া যায়। এই সমস্ত মূলধনে ভরসা রেখেই নতুন করে কোমর বাঁধছে শক্তিগড়।