শেষ আপডেট: 12th March 2025 17:59
দ্য ওয়াল ব্যুরো, পূর্ব বর্ধমান: হিমঘরে আলু রাখতে হিমসিম খেতে হচ্ছে চাষিদের। রীতিমতো লড়াই চলছে হিমঘরে আলু রাখা নিয়ে। রাস্তা জুড়ে লম্বা লাইন। কোথাও ২ কিলোমিটার তো কোথাও আবার ৫ কিলোমিটার জুড়ে আলু বোঝাই ট্রাক্টর দাঁড়িয়ে রয়েছে সারি সারি। সবার অভিমুখ হিমঘর।
ওয়েস্ট বেঙ্গল কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের গুসকরা ইউনিটের সভাপতি বনবিহারী ঘোষ জানান, এবছর খুব ভাল ফলন হয়েছে আলুর। বেশিরভাগ চাষি মাদারসিড বীজ জমিতে ব্যবহার করায় ফলন খুব ভাল হয়েছে। পূর্ব বর্ধমানের মেমারিতে আলুর জমির পরিমাণ কম হলেও জেলার মঙ্গলকোট, আউশগ্রাম ও ভাতারে আলু চাষের জমির পরিমাণ বেড়েছে। গত বছরে এই তিন এলাকায় ৬০ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছিল। কিন্তু এবছর সেই জায়গায় ৭০ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে। তাছাড়া বাইরে আলু যাচ্ছে না। আলুর দাম নেই। পাশাপাশি মাঠে আলু কেনার লোক নেই। তাই চাষিরা সবাই হিমঘরে আলু রাখছেন।
এতেই জটিলতা বেড়েছে। হিমঘরের চাতাল থেকে চেম্বারে আলুর বস্তা নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে শ্রমিকের অভাব আছে। প্রয়োজন মতো শ্রমিক মিলছে না। মূলতঃ দক্ষিণ ২৪ পরগনা থেকে শ্রমিকরা এসে হিমঘরে কাজ করে। তবে এখন স্থানীয় শ্রমিকরাই হিমঘরে আলু ঢোকানোর কাজ করছে। বনবিহারীবাবু বলেন, "গোটা জেলায় বর্তমানে হিমঘরের সংখ্যা ১০৫ টি। এরমধ্যে গুসকরার আশপাশেই আছে ১০টি হিমঘর। এছাড়া জামালপুর, কালনা, বুলবুলিতলা, মেমারি ও বৈঁচিতে হিমঘর আছে। শুধুমাত্র গুসকরা এলাকার হিমঘরগুলিতে আলু রাখার পরিকাঠামো আছে ৪২ লক্ষ প্যাকেট।"
চাষিরা জানান, সারাদিন তো বটেই রাত পেরিয়ে ভোর হয়ে যাচ্ছে হিমঘরে আলু রাখতে গিয়ে। গুসকরায় জাতীয় সড়কের উপর আলু বোঝাই ট্রাক্টরের লম্বা লাইন। একই অবস্থা সব হিমঘরের সামনে। চাষি পার্থ দাস বলেন, "একবার হিমঘরে আলু রাখতে গেলে কবে বাড়ি ফিরব জানি না। দিনরাত লেগে যাচ্ছে। তবুও হিমঘরে আলু খালি করা যাচ্ছে না।খুবই সমস্যা হচ্ছে।" আরেক আলুচাষি শঙ্কর মিত্র বলেন, "মাঠে আলু কেনার লোক নেই। দামও নেই। তাই আমরা সবাই হিমঘরে আলু রাখতে গিয়ে বেশ সমস্যায় পড়ে যাচ্ছি।" ট্রাক্টর চালক শেখ সবুর বলেন, "২৪ ঘণ্টা লেগে যাচ্ছে হিমঘরে আলু রাখতে। বাড়ি থেকে খাবার নিয়ে আসতে হচ্ছে।"