শেষ আপডেট: 22nd July 2024 18:25
দ্য় ওয়াল ব্যুরো,পূর্ব বর্ধমান: আম বাঙালি যে কচুকে একেবারে আদর করে হেঁসেলে বরণ করেন এমনটা নয়। তবে সেই কচু নিয়েই উৎসবে মেতে উঠলেন বর্ধমানের নীলপুরের মানুষ।
স্বাধীনতার পর থেকেই বর্ধমান শহরের শ্রীগুরু আশ্রমে তিনদিনের উৎসব হয়। এই উৎসবে যোগ দিতে আসেন গোটা রাজ্যের মানুষ। আসল আকর্ষণ থাকে শেষদিন। এবারও তার ব্যতিক্রম হল না। সোমবার হল আকাঙ্খিত কচুবাটা উৎসব। হাজারে হাজারে ভক্তরা যোগ দিলেন এই অনন্য ডেলিকেসির স্বাদ নিতে।
বাঙাল মানেই কচুর রেসিপি। নানা প্রজাতির কচুকে কখনও কুচিয়ে কখনও বেটে নানা স্বাদের তরকারি তৈরি করেন পূর্ববঙ্গ থেকে আসা মানুষজন। বাঙালপাড়া আর কলোনির অনেক বাড়িতেই পরিব্রাজক আচার্য দুর্গাপ্রসন্নের আসন পাতা ছিল। ওপার থেকে আসা ছিন্নমূল ভাগ্যবিড়ম্বিত মানুষগুলোকে একটা নির্ভরতা যুগিয়েছিলেন দুর্গাপ্রসন্ন। যেখানেই আশ্রম গড়েছেন। তৈরি করেছেন স্কুল। তার নিয়মকানুন ছিল খুবই সরল। সত্য, সেবা, নীতি, ধর্ম এই চার অনুশাসনের উপর ভিত্তি করেই প্রচার চালাতেন তিনি।
গোটা দেশে শ্রীগুরু সঙ্ঘের অনেক আশ্রম আছে। আছে বেনারস,পুরী কলকাতাতেও। কিন্তু এই তিনদিনের উৎসব এখানেই হবে, নির্দেশ ছিল তাঁর। জীবিত থাকার সময় উৎসবের দিনগুলিতে এখানেই কাটাতেন। তিনদিন ধরে ভোগ খাওয়ানো হয়। হাজারে হাজারে ভক্ত প্রসাদ নেন। নীলপুর ও অন্য কিছু অঞ্চলে তখন রীতিমতো অরন্ধন চলে। রান্নাবান্নার পাট থাকে না অনেক বাড়িতেই।
কচুবাটা উৎসবের আগে গোটা রাজ্য থেকে নিয়ে আসা হয় সেরা মানকচু। তারপর ছাল ছাড়িয়ে মেশিনে পেশাই হয়। এরপর সরষে বাটা, নুন, লেবু, লঙ্কা আর নারকেল-সহ অনেক কিছু মিশিয়ে তৈরি হয় এই অনুপম ডেলিকেসি। শোনা যায়, আচার্য বলে গেছেন, এই কচুবাটায় গা-হাত-পায়ের ব্যথা মরে। দূরদূরান্ত থেকে আসা ভক্তদের কাছে বরাবরই এই ভাত আর কচুবাটা যেন অমৃত। স্বেচ্ছাসেবক পলাশ দাস জানান, এত মানুষের ভিড়। কিন্তু কোথাও ছন্দপতন হয় না। কচুবাটা প্রসাদ পেতে মানুষের ঢল নামে।