নিজস্ব ছবি
শেষ আপডেট: 23rd January 2025 12:34
দ্য ওয়াল ব্যুরো: শীতে কত জায়গায় কত রকমের মেলা হয়। কত কী পাওয়া যায়। খাদ্যমেলাও হয়। কিন্তু মুড়ির মেলার নাম শুনেছেন? বর্ধমানে হয়। অনেকেই বলে থাকেন, বর্ধমান-বাঁকুড়া ও মেদিনীপুরে মুড়ির প্রচলন বাকি জেলার থেকে অধিক। প্রামাণ্য কোনও তথ্য না থাকলেও অনেকে বলেন, এখানকার মানুষজন সকালে উঠে মুড়ি, আড্ডায় মুড়ি, কেউ বাড়িতে এলে আপ্যায়ণেও মুড়ি খেতে ও খাওয়াতে ভালবাসেন। মুড়ি যাদের এত প্রিয়, তাদের জন্যই মুড়ির আস্ত এটা মেলা হয় দুর্গাপুরের কাঁকসায়।
শীতের দুপুর। পিকনিক মুডে থাকলে ফাঁকা মাঠে মিষ্টি রোদ মেখে সতোরঞ্চি পেতে আড্ডায় বসুন। না বাড়িতে নয়। মুড়ির মেলায়। আড্ডার সঙ্গত মুড়ির জোগান দেবেন দোকানদাররা। মুড়ি-চানাচুড় নারকেল, পিঁয়াজ, লঙ্কা, চপ মেখে জমিয়ে হবে পেট পুজো। কাঁকসা, পানাপড়, আউশগ্রাম, গলসি থেকে মানুষ আসেন এই মেলায়।
বহুবছর ধরে কাঁকসার মাধবমাঠে পুকুর পাড়ে বসে এই মেলা। এবিষয়ে প্রচলিত গল্প রয়েছে। একসময়ে রাখালেরা গরু চরাতে এই মাঠেই নাকি আসত। মকর সংক্রান্তির দিনে গামছায় মুড়ি আর তেলে ভাজা নিয়ে আসত তারা। মকর স্নান সেরে পুকুরপাড়ে মা মনসার পুজো দিত। তারপর মাঠে বসে চাদর পেতে মুড়ি তেলে ভাজা নিয়ে খেতে বসত। বিকেল হলে খাওয়া-দাওয়া সেরে গরু নিয়ে বাড়ি ফিরত।
পরে স্বপ্নদেশ পেয়ে একটি দেবী থান তৈরি করেছিল তারা। সেই থেকে এই মন্দির ও দেবী থানকে জাগ্রত বলে মনে করতে থাকেন এলাকার মানুষজন। শোনা যায়, মকর সংক্রান্তির দিনে পুকুরে ডুব দিয়ে হাতে কিছু পাওয়া গেলে মনস্কামনা পূর্ণ হয়। তাই প্রতিবছর এই মনসা থানে পুজো দিতে আসেন বহু ভক্ত। এবারেও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
এভাবেই রাখালদের সেই রীতি মেনে চলেছেন এলাকাবাসী। আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে মাঠে বসে মুড়ি খেতে খেতে মেলা উপভোগ করেন সকলে।