শেষ আপডেট: 9th November 2024 10:33
দ্য ওয়াল ব্যুরো, পূর্ব বর্ধমান: ফের শিরোনামে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়। এক ছাত্রী র্যাগিংয়ের শিকার হচ্ছেন এমন অভিযোগে শোরগোল পড়ল বিশ্ববিদ্যালয়ে। ঘটনায় নাম জড়িয়েছে হস্টেলের মেস কমিটির কয়েকজন সদস্য এবং তৃণমূল ছাত্র পরিষদের এক নেতার। ওই ছাত্রীর অভিযোগ, তাঁকে হস্টেল থেকে বের করে দিতে নানাভাবে চাপ দেওয়া হচ্ছে। এমনকি হুমকি দেওয়া হচ্ছে। তিনি জানান, ছাত্র সংসদে গিয়ে টিএমসিপি-র ওই নেতার কাছ থেকে অনুমতি আনার জন্য শাসানো হচ্ছে তাঁকে। হস্টেলের খাবার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
ওই ছাত্রীর বাড়ি বাঁকুড়ায়। তিনি প্রথমে ইংরেজিতে স্নাতকোত্তর করেছেন। তারপর ওম্যান স্টাডিজ-এ স্নাতকোত্তরে ভর্তি হন। কিন্তু বিষয়টি ভাল না লাগায় তিনি এডুকেশনে স্নাতকোত্তরে ভর্তি হন। ওই ছাত্রী জানান, এডুকেশনে তৃতীয় সেমেস্টার পর্যন্ত নিয়মিত ক্লাস করে পরীক্ষা দিয়েছেন। কিন্তু চতুর্থ সেমিস্টারের সময় ব্যক্তিগত কিছু সমস্যার কারণে নিয়মিত ক্লাস করতে পারেননি। পরীক্ষাও দিতে পারেননি। এখন চতুর্থ সেমিস্টারে ক্লাস করা ও পরীক্ষার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অনুমতি দিয়েছে বলে ওই ছাত্রী জানান। কিন্তু গোল বাধে হস্টেলে থাকা শুরু করতেই।
ওই ছাত্রী বলেন, "হস্টেল সুপার, ওয়ার্ডেন সকলেই আমাকে অনুমতি দিয়েছেন। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও আমার বিষয়টি জানার পরে অনুমতি দিয়েছেন। কিন্ত বর্তমান মেস কমিটি আমাকে হস্টেলে থাকতে দেবে না বলে নানাভাবে মানসিক অত্যাচার চালাচ্ছে।" গোটা বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, রেজিস্ট্রার সহ অন্যান্য আধিকারিকদের কাছে ই-মেলে অভিযোগ করেছেন ছাত্রী। বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যান্টি র্যাগিং কমিটিতেও জানিয়েছেন পুরো ঘটনা।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও ইউজিসির অ্যান্টি র্যাগিং সেলে অভিযোগে জানিয়ে তিনি লিখেছেন হস্টেলের বর্তমান মেস কমিটির কয়েকজন সদস্য তাঁকে হস্টেল ছাড়ার জন্য নানাভাবে চাপ দিচ্ছে। হুমকি দিচ্ছে। অত্যাচার করছে। মেসে মাসিক খাবারের খরচ জমা নিচ্ছে না বর্তমান মেস কমিটি। ফলে মেসে তিনি খাবার পাচ্ছেন না। বেশি টাকা খরচ করে বাইরে থেকে খাবার কিনে খেতে হচ্ছে। চরম মানসিক নির্যাতন ও অত্যাচারের শিকার হতে হচ্ছে তাঁকে।
যাঁদের বিরুদ্ধে ওই ছাত্রী অভিযোগ করেছেন, তাঁদেরই একজন অদিতি গুপ্তা অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, ওই ছাত্রী চার বছর ধরে হস্টেলে রয়েছে সুপার সিনিয়র হিসেবে। ২০২২-২৪ শিক্ষাবর্ষ শেষ হয়ে গেলেও উনি থেকে গিয়েছেন হস্টেলে। এখন প্রথম বর্ষের ছাত্রীরা আসছে। তাই ওই ছাত্রীকে ঘর ছাড়ার জন্য বলা হয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমানে এমবিএ-এর ছাত্র তথা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য কমিটির সম্পাদক খোন্দেকার আমিরুল ইসলাম ওরফে রামিজ শুক্রবার বলেন, "হস্টেলে থাকার ব্যাপারে ছাত্র সংসদের কোনও ভূমিকাই নেই। সেটা বিশ্ববিদ্যালয় ঠিক করে। আর যার কথা বলা হচ্ছে উনি ২০২২-২৪ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী। বর্তমানে ছাত্রীই নন। চতুর্থ সেমিস্টার চালু হলে ওনাকে রিঅ্যাডমিশন নিতে হবে। তার পরে হস্টেলে থাকার প্রশ্ন আসছে।"
বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যান্টি র্যাগিং কমিটির কনভেনার পার্থ মিত্র বলেন, "অভিযোগ পেয়েছি। তবে অভিযোগের এখনও পর্যন্ত তেমন কোনও প্রমাণ পাইনি। অ্যান্টি র্যাগিং কমিটি বিষয়টি খতিয়ে দেখবে।"