শেষ আপডেট: 30th October 2024 19:15
দ্য ওয়াল ব্যুরো, পূর্ব বর্ধমান : বর্ধমান শহরের কাঞ্চননগরের কঙ্কালেশ্বরী দেবী মূর্তি খুব প্রাচীন। দেবী এখানে কঙ্কালরূপিণী। এই চামুণ্ডা মূর্তিটি অনেকে বৌদ্ধ চামুণ্ডার রূপ বলে মনে করেন। তাঁদের মতে, এটি বৌদ্ধ আমলে তৈরি। মূর্তিটি দেখলে মনে হবে পাথরের উপরে মানুষের দেহের যেন কঙ্কাল-রূপ। কঙ্কালসার মূর্তিতে মানবদেহের শিরা-উপশিরা-ধমনীর প্রত্যেকটি খুব নিখুঁতভাবে খোদাই করা।
৬ ফুট উচ্চতার কালো ব্যাসাল্ট পাথরে নিপুণ ও নিখুঁত ভাবে খোদাই কালী মূর্তিপ্রতিমার মাথার উপরে হস্তী ও পায়ের নীচে শায়িত শিব, উপরের ডান হাতে ত্রিশূল, নীচে দু'পাশে দুটি শেয়াল। পদতলে শিব, অষ্টভুজা এই চামুন্ডা মূর্তিকেই কঙ্কালেশ্বরী রূপে পুজো করা হয়।
মূর্তির গলায় ঝুলছে মুণ্ডমালা। সচরাচর এমন রূপের দেবীমূর্তি দেখা যায় না। একেবারে কঙ্কালসার চেহারা। প্রায় আড়াইশো বছরের পুরনো এই মন্দিরের ন'টি চূড়া আছে। যার পুরোটাই টেরাকোটার কারুকার্যে তৈরি। পুরাতাত্ত্বিকদের মতে, এই মূর্তি বৌদ্ধ বা পাল যুগের। দু'হাজার বছরের বেশি প্রাচীন। আবার কারও মতে মূর্তিটি জৈন আমলের। কেউ কেউ মূর্তিতে বৌদ্ধ তন্ত্রের প্রভাব লক্ষ্য করেন। তবে বহুল প্রচলিত মত অনুযায়ী, কঙ্কালসার মূর্তিটি প্রাক-আর্য যক্ষিণী মূর্তি।
কথিত আছে, ১৩২৩ বঙ্গাব্দে বন্যা হয়েছিল বাংলায়। দামোদর ভাসিয়ে নিয়ে গিয়েছিল সম্পূর্ণ এলাকা। বন্যার জল নামার পর দামোদরের গর্ভ থেকেই উদ্ধার হয় কষ্ঠিপাথরের এই দেবীমূর্তি। পরে সাধারণ মানুষ পুজো শুরু করেন। তখন থেকেই দেবীর আরাধনা হয়ে আসছে।
বর্ধমান পুরসভা ও বর্ধমান উন্নয়ন সংস্থার তরফে কঙ্কালেশ্বরী কালী মন্দির এবং তা সংলগ্ন এলাকাকে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। মন্দির সংলগ্ন এলাকায় গড়ে উঠেছে বিনোদন পার্ক। বসানো হয়েছে বাতি। রাস্তাঘাটের সংস্কার হয়েছে। দক্ষিণবঙ্গের প্রাচীন মন্দিরগুলির মধ্যে অন্যতম এই কঙ্কালেশ্বরী কালী মন্দির। প্রায় সারাবছরই এখানে ভক্ত সমাগম হয়ে থাকে। কালীপুজোর দিন ভক্তের ঢল নামে।