মুণ্ডেশ্বরী ও দামোদর উপচে ভাসল এলাকা
শেষ আপডেট: 3 October 2024 13:11
দ্য় ওয়াল ব্যুরো, পূর্ব বর্ধমান: জলাধারগুলিতে ড্রেজিং হয় না বলে অভিযোগ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর পূর্ববর্ধমানের জামালপুরের বানভাসি এলাকার মানুষজন প্রশ্ন তুললেন বিশ্বব্যাঙ্কের টাকায় মুণ্ডেশ্বরীতে ড্রেজিং এর সার্থকতা নিয়ে।
বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য মুণ্ডেশ্বরী নদীর নাব্যতা বৃদ্ধির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। সেই মতোই দু’বছর আগে ঢাক ঢোল পিটিয়ে মুণ্ডেশ্বরী নদীতে শুরু হয়েছিল ড্রেজিং এর কাজ। একই সঙ্গে নদী ভাঙন রুখতে বোল্ডার দিয়ে দামোদর ও মুণ্ডেশ্বরী নদীর পাড় বাঁধানোর কাজও চলে। কিন্তু এলাকার মানুষের অভিযোগ, কাগজে কলমে বিশ্বব্যাঙ্কের আর্থিক সহায়তায় হওয়া এইসব কাজ সফল হলেও আদতে কিছুই হল না। আগের মতো এবারও ডিভিসি’র ছাড়া জল মুণ্ডেশ্বরী ও দামোদর উপচে প্রবাহিত হল। পুজোর মুখে বানভাসি হল জামালপুর ব্লকের জ্যোৎশ্রীরাম অঞ্চলের বেশ কিছু গ্রাম। ক্ষতি সামলাতে এখনও হিমসিম খাচ্ছেন এইসব গ্রামের বাসিন্দারা। প্রশ্ন তুলছেন ড্রেজিং এর সার্থকতা নিয়ে।
পূর্ব বর্ধমান জেলার জামালপুর সহ বিস্তীর্ণ অংশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে দামোদর নদ। তারই শাখা নদী মুণ্ডেশ্বরী। জামালপুর ব্লকের জ্যোৎশ্রীরাম অঞ্চলের মুইদিপুরের ’বেগোর মুখ’ এলাকা থেকে সৃষ্টি হওয়া মুণ্ডেশ্বরী নদী হুগলির দিকে বয়ে গিয়েছে। আর অন্য দিকে বয়ে গিয়েছে দামোদর। পুজোর মুখে টানা কয়েক দিন ভারী বৃষ্টির পরেই ডিভিসি জল ছাড়া শুরু করে। সেই জল দামোদর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বেগোর মুখ এলাকায় পৌঁছতেই দামোদর ও মুণ্ডেশ্বরী উপচে যায় ।
জ্যোৎশ্রীরাম অঞ্চলের বেশ কয়েকটি গ্রাম- সহ রায়না ২ নম্বর ব্লকের গোতান অঞ্চলের কয়েকটি গ্রামও বানভাসি হয়ে পড়ে ।
এই বন্যাকে ’ম্যান মেইড’ বন্যা বলে দাবি করে ক্ষোভ উগরে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর নির্দেশে ১৯ সেপ্টেম্বর পূর্ব বর্ধমানের রায়না ২ নম্বর ব্লক ও জামালপুরের বন্যা পরিস্থিতি সরজমিনে খতিয়ে দেখতে আসেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। ওই দিনই রাজ্যের সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইঞা-সহ রাজ্যের পাঁচমন্ত্রী মিলে বন্যায় জেলার ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে পর্যালোচনা বৈঠক করেন।এর ঠিক তিন দিন পরেই বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে বর্ধমানে প্রশাসনিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী পুজোর সময় বাংলা বানভাসি হওয়ার জন্য ডিভিসি’র পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকারকেও কাঠগড়ায় তোলেন।পাশাপাশি জলাধার গুলির ড্রেজিং না হওয়া নিয়ে ক্ষোভ উগড়ে দেন।
যদিও বানভাসি হওয়া জ্যোৎশ্রীরাম অঞ্চলের গ্রামগুলির বাসিন্দারা কেন্দ্র ও রাজ্যের এই টানাপড়েন নিয়ে মাথাই ঘামাতে চাননি। বরং তাঁদের প্রশ্ন, মুণ্ডেশ্বরীর নাব্যতা বৃদ্ধি এবং বোল্ডার দিয়ে দামোদরের ’পাড়’ বাঁধানোর জন্য কোটি কোটি টাকা খরচের সার্থকতা কী হল? শুধু তাই নয়, জল কমার পর দামোদরের পাড়ের বেশ কিছু জায়গায় বোল্ডার পিচিং ধসে পড়াতেও হতাশা ব্যক্ত করেছেন।
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া জ্যোৎশ্রীরাম অঞ্চলের বাসিন্দারের তোলা এইসব প্রশ্নের উত্তর পেতে সেচ দফতরের একাধিক আধিকারিকের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হয়। তাঁরা জানিয়ে দেন, এ বিষয়ে তাঁদের কিছু জানা নেই। রাজ্যের সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইঞাকে ফোন করা হলে তিনিও জানান, বিষয়টা জেনে তারপর উত্তর দেবেন।