শেষ আপডেট: 15th February 2025 20:21
দ্য ওয়াল ব্যুরো, পূর্ব বর্ধমান : একতলা বাড়িটা দোতলা হয়েছে অনেক দিন। এক সময় যে বাড়ি লালবাড়ি নামে পরিচিত ছিল। প্রভাত মুখোপাধ্যায় বরিশাল থেকে চলে আসার পর প্রতুল মুখোপাধ্যায় শৈশব কেটেছে এই বাড়িতে। প্রতুলকে মতিঝিলের সবাই পানু দা নামেই চেনে।
পানুদা বাড়ির সামনের মোতিঝিল মাঠে ফুটবল খেলতেন।হুগলি কলিজিয়েট স্কুলে পড়তেন এবং বরাবর ফার্স্ট হতেন।ভূদেব ভবনে বিয়ে হয়েছিল সর্বানী মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে। তারপর সত্তর দশকে কলকাতা চলে যান। প্রতুল মুখোপাধ্যায়কে নিয়ে এমনই টুকরো টুকরো স্মৃতি রয়েছে চুঁচুড়ার মতিঝিল এলাকার বাসিন্দাদের।
তাঁর এক আত্মীয় সুখ রঞ্জন গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘খুব ছোটো বেলায় দেখেছি।পাশের বাড়ির বারান্দায় অংক কষতেন।লিখতে লিখতে গোটা মেঝে ভরিয়ে দিতেন। খুব মেধাবী ছিলেন।মতিঝিলের চেকালিন ক্লাবের নামকরণ তাঁরই করা।বন্ধুরা মিলে সরস্বতী পুজো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করতেন।পরে দূর্গাপুজো শুরু হয়। যে মাঠে খেলতেন সেই মাঠের নামকরণ করেছিলেন গ্রিন চেক গ্রাউন্ড। চেকাকিন ক্লাবের পরিচালনায় বারো ভূতে নাটক মঞ্চস্থ হয়েছিল।প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের ছোটো ভাই প্রদীপ মুখোপাধ্যায় খুব ভালো ছবি আঁকতেন।সেই নাটকের ছবি এঁকে দিতেন।’’
প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের বাড়ি প্রায় পঞ্চাশ বছর আগে বিক্রি হয়ে যায়।ওই বাড়ির বর্তমান বাসিন্দা দিব্যেন্দু চক্রবর্তী বলেন, ‘‘আমার শ্বশুরের শ্বশুর এই বাড়ি কিনেছিলেন।ওনার মত একজন গুণী মানুষ এখানে থাকতেন আমরা গর্বিত।’’
প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের প্রতিবেশী কিশোর চট্টোপাধ্যায় বলেন,‘‘কী অসাধারণ নাটক করেছিলেন। ওদের বাড়িতে ইলেকট্রিক ছিল না। আমাদের বাড়িতে আলো ছিল। মেঝেতে বসে অংক কষত। বহুদিন যোগাযোগ ছিল না।পরে আমরা যোগাযোগ করি। একবার ক্লাবের অনুষ্ঠানে নিয়ে এসেছিলাম। বলেছিলাম তোমাদের বাড়িটা আছে শুধু তোমরাই নেই।’’
বহুবছর আগে চলে এসেছিলেন ভিটেমাটি বিক্রি করে। তবুও শিকড় ছেড়া কি এত সহজ! তাই তো শিল্পীর চলে যাওয়ার খবরে বিষাদ নেমেছে চুঁচুড়ার মতিঝিলে।