রাঢ়েশ্বর শিব মন্দির
শেষ আপডেট: 22nd July 2024 23:10
দ্য ওয়াল ব্যুরো, পশ্চিম বর্ধমান: রাজা বল্লাল সেনের আড়ার রাঢ়েশ্বর শিব মন্দিরে উপচে পড়ল ভিড়। পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুরে রয়েছে এই প্রাচীন মন্দির। প্রতিবছর শ্রাবণ মাসের প্রথম সোমবারে ভক্তদের ঢল নামে সেখানে।
এ বছরও একই দৃশ্য দেখা গেল সেখানে। এদিন সকাল থেকে অজয়, দামোদরে স্নান করে কলসি ভরা জল নিয়ে মন্দিরের সামনে লম্বা লাইন দিয়েছিলেন ভক্তরা। শিবের মাথায় জল ঢালার পরে তাঁরা উপবাস ভাঙেন।
প্রতিবছর এই মন্দিরে পুজো দিতে আসেন কণিকা দাস। এদিনও এসেছিলেন। দুঘণ্টা লাইনে দাঁড়ানোর পরে তিনি মন্দিরে শিবদর্শনের সুযোগ পান। কণিকা বলেন,"বাবা খুব জাগ্রত। এখানে মানত করলে মনের বাসনা পূরণ হয়। ২ঘণ্টা ধরে লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। বেলা যত বাড়ছে ভিড় যেন বেড়েই চলেছে।"
রাজা বল্লাল সেনের এই মন্দির নিয়ে রয়েছে বহু অলৌকিক কাহিনী। লোকমুখে শোনা যায়, রাজা জটিল রোগ সেরেছিল রাঢ়েশ্বর শিবের কৃপায়। আজ থেকে প্রায় সাড় আঠাশ বছর আগে এই রাজা বল্লাল সেনের রাজত্ব ছিল বাংলার এই অঞ্চলে। কাঁকসার সহ আশপাশের বেশ কয়েকটি এলাকার নিয়ে অজয়ের পাড় জুড়ে ছিল তাঁর আধিপত্য।
এক সময়ে জটিল রোগে ভুগছিলেন রাজা। কবিরাজও সেই রোগ সারাতে পারেনি। সেই সময়ে শিবের স্বপ্নাদেশ পান রাজা। তাঁকে আড়ার কালদিঘি পুকুরের পাশে মন্দির তৈরির নির্দেশ পান। সেইমতো বেলে মাটি ও ঝামা পাথর দিয়ে রাঢ়েশ্বর শিব মন্দিরটি নির্মাণ করা হয়। মন্দিরের শিবলিঙ্গ প্রতিষ্ঠা করে শুরু হয় দেবাদিদেবের আরাধনা শুরু করেন বল্লাল সেন। কথিত আছে, প্রতিদিন কালদিঘি পুকুরে স্নান করে মন্দিরের পুজো দিতেন রাজা। এরপরেই ধীরের ধীরে সেরে ওঠেন তিনি। তারপর সাধারণ মানুষ এই মন্দিরকে জাগ্রত বলে মানতে শুরু করে। তাঁদের বিশ্বাস, ওই কালদিঘির পুকুরের নিত্যদিন স্নান করতেন মহাদেব।
মন্দিরের সেবাইতরা জানিয়েছেন, মনের ভক্তি আর অগাধ আস্থা রেখে কেউ পুজো দিলেন, তাঁর মনের ইচ্ছে পূরণ হয়। শিবরাত্রিতে অনেক ভক্তের সমাগম হয় এই মন্দিরে।