শেষ আপডেট: 13th November 2024 18:20
চন্দন ঘোষ
মাটির উনুন। তাতে হালকা আঁচ। তেতে উঠছে কালচে কড়াই। দোকান ঘিরে লম্বা লাইন। ঝুড়িতে লালচে চপ, পেঁয়াজি, বেগুনি। থেকে থেকে কানে আসছে, 'দাদা এদিকে','আমাকে দশটা আগে দিয়ে দিন','অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে আছি,আমাকে ছেড়ে দিন না'। হ্যাঁ এমন দৃশ্যই চোখে পড়বে বর্ধমানের বড়বাজারে দুলালের তেলেভাজার দোকানে। শুধু তেল থেকে ছেঁকে তোলার অপেক্ষা। দুরদুরান্ত থেকে মানুষ এখানে আসেন চপ,বেগুনি,পেঁয়াজি আর ডালপুরির স্বাদ নিতে। এত ভিড় যে দিয়ে কুলোতে পারা যায় না।
চপ শিল্পের কথা একসময় বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সে নিয়ে ট্রোল হতে হয়েছিল তাঁকে অনেক। এখনও কটাক্ষের শিকার হন তিনি। কিন্তু চপ ভেজেও যে খ্যাতি পাওয়া যায়, ব্যবসা করা যায় তা দেখিয়ে দিয়েছেন বর্ধমানে দিলীপ নাগ। তাঁর চপের স্বাদে মন ভোলে এলাকাবাসীর। দোকানের নামে এলাকার পরিচয় এখন। বর্ধমানের বড়বাজারে ওই চপের দোকান সবাই একডাকে চেনে। এক চিলতে এই দোকান থেকে লাইন দিয়ে চপ কেনেন শহরবাসী। এমন কী আছে এই দোকানের তেলেভাজায়?
বিশ্বজিৎ পাল নামের এক ক্রেতা জানাচ্ছেন, খুবই সুস্বাদু চপ পাওয়া যায় এখানে। ভাল লাগে। আসলেই কিনে নেই যান। আরেক ক্রেতা জানান, বর্ধমানে স্পেশাল চপ এখন দুলালের চপই। আসলেই খাওয়া মাস্ট।
এবিষয়ে অবশ্যই তেমন কিছুই বললেন না মালিক দিলীপ নাগ। তাঁর কথায়, যে মনে করবে চপ খাবে। সে এখানেই আসবে।
বর্তমানে তিনিই মালিক এই দোকানের। শুরু থেকে এই দোকান চপের দোকান ছিল না। ছিল মিষ্টির দোকান। দিলীপ নাগের বাবা দুলাল নাগ, যার নামে চপের দোকানটি। তিনি আলাদা হয়ে যান ভাইয়ের থেকে। নিজের অংশের মিষ্টির দোকান বন্ধ করে ডালপুরির দোকান খোলেন। তেলেভাজাও পাওয়া যেত। সেই দোকানেরই হাল ধরেন দিলীপ। নিজগুণে আজ বর্ধমানের সেরা চপের দোকানের তালিকায় নিয়ে যান।
দোকানে বর্তমানে কর্মচারী তিন জন। টানা ১৫ ঘণ্টা চপের দোকান খোলা থাকে। একটানা কাজ করেন তিনজন। দিলীপবাবুও সমানতালে কাজ করেন। এখানে দু'বেলাই বেগুনি, পেঁয়াজি পাওয়া যায়।