বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ
শেষ আপডেট: 15th August 2024 16:43
দ্য ওয়াল ব্যুরো, পূর্ব বর্ধমান: আরজি কর কাণ্ডে উত্তাল গোটা রাজ্য। জুনিয়ার ডাক্তাররা কর্মবিরতিতে যাওয়া চিকিৎসা পরিষেবাও বিঘ্নিত হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এমন অস্থির পরিস্থিতির মধ্যেও এক প্রসূতির বিরল অস্ত্রোপচারে সন্তান প্রসব করালেন বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ডাক্তারবাবুরা। তাঁদের অসাধ্য সাধনে সুস্থভাবে পৃথিবীর আলো দেখল ফুট ফুটে এক কন্যাসন্তান।
বর্ধমান পূর্বস্থলীর বাসিন্দা শক্তি ও শিখা মাঝি। শিখা ডোয়ারফ্রিজম হুইলচেয়ার সিনড্রোমে আক্রান্ত। তাঁর উচ্চতা মাত্র আড়াই ফুট। তিনবছর আগে পরিবারের বাধা উপেক্ষা করেই শক্তি, শিখাকে বিয়ে করেন। গত বছর সন্তানসম্ভবা হন শিখা। তারপর থেকে শিখা বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের প্রসূতি বিভাগের চিকিৎসক কে পি দাসের তত্ত্বাবোধনে ছিলেন। সন্তানসম্ভবা স্ত্রীকে একপ্রকার কোলে করে নিয়ে বর্ধমান হাসপাতালে যাতায়াত করেছেন শক্তি।
মঙ্গলবার শিখার প্রসব যন্ত্রণা শুরু হয়। এদিন বর্ধমান হাসপাতালে প্রসূতি বিভাগে শিখাকে ভর্তি করা হয়। সঙ্গে সঙ্গে গঠন করা হয় ৬ সদস্যের ডাক্তারদের একটি টিম। সিজারের করা প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেন তাঁরা।
বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের প্রসূতি বিভাগের ডাক্তাররা জানিয়েছেন, শিখার উচ্চতা মাত্র আড়াই ফুট ও তাঁর নিম্নাংশ কার্যকারীতা নেই। তাঁর স্বাভাবিক উপায়ে সন্তান প্রসব ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। সেক্ষেত্রে কার্ডিয়াক পালমোনারি আরেস্ট হওয়ার ঝুঁকি ছিল। ফলে মা ও সন্তান উভয়কে সঙ্কটের মধ্যে পড়তে হতো। তাই একে বারে বিরল অস্ত্রোপচারের রাস্তা নিয়ে অসাধ্য সাধন করে বাজিমাত করেন বর্ধমান মেডিকেলের চিকিৎসক মলয় সরকার, কে পি দাস, এস পি দাস, সুমন্ত ঘোষ মৌলিকদের ৬ সদস্যের মেডিকেল টিম। বিকল্প অ্যানাস্থিসিয়া পদ্ধতি অবলম্বন করে সিজার করার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। এরপরেই শিখা গর্ভস্থ সন্তানকে বের করে আনেন ডাক্তারদের এই টিম। কন্যা সন্তানের অভিভাবক হন শিখা ও শক্তি।
শক্তি জানিয়েছেন, শিখাকে বিয়ে করাটা তাঁর কাছে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। বিয়ে করার জন্য তাঁকে নিজের বাড়িও ছাড়তে হয়েছে। তবে কোনওদিনই তিনি স্ত্রীকে বোঝা ভাবেননি। সন্তান সম্ভবা স্ত্রীকে কোলে নিয়েই তিনি বর্ধমানে আসতেন চেকআপে। কন্যাসন্তানের বাবা-মা হতে পেরে তাঁরা দুজনই খুব খুশি। অস্ত্রোপচারের পরে মা ও সদ্যোজাত দু'জনেই সুস্থ আছে বলে জানান চিকিৎসকরা।