শেষ আপডেট: 7th January 2025 20:00
কথায় বলে সাধের লাউ। কিন্তু এখন সেই সাধের লাউ নিয়ে আর মাথাব্যথা নেই চাষিদের। পূর্ব বর্ধমানের দামোদর নদের পাড়ে লাউ শাক নিয়েই যত আগ্রহ। ফল ধরুক চাইছেন না তাঁরা।
জামালপুরের বাসিন্দা ভোলানাথ মালিক, হারু মালিকরা চাষ করেছেন দামোদর নদের পাড়ে। জমিতে এভাবেই লাউ গাছ রীতিমতো ঢেউ খেলছে। কিন্তু গাছে লাউ নেই। কারণ লাউ ধরাতে ঘোর আপত্তি কৃষকদের। কারণ বাজারে নাকি লাউয়ের থেকে লাউশাকের চাহিদা বেশি। তাই কৃষকরা লাউয়ের বদলে লাউশাক চাষে মন দিয়েছেন। কিন্তু কৃষকদের এমন কাণ্ডে সকলেই হতবাক।
ভোলানাথ মালিক জানান, ‘সব জায়গায় লাউশাকের ফলন ভাল হয় না। দামোদরের উপকূলবর্তী এলাকাই চাষের জন্য আদর্শ। এখানে শাকের ফল অত্যন্ত ভাল হয়। লাউ বিক্রি হলেও শাকের চাহিদা বেশি। সপ্তাহে যেখানে ১০০টা লাউ বিক্রি করতে মাথা খারাপ হয়ে যায় সেখানে ৭০-৮০ কেজি লাউশাক এক সপ্তাহে বিক্রি হয়।’
চাষিরা জানিয়েছেন, ধান, আলুর পরিবর্তে তারা বিকল্প চাষ করছেন। তবে বিকল্প চাষ হিসেবে লাউকে বেচে নিলেও গাছে লাউ ফলানো যাবে না। বাজারে লাউ শাকের চাহিদা লাউয়ের থেকে অনেক বেশি। তাই তাঁরা জমিতে মাচা বেঁধে লাউগাছের চাষ করেছেন। একটা লাউ ফুল ফুটে বড় হতে যা সময় লাগবে তার তুলনায় প্রায় প্রতিদিনই বেশি লাউ শাক বাজারে বিক্রি হবে।
হারু মল্লিক বলেন, ‘লাউয়ের চেয়ে শাকে লাভ বেশি। হাইব্রিডের লাউ হলে শাকের পরিমাণ কম হয়। কিন্তু দেশি লাউ চাষের ফলে শাকের ফলন তুলনামূলকভাবে অনেকটাই বেড়েছে। জীবিকার তাগিদেই বিকল্প চাষে ঝুঁকতে হয়েছে। ধান বা আলু চাষ করে আর সংসার চলছে না। তাই নতুন পথ বেছে নিতেই হচ্ছে।’
মূলত বর্ষার শেষে জমিতে লাউবীজ বপন করেন তাঁরা। মাসখানেকের মধ্যেই লাউগাছ ডালপালা মেলতে শুরু করে। লাউগাছ একটু বড় হলেই জমিতে দু’ফুট উচ্চতায় মাচাও বাঁধা হয়। তারপর আর বেশি ঝামেলা পোহাতে হয় না। এরপর সময় মতো জমিতে জল দেওয়া ও পরিমাণ মত সার ও কীটনাশক ছড়ালেই কাজ শেষ।