ভাসানের পরেই নতুন করে কালীপুজো শুরু হয়ে গেল মঙ্গলকোটের কোঁয়ারপুর গ্রামে
শেষ আপডেট: 5th November 2024 19:05
দ্য ওয়াল ব্যুরো, পূর্ব বর্ধমান: ভাসানের পরেই নতুন করে কালীপুজো শুরু হয়ে গেল মঙ্গলকোটের কোঁয়ারপুর গ্রামে। ঘাট থেকে দেবীর মন্দিরের পর্যন্ত রাস্তার উপর দেবীর নাকি দেবীর পায়ের ছাপ দেখা যায়। রবিবার রাতের এই ঘটনায় কোঁয়ারপুর গ্রামে রীতিমতো হুলস্থুল পড়ে যায়। গ্রামবাসীদের বিশ্বাস, দেবী তাঁদের পুজোয় সন্তুষ্ট হয়েছেন। তাই তিনি এভাবে নিজের অস্তিত্বের প্রমাণ দিয়েছেন। আর সেই বিশ্বাসেই নতুন করে পুজো শুরু করে দেন তাঁরা। তবে যুক্তিবাদীরা এই কর্মকাণ্ডের কড়া সমালোচনা করেছেন।
জানা গিয়েছে, রবিবার রাতে শোভাযাত্রা করে কালী প্রতিমার বিসর্জন হয় গ্রামেরই একটি পুকুরে। বিসর্জন পর্ব মিটে যাওয়ার পর যে যার বাড়ি চলে যান। তখন রাস্তা একেবারে শুনশান। গ্রামের বাসিন্দা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়,সমর চট্টোপাধ্যায়রা বলেন, "বিসর্জন শেষে লোকজন পুকুরের ঘাট থেকে অনেক আগেই চলে গেছেন। রাস্তায় লোকজনও নেই। রাস্তা শুকনো। তারপর হঠাৎ রাস্তার উপর পায়ের ছাপ এবং তার পাশে শাড়ির আঁচল থেকে ফোঁটা ফোঁটা জল ঝড়ে পড়ার ছাপ দেখা যায়। আমরা ভাল করে খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারি ওইসময় গ্রামের কেউ পুকুরের দিকে যাননি। তারপরেই লোকজন জড়ো হয়ে যান।"
স্থানীয় এক দম্পতির দাবি, তখন রাত প্রায় পৌনে এগারোটা। ঘরের জানালা দিয়ে তাঁরা দেখেন একটি ছোট মেয়ে ভিজে কাপড় গায়ে হেঁটে যাচ্ছে। নির্জন রাস্তায় অচেনা বাচ্চা মেয়েকে দেখে তাঁরা ঘর থেকে বেড়িয়ে আসেন জিজ্ঞাসা করতে। কিন্তু তারপর ওই মেয়েটিকে আর দেখা যায়নি। এমন দাবিতে আগুনে ঘি পড়ে। রাতেই শুরু হয় পুজোর আয়োজন।
অজয়নদ সংলগ্ন মঙ্গলকোটের কোঁয়ারপুর গ্রামে চট্টোপাধ্যায় পরিবারের কালী পুজো শতাব্দী প্রাচীন। তবে এখন এই পুজো শুধুমাত্র পরিবারে সীমাবদ্ধ নেই। গ্রামবাসীরাও এই পুজোয় অংশগ্রহণ করেন। স্থানীয়দের বিশ্বাস, দেবী অত্যন্ত জাগ্রত। জানা গিয়েছে চট্টোপাধ্যায় পরিবারের অধিকাংশ সদস্য কর্মসূত্রে বাইরে থাকেন। তবে পারিবারিক কালীপুজোর সময় সকলেই গ্রামে আসেন। রবিবার ছিল চট্টোপাধ্যায় পরিবারের কালীপ্রতিমার বিসর্জন। আর বিসর্জনের পরেই এমন রটনায় আশপাশের গ্রাম থেকেও লোকজন ছুটে আসছেন কোঁয়ারপুর গ্রামে।
পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞানমঞ্চের পূর্ব বর্ধমান জেলা কমিটির সম্পাদক আশুতোষ পাল বলেন, "মনের ভক্তি আর বিশ্বাস থেকে এটা করেছেন ওঁরা। যাঁরা মনে করছেন ওই পায়ের ছাপ মা কালীরই, তাঁরা এটাও ভাবেন কালী তাঁদেরই মতন মানুষের চেহারার কেউ।" তবে বাসিন্দাদেরই একাংশ বলছেন বাম আমলেই পূর্ণ স্বাক্ষর জেলার স্বীকৃতি পেয়েছে বর্ধমান। তারপরেও কুসংস্কার থেকে মুক্তি হয়নি।