শেষ আপডেট: 9th November 2024 18:07
দ্য় ওয়াল ব্যুরো, পূর্ব বর্ধমান: বর্ধমান পুরসভার অ্যাকাউন্ট থেকে এক কোটি ৪১ লক্ষ টাকা লোপাটের ঘটনায় বর্ধমান পুরসভার এক আধিকারিককে ডেকে পাঠাল নাগপুর পুলিশ। সমন পেয়ে ওই আধিকারিক-সহ পুরসভা আরও আট অফিসার মহারাষ্ট্রের নাগপুরের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন।
তদন্তকারীরা মনে করছেন, চেক ক্লিয়ারেন্সের ক্ষেত্রে ওই আধিকারিকের ভূমিকা রয়েছে। যদিও পুরকর্তৃপক্ষ তা মানতে নারাজ। তাঁদের দাবি, সবটাই সাইবার অপরাধীদের কাজ। তারা দু’টি চেক থেকে টাকা তুলেছিল। একটিতে ৪৮ লক্ষ এবং অন্যটিতে ৯৩লক্ষ টাকা তুলে নেয়। ৪৮ লক্ষ টাকা ইতিমধ্যে ফেরত পাওয়া গিয়েছে বলে জানান পুরসভার চেয়ারম্যান পরেশ চন্দ্র সরকার। তিনি বলেন, "বাকি টাকাও দ্রুত ফেরত দেওয়া হবে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিয়েছেন।"
পরেশচন্দ্র সরকার বলেন, আমাদের আধিকারিকের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে, তা ঠিক নয়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক মাস আগে পুরসভার অ্যাকাউন্ট থেকে ওই টাকা তোলা হয়েছে। চেকের মাধ্যমে দু’ধাপে টাকা তোলা হয়। বর্ধমান সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ করে পুরসভা। নাগপুর থেকে টাকা ওঠায় সেখানকার ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ স্থানীয় সাইবার থানায় অভিযোগ করে। পুলিশ তদন্তে নেমে পুরসভার ওই আধিকারিকের নাম পায়। তারপরই তাঁকে চিঠি দিয়ে ডাকা হয়।
এক আধিকারিক বলেন, "সাইবার অপরাধীরা সাধারণত অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে টাকা তোলে। কিন্তু এক্ষেত্রে তাঁরা চেকের মাধ্যমে টাকা তোলায় বেশ কিছু সংশয় রয়েছে। পুরকর্তৃপক্ষ সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি থানায় জানানোয় টাকা বাজেয়াপ্ত করা সম্ভব হয়। তা না হলে সে টাকা তুলে নিত। সম্প্রতি আসানসোল পুরসভার টাকাও উধাও হয়েছে। তবে সাইবার অপরাধীরা এখন বিভিন্ন কৌশলে টাকা হাতাচ্ছে। চেক ক্লোন করে তারা টাকা তুলেছে কি না, সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।"
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, মোটা অঙ্কের টাকা অ্যাকাউন্ট থেকে লোপাট হয়ে যাওয়ায় শোরগোল পড়ে গিয়েছিল। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষও তদন্তে নামে। পরে জানা যায়, মহারাষ্ট্রের নাগপুরের একটি ব্যাঙ্কের শাখা থেকে টাকা তোলা হয়েছে। পুলিশের দাবি, সাইবার অপরাধীরা এখন সরকারি অ্যাকাউন্টগুলিকে টার্গেট করছে। তারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের টাকা হাতিয়েছে। তবে বর্ধমান পুরসভার চেক কী ভাবে ক্লোন হল, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। চেকে সই নকল করা হয়। সবকিছুই নিখুঁতভাবে করা হয়েছে। সে কারণেই সর্ষের মধ্যে ভূত রয়েছে কি না, সেটা তদন্তকারীরা খতিয়ে দেখছেন।
পুরসভার চেয়ারম্যান বলেন, "তদন্তকারীরা তাঁদের মতো করে সবকিছু দেখছেন। তবে আমাদের বিশ্বাস, কোনও আধিকারিক এর সঙ্গে যুক্ত নন। আইনজীবীরা গিয়ে তদন্তকারীদের সামনে যুক্তি তুলে ধরবেন। আমরা সব টাকা পেয়ে যাব বলে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিয়েছেন। পরবর্তী সময়ে আমরা আরও বেশি সতর্ক থাকব।"