শেষ আপডেট: 26th October 2024 15:03
দ্য় ওয়াল ব্যুরো: পর্যাপ্ত আলোর অভাবে জেলে থেকে পড়াশোনা করতে অসুবিধা হচ্ছে অর্ণব দামের। বর্ধমান কেন্দ্রীয় জেলা সংশোধনাগার পরিদর্শনের পর জানালেন গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা সমিতির সদস্যা জয়শ্রী পাল। তবে কারা কর্তৃপক্ষ পড়াশোনার ব্যাপারে তাঁকে মোটের উপর সাহায্য করছে বলেও জানান তিনি।
গত জুলাই মাস থেকে বর্ধমান জেলা সংশোধনাগারে রয়েছেন যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত মাওবাদী অর্ণব দাম। বর্তমানে তিনি বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাস বিভাগে পিএইচডি করছেন। রাজ্যের সংশোধনাগারগুলির পরিকাঠামো-খাবারের মান-চিকিৎসার ব্যবস্থা কেমন চলছে তা খতিয়ে দেখতে জেলগুলি পরিদর্শন শুরু করেছে এপিডিআর। সেই উদ্দেশেই বর্ধমান জেলা সংশোধনাগারে এসেছিলেন তিন সদস্যের একটি দল ।
এপিডিআরের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যা জয়শ্রী পাল বলেন, "এখানে তিনজন রাজনৈতিক বন্দি রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে অন্যতম অর্ণব দাম। তিনি এখানে থেকে পড়াশোনা করছেন। এখানে আলোর ব্যবস্থা ভাল না থাকায় তাঁর পড়াশোনা করতে সমস্যা হচ্ছে। এখন কর্তৃপক্ষ তাঁকে মোটামুটি সহায়তা করলেও যখন ন্যাশন্যাল লাইব্রেরিতে পড়াশোনার জন্য যেতে হবে তখন কী হবে তা বোঝা যাচ্ছে না।"
খড়্গপুর আইআইটির মেধাবী ছাত্র অর্ণব পড়াশোনা ছেড়ে সিপিআই (মাওবাদী)-এর রাজনৈতিক মতবাদে আকৃষ্ট হয়ে সেই সংগঠনে যোগ দিয়েছিলেন। শিলদা ইএফআর ক্যাম্পে হামলার ঘটনায় পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। গত ফেব্রুয়ারিতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয় তাঁকে। তারপর থেকেই বর্ধমান জেলে রয়েছেন তিনি। এই অবস্থাতেই ইতিহাস নিয়ে পিএইচডি করতে চাইলে আদালত তাঁকে অনুমতি দেয়। গত ২৬ জুন পুলিশের পাহারায় ইন্টারভিউয়ের জন্য বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে যান অর্ণব। ৫ জুলাই মেধাতালিকা প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়। ইতিহাস বিভাগে ১০০ নম্বরের মধ্যে ৭৬.৮৬৭০ নম্বর পান। এই বিভাগে গবেষণা করার জন্য ইন্টারভিউয়ে ২৪৯ জনকে পিছনে ফেলে প্রথম হন অর্ণব। তারপরেই শুরু হয় বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর ইতিহাস গবেষণা।
শনিবার বর্ধমান জেলা সংশোধনাগারের পরিকাঠামো নিয়ে কার্যত উষ্মা প্রকাশ করেন এপিডিআরের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য জয়শ্রী পাল। তিনি বলেন, "এখানে জায়গার তুলনায় বন্দির সংখ্যা বেশি। এতে গায়ে গায়ে তাঁদের থাকতে হচ্ছে। চর্মরোগ হবার সম্ভবনা আছে। এছাড়া খাবারের মানও যথেষ্ট ভালো নয়। ডিমের বদলে প্রতিদিন ডাল দেওয়া হচ্ছে।প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার কম দেওয়া হচ্ছে। সংশোধনাগারে চিকিৎসকের অভাব রয়েছে। রাতের দিকে কোন বন্দি অসুস্থ হয়ে পড়লে তখন কী হবে এই বিষয়ে জেল সুপারকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি জানান, সেক্ষেত্রে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া ছাড়া আর কোনও রাস্তা নেই।" মেদিনীপুর, হাওড়ার জেলা সংশোধনাগারেও একই অবস্থা বলে জানান তিনি।