শেষ আপডেট: 22nd February 2024 13:05
দ্য ওয়াল ব্যুরো, পূর্ব বর্ধমান: ভাতারের বলগোনা বাজারে ভিক্ষা করছিল দুই নাবালক। তাদের স্কুলে পাঠালেন ভাতার থানার ওসি। বাড়ি গিয়ে পড়াশোনার দায়িত্ব নিলেন।
বিশেষ কাজে ভাতারের বলগোনা বাজারে গিয়েছিলেন ভাতার থানার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ আধিকারিক প্রসেনজিৎ দত্ত। সেখানেই তাঁর নজরে আসে দু'টি নাবালক ভিক্ষে করছে। সঙ্গে সঙ্গে তিনি গাড়ি থেকে নেমে ওই নাবালকদের কাছে গিয়ে তাদের নাম ঠিকানা ও পরিচয় জানতে চান। কেন তারা এই কাজ করছে সে বিষয়ে খোঁজখবর নেন। জানতে পারেন তাদের বাড়ি ভাতারের সন্তোষপুর গ্রামে। বাবা শেখ আশরাফ শারীরিকভাবে অক্ষম। মা কাঁথা স্টিচের কাজ করে যেটুকু আয় করেন, তাতে সংসার চলে না। তাই তারা স্কুল যাওয়া বন্ধ করে ভিক্ষা করছে।
তখনই মুদিখানা থেকে জিনিসপত্র কিনে নিয়ে আশরাফের বাড়িতে যান তিনি। দুই নাবালকের পড়াশোনার দায়িত্ব নেন। তাদের বই খাতা পেন কিনে দেন। পড়াশোনা করতে আর যা যা দরকার তার ব্যবস্থা করার আশ্বাস দেন। একইসঙ্গে তাদের মা যাতে মাসে আরেকটু বেশি আয় করতে পারেন সে বিষয়েও ভাবনাচিন্তা করেন।
ওই বাচ্চাদের মা চম্পা বিবি জানান, তাঁর স্বামী শারীরিকভাবে অক্ষম। সরকারিভাবে একটি ঘর দেওয়া হয়েছিল তাঁদের। সেই টাকায় ঘর পুরো করতে না পেরে কিছুটা জমি ছিল তা বিক্রি করে ঘরটা কোনওরকম করেন। তবে পরে মেরামত আর কিছুই করতে পারেননি। তিনি বলেন, "সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তাই লোকলজ্জার মাথা খেয়ে ছেলেগুলোকে ওই কাজে নামিয়েছি। তবে বড়বাবু আশ্বাস দিয়ে গেলেন। তাতে করে ওদেরকে আর ওই কাজে পাঠাব না। ওদের পড়াশোনা করাব।"
ভাতার থানার নতুন বড়বাবুকে এমন ভূমিকায় দেখে অবাক হয়েছেন বলগোনা গ্রামের মানুষ। তবে প্রসেনজিৎ দত্ত অবশ্য বিষয়টিকে গোপনই রাখতে চান। তাই এ ব্যপারে কিছু বলতে চাননি তিনি। জানা গেল, এটাই প্রথম নয়, এমন কাজ তিনি হামেশাই করেন। তবে জেলার পুলিশ সুপার আমনদীপ, প্রসেনজিৎ দত্তের কাজের তারিফ করেন। তিনি বলেন, "এই কাজ শুধু পুলিশ ডিপার্টমেন্টকে উদ্বুদ্ধ করবে তা নয়। সকলকেই উৎসাহী করবে।"