শেষ আপডেট: 30th January 2023 03:34
দ্য ওয়াল ব্যুরো: রবিবার পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি করেছিলেন ওড়িশার স্বাস্থ্যমন্ত্রী নবকিশোর দাসকে (Naba Kishore Das)। পরে হাসপাতালে চিকিৎসা চলাকালীন মৃত্যু হয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর (ASI shots dead Odisha health minister)। সেই ঘটনায় অভিযুক্ত অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব ইন্সপেক্টর মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন বলে সূত্রের খবর। দীর্ঘদিন ধরেই নাকি মনোবিদের অধীনে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।
রবিবার ঝাড়সুগুড়া জেলার বজরংনগরের গান্ধীচকে গাড়ি থেকে নামছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। সেই সময় কর্তব্যরত অবস্থায় নিজের সার্ভিস রিভলভার বের করে একদম সামনে থেকে নবকিশোর দাসের বুকে গুলি চালান পুলিশের অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব ইন্সপেক্টর গোপালকৃষ্ণ দাস (ASI Gopalkrushna Das)। সূত্রের খবর, দীর্ঘদিন ধরেই মানসিক অসুখে আক্রান্ত ছিলেন গোপালকৃষ্ণ। বেরহামপুরের এমকেসিজি মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের মনোরোগ বিভাগের প্রধান চিকিৎসক চন্দ্রশেখর ত্রিপাঠি জানিয়েছেন, বাইপোলার ডিসঅর্ডারে (Bipolar Disorder) আক্রান্ত ছিলেন ওই পুলিশকর্মী।
তিনি জানিয়েছেন, ৮-১০ বছর আগে প্রথমবার তাঁর কাছে চিকিৎসার জন্য এসেছিলেন গোপালকৃষ্ণ। অত্যন্ত অল্পেই রেগে যেতেন তিনি। সেই কারণেই চিকিৎসা চলছিল তাঁর।
'আমি জানি না উনি ওষুধগুলো ঠিকমতো খাচ্ছিলেন কিনা। ওষুধ খাওয়া বন্ধ করে দিলে রোগ আবার ফিরে আসে। উনি শেষবার আমার কাছে এসেছিলেন এক বছর আগে,' জানিয়েছেন চিকিৎসক ত্রিপাঠি।
স্বামী বাইপোলার ডিসঅর্ডারের জন্য ওষুধ খেতেন বলে স্বীকার করেছেন অভিযুক্ত পুলিশ কর্মীর স্ত্রী জয়ন্তী। তবে কর্মসূত্রে তিনি বাড়ি থেকে ৪০০ কিলোমিটার দূরে থাকায় নিয়মিত ওষুধ খাচ্ছিলেন কিনা সে ব্যাপারে কিছু বলতে পারেননি জয়ন্তী।
অভিযুক্ত গোপালকৃষ্ণ দাস গঞ্জাম জেলার জলেশ্বরখণ্ডি গ্রামের বাসিন্দা। পুলিশের চাকরিতে যোগ দেওয়ার পর তাঁর প্রথম পোস্টিং হয়েছিল বেরহামপুর জেলায়। তারপর আজ থেকে ১২ বছর আগে ঝাড়সুগুড়া জেলায় ট্রান্সফার করা হয় তাঁকে। সম্প্রতি বজরংনগর এলাকার গান্ধীচকের একটি পুলিস আউটপোস্টে ভারপ্রাপ্ত আধিকারিকের দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন গোপালকৃষ্ণ। সেই কারণেই তাঁর কাছে লাইসেন্স সহ একটি রিভলভার থাকত। রবিবার নবকিশোর দাসের নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখভালের দায়িত্ব ছিল তাঁর উপর। উল্টে সেই তিনিই মন্ত্রীকে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়ে দেন।
এদিন স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে লক্ষ্য করে দু-রাউন্ড গুলি চালান তিনি। একটি লক্ষ্যভ্রষ্ট হলেও অন্যটি গিয়ে লাগে নবকিশোর দাসের বুকে। এরপরেই শূন্যে গুলি করে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন ওই পুলিশকর্মী। যদিও তাঁকে ধরে ফেলেন অন্যান্যরা। কেন তিনি মন্ত্রীর উপর গুলি চালিয়েছিলেন তা এখনও স্পষ্ট নয়। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ আটক করেছে তাঁকে। তাঁর বিরুদ্ধে অস্ত্র আইন এবং ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৭ ধারায় মামলার রুজু করেছে সিআইডির আপরাধ দমন শাখা।
একটি বিশেষ মানসিক অবস্থা, যেখানে ক্ষণে ক্ষণে বদলে যায় রোগীর মেজাজ। কখনও হাসিখুশি মেজাজ, কখনও চূড়ান্ত আবেগী, কখনও আবার নিয়ন্ত্রণহীন রাগে উন্মত্ত হয়ে ওঠেন রোগী। তবে ওষুধ এবং নিয়মিত কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে এই রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ওড়িশার মন্ত্রীকে পয়েন্ট ব্ল্যাক রেঞ্জ থেকে গুলি পুলিশ অফিসারের, হাসপাতালে মৃত্যু