শেষ আপডেট: 15th March 2023 14:57
দ্য ওয়াল ব্যুরো: আজ প্রাথমিক শিক্ষক তো কাল গ্রুপ সি—হাইকোর্টের নির্দেশে বেআইনিভাবে নিযুক্তদের চাকরি যাওয়া লেগেই রয়েছে। এই পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee) বলেছিলেন, “নিচুতলায় কেউ অন্যায় করে থাকলে তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিন। কিন্তু কথায় কথায় চাকরি খাবেন না”।
মুখ্যমন্ত্রীর এই কথায় আদালত অবমাননা হয়েছে বলে বুধবার কলকাতা হাইকোর্টে সওয়াল করেছেন আইনজীবী তথা সিপিএমের রাজ্যসভা সাংসদ বিকাশ ভট্টাচার্য (Bikash Ranjan Bhattacharya)। কিন্তু প্রবীণ কংগ্রেস নেতা তথা আইনজীবী অরুণাভ ঘোষের (Arunabha Ghosh) মতে, মুখ্যমন্ত্রীর এই কথায় কোনওভাবেই আদালত অবমাননা হয়নি। তাঁর কথায়, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একজন রাজনীতিক এবং প্রশাসক। তাঁকে যেমন আইন-আদালত মাথায় রাখতে হয়, তেমনই নানা বিষয়ে মানবিক অবস্থান নিতে হয়। অনেক ক্ষেত্রেই যা আইন আদালতের চোখে বেআইনি, তা মানবিক দৃষ্টিতে ন্যায্য”।
অরুণাভর মতে মুখ্যমন্ত্রীর মঙ্গলবারের বক্তব্য নিয়ে আইনজীবী তথা সিপিএমের রাজ্যসভার সদস্য বিকাশ ভট্টাচার্য আদালত অবমাননার যে মামলা করতে চেয়েছেন তা স্রেফ রাজনৈতিক বিরোধিতা। আদালতের রায়ের সমালোচনা, সংশোধন দাবি করা সব নাগরিকের অধিকার। মুখ্যমন্ত্রী মামলায় হস্তক্ষেপ করেননি বা বাধা দেননি।
মমতার মঙ্গলবারের বক্তব্য নিয়ে বুধবার বিকাশ ভট্টাচার্য কলকাতা হাইকোর্টে প্রশ্ন তুলে বলেন, কেন আদালত মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা করছে না। বিচারপতিরা তাঁর কথায় সায় দেননি। তবে বিচারপতিরা জানিয়ে দেন, বিকাশ চাইলে মামলা করতে পারেন। আগামিকাল বৃহস্পতিবার বিকাশ মামলা করলে আদালতের অবস্থান জানা যাবে।
তবে আইনজীবী তথা কংগ্রেস নেতা অরুণাভ মনে করেন, মুখ্যমন্ত্রীর কথায় অন্যায় কিছু নেই। চাকরি হারানোদের জীবনে হঠাৎ বিপর্যয় নেমে এসেছে। উত্তরবঙ্গে দু’জন আত্মহত্যা করেছেন। যা শুনে মুখ্যমন্ত্রী গভীর উৎকন্ঠা প্রকাশ করেছেন। সেই সঙ্গে মানবিক দৃষ্টিভঙ্গী নিয়ে বিচারের আর্জি জানিয়েছেন। এরসঙ্গে আইনি-বেআইনি বিতর্ক টেনে আনা অনর্থক।
মঙ্গলবার আলিপুর জজ কোর্টে ঋষি অরবিন্দের ১৫০তম জন্ম বার্ষিকীর অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে তিনি বলেছিলেন, 'আমি ক্ষমতায় এসে একজনও সিপিএম ক্যাডারেরও চাকরি খাইনি। তোমরা কেন খাচ্ছ?’ তাঁর কথায়, ‘কালকেও দু’জন আত্মঘাতী হয়েছেন। হঠাৎ করে চাকরি চলে গেলে খাবে কী?’
অনেকেই মনে করেন, মুখ্যমন্ত্রী সেদিন আসলে বোঝাতে চান, চাকরি পাওয়ার পর কেউ হয়তো বিয়ে করে সংসার করছেন, তাঁর চাকরিটা চলে গেলে তো অথৈ জলে পড়তে হবে। কারও হয়তো অসুস্থ, বাবা-মা সন্তানের চাকরির উপর নির্ভরশীল ছিলেন। তাঁদের কী হবে?
মঙ্গলবারের ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন হাইকোর্টের বিচারপতি সুব্রত তালুকদার। মুখ্যমন্ত্রী তাঁর উদ্দেশে বলেছিলেন, “আমি প্রধান বিচারপতিকে পেলাম না। সুব্রতদা'কে (বিচারপতি সুব্রত তালুকদার) পেলাম। ওঁকেই আমার মনের কথা বলে গেলাম।'
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেছিলেন, “যাঁদের চাকরি যাচ্ছে, আইন অনুযায়ী তাঁদের চাকরি ফিরিয়ে দেওয়া যায় কিনা দেখা যেতে পারে। তাঁদের কোনও পরীক্ষায় বসতে দেওয়া যায় কিনা, বা অন্য কিছু করা যায় কিনা তাও দেখা যেতে পারে।'
এসএসসি: নতুন নিয়োগ বিধি তৈরি হচ্ছে, পেশ হবে মন্ত্রিসভায়, জানালেন শিক্ষামন্ত্রী