শেষ আপডেট: 6th January 2024 14:52
দ্য ওয়াল ব্যুরো: শুক্রবার সকালে সন্দেশখালিতে তদন্তে গিয়ে হামলার মুখে পড়েন ইডি অফিসাররা। তাঁদের বেধড়ক মারধর করা হয়। যা নিয়ে ছিঃ ছিঃ পড়ে গিয়েছে। এ ব্যাপারে শুক্রবার ধারাবাহিকভাবে রাজ্যের আইনশ়ৃঙ্খলা পরিস্থিতির সমালোচনা করেছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। প্রথমে এজলাসে বসে ও পরে এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, পশ্চিমবঙ্গে সাংবিধানিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়া নিয়ে কেন কিছু বলছেন না রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। সন্ধ্যায় বিচারপতি বলেন, ‘এই অসভ্যতা আগে দেখিনি’।
শনিবার এ ব্যাপারে তাঁর পাল্টা সমালোচনা করলেন আইনজীবী তথা কংগ্রেস নেতা অরুণাভ ঘোষ এবং তৃণমূলের সাংসদ ও আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। আইনজীবী অরুণাভ ঘোষ এদিন বলেন, “বিচারপতিদের অনেক সংযত হয়ে চলতে হয়। ওঁর আচরণ বিচারপতি সুলভ নয়। কাকে ধরে উনি ৫৬ বছর বয়সে জজ হয়েছেন তা আমি জানি।"
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের উদ্দেশে প্রশ্ন তুলে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, “শুক্রবার ওঁর সামনে কি সন্দেশখালির বিষয় ছিল? ছিল না তো! তাহলে উনি আগ বাড়িয়ে কেন সন্দেশখালি নিয়ে সাংবিধানিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়া, রাজ্যপাল, ইত্যাদি বললেন? তার মানে উনি নিজেই সংবিধানের শর্ত ভাঙছেন। আদালতের গরিমা নষ্ট করছেন। ওঁর জন্য কলকাতা হাইকোর্টের বাকি বিচারপতিদেরও অসম্মান হচ্ছে।" কল্যাণের কথায়, “তাই বলছি উনি ইস্তফা দিন। তার পর রাজনীতিতে যোগ দিন।"
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের উদ্দেশে কল্যাণ আরও বলেন, “আপনি তো সিপিএমের লোক ছিলেন। মনে নেই ৩৪ বছর ধরে কী নোংরামি করেছে সিপিএম! এখন সিপিএম নেই, তাই আপনি বিজেপির সঙ্গে আছেন। জয়েন করুন পার্টিতে।"
আইনজীবী অরুণাভ ঘোষ আর কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যের বিশেষ ফারাক নেই। অরুণাভবাবু বলেন, “ওঁর মতো জজ কলকাতা হাইকোর্টে আছেন এটাই আমাদের দুর্ভাগ্য। ওঁর জন্য বিচারপতির চেয়ারের অমর্যাদা হচ্ছে।"
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের বেশ কিছু পর্যবেক্ষণ ও নির্দেশ সাধারণ মানুষের মধ্যে সমাদৃত হয়েছে। এর ফলে তাঁর একটা জনপ্রিয়তা যে তৈরি হয়েছে তা নিয়ে সন্দেহ নেই। কিন্তু আইনজীবীদের অনেকেই মনে করছেন, সভায়, অনুষ্ঠানে বা কার্যত সাংবাদিক বৈঠক করে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় যেভাবে এবং যে ধরনের কথা বলছেন, তা আগে কোনও বিচারপতি বলেছেন কিনা সন্দেহ। এই পরিস্থিতি বেনজির।