শেষ আপডেট: 27th September 2024 00:49
দ্য ওয়াল ব্যুরো: একসময় তিনি মুখ খুললেই খবর হত। কথায় কথায় শোনা যেত হুঙ্কার!
প্রায় ২৫ মাস পর বৃহস্পতিবার বোলপুরের তৃণমূল পার্টি অফিস যেন দেখল অন্য এক অনুব্রত মণ্ডলকে।
সেই বাজখাঁই কণ্ঠস্বর নেই। চড়াম চড়াম ঢাক বাজানোর হুঁশিয়ারি কিংবা নকুলদানা, গুড় বাতাসার দাওয়াই নেই। পরিবর্তে তাঁর মুখে শোনা গেল, 'সবাই মিলে শান্তিতে থাকতে হবে। সবাইকে নিয়ে চলতে হবে, একথাটা যেন আমরা ভুলে না যায়!'
মঙ্গলবার অনুব্রতর চৌকাঠে এসে দেখা না করে ফিরে যেতে হয়েছিল মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা, বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরীদের। এমনকী বুধবার নানুরের সভা থেকে নাম না করে কাজল শেখ হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, 'অনেক ঘাটের জল খেয়েছি। পাঙ্গা নিতে এসো না, চুড়ি পরে বসে নেই!'
সাকুল্যে ৪ মিনিট ৩২ সেকেন্ডের সাংবাদিক বৈঠকে এসবের ধারে কাছেও গেলেন না বীরভূমের 'বাঘ'। পরিবর্তে 'আমি' ছেড়ে বারে বারে তাঁর মুখে শোনা গেল 'আমরা'।
এমনকী দীর্ঘ সময় জেল খাটা নিয়ে ইডি-সিবিআই প্রসঙ্গেও টুঁ শব্দটি পর্যন্ত করলেন না। বললেন, "আমি আইনকে ভালবাসি। আদালতকে শ্রদ্ধা করি। কোনও বিতর্কে যাব না।" জেল খাটা প্রসঙ্গে তাঁর আরও সংযোজন, "ইশ্বরের সঙ্গে নিশ্চয়ই কিছু অন্যায় করেছি, সেজন্যই হয়তো শাস্তি পেলাম।"
নিজেই জানালেন, চিকিৎসার জন্য আগামী সপ্তাহে কলকাতা যাবেন। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কি দেখা করবেন? সরাসরি 'হ্যাঁ' কিংবা 'না'-তে জবাব না দিয়ে কেষ্টর কৌশলী জবাব, "মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি যাওয়া উচিত বলে আমি তো মনে করি। মেয়েটাকে ১৬ মাস জেল খাটানো হয়েছে। ও তো সাধারণ মেয়ে, কোনও দোষ করেনি।"
বন্যার কবলে বীরভূমের একাধিক ব্লক। ভেদাভেদ ভুলে সকলকে কাঁধে কাঁধ দিয়ে কাজ করার বার্তা দিয়ে জানালেন, কালীপুজোর পর থেকে ব্লকে ব্লকে গিয়ে জনসভার মাধ্যমে ফের জনসংযোগ ও রাজনৈতিক প্রচার শুরু করবেন। আগের মতো দেখা যাবে? জবাব এলো, "সবাই মিলে করব। না হলে পার্টি অফিসে আসছি কেন?"
অনুব্রত জেলে যাওয়ার পর জেলা পরিচালনার জন্য রাজ্য থেকে গঠন করে দেওয়া হয়েছিল কোর কমিটি। এখন তিনি ফিরেছেন। কোর কমিটির অস্তিত্ত্ব নিয়ে দলের অন্দরেই নানা কানাঘুঁষো। কোর কমিটি কি থাকবে? এক্ষেত্রেও সাবধানী কেষ্ট মণ্ডল। শান্তস্বরে জবাব এলো, "সবাই মিলে চলবো কথাটার মানে কী?"