শেষ আপডেট: 23rd September 2023 08:30
দ্য ওয়াল ব্যুরো: শুক্রবার থেকে বাংলাদেশে তাদের পৃথক ভিসা নীতি কার্যকর (Visa) করা শুরু করেছে আমেরিকা। বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচাল করতে পারে এমন ব্যক্তিদের বাছাই করে তাঁদের আমেরিকার প্রবেশাধিকারের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে জো বাইডেন প্রশাসন (America Bangladesh Conflict)। মার্কিন প্রশাসন এমন একটি সময় এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে যখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিউ ইয়কে রয়েছেন। রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে যোগ দিতে গিয়েছেন তিনি।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী আসলে আমেরিকার বিগত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ওঠা কারচুপির অভিযোগের কথা বলতে চেয়েছেন, যা নিয়ে এখনও সে দেশে মামলা-মোকদ্দমা চলছে। নিজের দেশের ভোট নিয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা কারও দয়ায় ক্ষমতায় আসিনি।
হাসিনা ভিসা নীতি নিয়ে আমেরিকার বিরুদ্ধে মার্কিন মুলুকে বসে কড়া প্রতিক্রিয়া দেওয়ার পর কূটনৈতিক মহলে ফের জল্পনা জোরদার হয়েছে, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী কি চিন-রাশিয়া-ভারতের ভরসাতেই আমেরিকার বিরুদ্ধে কড়া ভাষায় মুখ খুলেছেন। হাসিনা বলেন, আমাদের উপর নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে দিলে আমার দেশের মানুষও পাল্টা স্যাংশন দেবে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর এমন কডা প্রতিক্রিয়ায় একদিকে উল্লসীত তাঁর দল আওয়ামী লিগ। অন্যদিকে, দেশে-বিদেশে জোর কূটনৈতিক অঙ্গনে তা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে।
আসলে বাংলাদেশে চিন ও রাশিয়ার প্রভাব দিন দিন বাড়ছে। এ মাসের গোড়ায় রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকা ঘুরে গিয়েছেন। বাংলাদেশে এই প্রথম রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্তরের কেউ সফর করলেন। বাংলাদেশে একটি পরমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে বিপুল বিনিয়োগ আছে রাশিয়ার। ঢাকাতেই বাংলাদেশের পক্ষ নিয়ে ভিসা নীতি নিয়ে আমেরিকার বিরুদ্ধে সরব হন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী। সরাসরি অভিযোগ করেন, বাণিজ্যিক ও সামরিক স্বার্থে আমেরিকা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলাচ্ছে।
অন্যদিকে, বাংলাদেশে চিনের বিনিয়োগ নতুন নয়। লক্ষণীয়, জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে আমেরিকা ও তাদের মিত্র দেশগুলি সরব হলেও চিন মুখ খোলেনি। গত পরশু দিনই বাংলাদেশে চিনের রাষ্ট্রদূত হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেছেন, তাঁদের প্রেসিডেন্ট শি জিংপিনের স্বপ্ন প্রকল্প ‘বেল্ট অ্যান্ড রোডস’ প্রকল্প বাস্তবায়নে বাংলাদেশ সংক্রিয় সঙ্গী।
বাংলাদেশের চিন নির্ভরতা নিয়েই মিত্র দেশ ভারত সম্প্রতি মার্কিন প্রশাসনকে সতর্ক করেছে। নয়াদিল্লির বক্তব্য, বাংলাদেশে হাসিনা দুর্বল হলে ভারত ও আমেরিকা, দুই দেশই বিপাকে পড়বে। তাতে একদিকে, উগ্র ইসলামিক শক্তি মাথাচাড়া দিতে পারে। অন্যদিকে, প্রভাব আরও বাড়বে চিনের। নয়াদিল্লির বক্তব্য, এই বাস্তবতার কারণেই দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ছোট এই দেশটির ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্ব বিবেচনায় রেখে পদক্ষেপ করা উচিৎ আমেরিকার। বাংলাদেশের জন্য পৃথক ভিসা নীতি নিয়ে কূটনৈতিক চানেলে ভারত আপত্তি জানিয়েছে আমেরিকার কাছে।
হাসিনা নিউ ইয়র্কে বলেছেন, বাংলাদেশে ভোটে কারচুপির কোনও সুযোগ নেই। ব্যালক বাক্স স্বচ্ছ। সচিত্র ভোটার তালিকা আছে। আছে স্বাধীন নির্বাচন কমিশন। তারপরও কেউ অবাধ নির্বাচনে বাধা দিলে সাজা পাবে। কিন্তু বাইরের নিষেধাজ্ঞা কেন?
আরও পড়ুন: মোদী মাল্টিপ্লেক্স, সরকার বদল হলে সংসদ ভবন ফের বদলানোর বার্তা কংগ্রেসের