শেষ আপডেট: 5th October 2024 16:37
দ্য ওয়াল ব্যুরো: টিউশন থেকে বাড়ি ফেরার পথে চতুর্থ শ্রেণির এক ছাত্রীকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ। ঘটনাকে কেন্দ্র করে শনিবার সকাল থেকে কার্যত রণক্ষেত্রর চেহারা নিয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগর থানা এলাকার মহিষমারিহাট পুলিশ ফাঁড়ি এলাকা। সকালেই ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন বিজেপির অগ্নিমিত্রা পাল। এবার পৌঁছলেন সিপিএমের কান্তি গঙ্গোপাধ্যায় ও মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়রা।
ঘটনাস্থলে পৌঁছতেই কান্তি-মীনাক্ষীদের বাধা দেয় পুলিশ। আর তাতেই রীতিমতো ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয়। জয়নগরের গ্রামীণ হাসপাতালের সামনে ধস্তাধস্তি শুরু হয় পুলিশের সঙ্গে। মীনাক্ষীরা ছাত্রীর বাবা-মায়ের সঙ্গে দেখা করার কথা জানালে পুলিশ তাঁদের বাড়িতে যেতে বারণ করে। পুলিশের বক্তব্য, এখন যেহেতু ঘটনার তদন্ত চলছে তাই কাউকে সেখানে ঢুকতে দেওয়া যাবে না।
অন্যদিকে বাম নেত্রী মীনাক্ষী হাসপাতালের সামনে দাঁড়িয়ে পরিবারের সঙ্গে দেখা করার পর বলেন, 'পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি। ওঁরা বলেছেন যারা তাঁদের সাহায্য করতে গেছিল তারাই সব থেকে বেশি বিপদে ফেলেছে। সেই জন্য আজ যাঁরা এখানে আছেন তাঁদের ছবি তুলে রাখা খুব দরকারি।'
পুলিশের উদ্দেশে বামনেত্রী জানান, 'আপনারা যদি মনে করেন আমরা তদন্তে বাধা সৃষ্টি করছি তাহলে আমাদেরও বের করে দিন। কিন্তু পাশাপাশি যারা এখানে আছেন তাদেরও সরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।' তিনি আরও বলেন, 'একটা রেপ হয়ে যাবে, একটা মার্ডার হয়ে যাবে আর সে জন্য আরজি করের মতো মানুষের মেলা লেগে যাবে?'
প্রসঙ্গত, আরজি করের মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় প্রথম নির্যাতিতার গাড়ি আটকে ছিলেন মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। সেদিন ঘটনাস্থলে অনেক মানুষ উপস্থিত থাকায় অভিযোগ উঠেছে প্রমাণ নষ্টের। আর তাই জন্যই সেই একই ঘটনা যাতে এক্ষেত্রেও না ঘটে সেটা নিয়েই পুলিশকে সতর্ক হওয়ার কথা বলেছেন বামনেত্রী।
অন্যদিকে ঘটনাস্থলে মীনাক্ষীর পাশাপাশি এসেছেন প্রবীণ সিপিএম নেতা কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়। ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'পুলিশ দলদাসের কাজ করছে। দলদাস বললেও কম বলা হবে। ঘটনার পর বাড়ি-ঘড় ভাংচুর হচ্ছে দেখেও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি তারা। যে ঘটনা ঘটেছে তা অত্যন্ত দুঃখজনক, মর্মান্তিক, বীভৎস। আমি ঘটনার বিচারবিভাগীয় তদন্ত দাবি করছি। ময়নাতদন্ত হলে তা যেন ভিডিও রেকর্ড করা হয়। ম্যাজিস্ট্রেট উপস্থিত থাকুক এটাই চাই।'
বস্তুত, এদিন সকাল থেকে দফায় দফায় বিক্ষোভ শুরু হয়। জয়নগরের মহিষমারিহাট পুলিশ ফাঁড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন গ্রামবাসীরা। হামলার মুখে পড়ে জখম হন পুলিশের কয়েকজন আধিকারিক। খবর পেয়ে এসডিপিওর নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী পৌঁছয় এলাকায়। পুলিশের তরফে পাল্টা লাঠিচার্জ করে জনতাকে ছত্রভঙ্গ করা হয়।
পুলিশের তরফে অবশ্য জানানো হয়েছে, অভিযুক্ত যুবককে গ্রেফতার করে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। গ্রামবাসীদের বক্তব্য, পুলিশ যদি পরিবারের অভিযোগকে প্রথমেই গুরুত্ব দিয়ে দেখত তা হলে হয়তো মেয়েটিকে এভাবে খুন হতে হত না।