ফাইল ছবি।
শেষ আপডেট: 11th January 2025 22:34
দ্য ওয়াল ব্যুরো: মেদিনীপুর মেডিক্যালে প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনায় নিষিদ্ধ স্যালাইন ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনায় এক প্রসূতির মৃত্যু এবং আরও দু'জনের আশঙ্কাজনক অবস্থা তৈরি হওয়ায় ইতিমধ্যে ১৩ সদস্যের মেডিক্যাল টিম গঠন করেছে স্বাস্থ্য দফতর।
শনিবার তদন্তকারী দল যখন অভিযোগের তদন্তে মেদিনীপুর মেডিক্যালে রয়েছেন ঠিক তখনই কলকাতা থেকে জেলার একাধিক হাসপাতালে পশ্চিমবঙ্গ ফার্মাসিউটিক্যালের রিঙ্গল ল্যাকটেট স্যালাইন ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ, এসএসকেএম থেকে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ, আরজিকর, এনআরএস মেডিক্যাল থেকে বাঁকুড়া, রায়গঞ্জ-সহ একাধিক জেলা হাসপাতালে এদিনও পশ্চিমবঙ্গ ফার্মাসিউটিক্যালের স্যালাইন ব্যবহার করা হয়েছে।
বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতে রোগীদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়াও তৈরি হয়। এরপরই স্বাস্থ্য দফতরের তরফে এক নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, মেদিনীপুর মেডিক্যালে ওঠা অভিযোগের তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট কোম্পানির স্যালাইন বা কোনও ওষুধ ব্যবহার করা যাবে না।
যে কোম্পানির স্যালনটিকে ঘিরে অভিযোগ উঠেছে, সেটির কারখানাও রয়েছে এ রাজ্যেই। উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ার তিনমাইল হাটে রয়েছে সংশ্লিষ্ট ওষুধ কোম্পানির কারখানা।
চোপড়ার এই কারখানার স্যালাইন ব্যবহার করে গত বছর কর্নাটকে পাঁচজন রোগিনীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছিল। এরপরই গত নভেম্বরে ওই ওষুধ কোম্পানির স্যালাইন পরীক্ষা করে কর্নাটক ড্রাগ কন্ট্রোল ব্যুরো সেটিকে ব্ল্যাক লিস্টেড করে। দাবি করা হয়, স্যালাইনে যে নমুনাগুলি ব্যবহার করা হয়, সংশ্লিষ্ট কোম্পানির স্যালাইনে তা অত্যন্ত নিম্নমানের।
গত বছরের ৪ থেকে ৬ ডিসেম্বর কর্নাটক ড্রাগ কন্ট্রোল ব্যুরো, কেন্দ্র এবং এ রাজ্যের ড্রাগ কন্ট্রোলের প্রতিনিধিদের নিয়ে টানা ৩ দিন ধরে চোপড়ার ওই কারখানায় অভিযানও চালায়। সূত্রের দাবি, এরপরই এ রাজ্যেও সংশ্লিষ্ট কোম্পানির স্যালাইন নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল।
অভিযোগ, শুক্রবার মেদিনীপুর মেডিক্যালে রোগিনীকে ওই স্যালাইন দেওয়ার পরই এক প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। আরও দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তারই মধ্যে এবার কলকাতা থেকে জেলার একাধিক সরকারি হাসপাতালে ওই নিষিদ্ধ স্যালাইনের ব্যবহারের অভিযোগ ঘিরে নতুন করে শোরগোল তৈরি হয়েছে।
প্রশ্ন উঠছে, রাজ্যের তরফে নিষিদ্ধ ঘোষণা করার পরও কীভাবে সরকারি হাসপাতালে ওই স্যালাইনের ব্যবহার করা হচ্ছে? কেন সঠিকভাবে নজরদারি করা হল না? গাফিলতি কার? এ ব্যাপারে তদন্ত রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরই বিস্তারিত জানানো হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম।
যদিও বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগ, "শাসকদলের নেতাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্ল্যাক লিস্টেড ওষুধ প্রস্তুত কারক সংস্থার রফা হয়েছে। সে কারণেই নিষিদ্ধ ঘোষণার পরও সরকারি হাসপাতালে ব্যবহার করা হচ্ছে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির স্যালাইন।"